সফল ক্যারিয়ার গড়ার সেরা ১০ উপায়
সবারই
স্বপ্ন থাকে ভাল কাযক্ষেত্রে সৃষ্টি করার । স্বপ্নের চাকরি পেতে সবাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে
পড়াশোনাও করে । তবে স্বপ্নকে ধরতে পারে না নিজেদের কিছু ব্যাক্তিগত ও ভাবনাগত অভাবের
ফলে । অভাবগুলো এতোটাই তীব্র যে, পুরোদমে বিকল করে দেয় ২০-২৫ বছর ধরে রাখা স্বপ্নের
চাকরির আকাঙ্ক্ষা । অনাকাঙ্ক্ষিত এইসব অভাবগুলোকে জয় করেই আমাদেরকে স্বপ্নের লক্ষ্যে
পৌঁছাতে হবে । ভাল ক্যারিয়ার গড়তে অনেক বিষয়ই বিবেচ্য । এই দেখায় এমন দশটি গুরুত্বপূর্ণ
টিপস নিয়ে আলোচনা করা হলো ।
১. ইতিবাচক মনোভাব: আমরা সবাই জানি নেতিবাচকের চেয়ে ইতিবাচক
কর্মকান্ড ও মনোভাব সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য । সফলভাবে ক্যারিয়ার গড়তেও ইতিবাচক মনোভাবের
বিকল্প নেই । সত্যিকার অর্থে প্রত্যেকটি কাজেই ইতবাচক মনোভাবের প্রাধান্য বেশি । ইতিবাচক
উত্তেজনা উগ্রতা, দুঃশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখে । আপনি যখন মনের দিক থেকে সৎ থাকবেন,
তখন আপনা-আপনি মন প্রফুল্ল থাকবে । নিজের সাথে বোঝাপড়াটাও ভাল হবে । মনকে প্রফুল্ল
রাখতে পারলে স্বপ্নের চাকরিটাই শুধু নয়, যে কোনো কাজই সফলতা পেতে পারি আমরা ।
২. নিজেকে জানুন: হরহামেশাই দেখা যায় ভাল বেতনের চাকরিকে
সবাই প্রাধান্য দেয় । আবার বেশি বেতনের চাকরি করলে সমাজেও কদরটা একটু বেশি । তাই সকলেই
ঝুঁকে পড়ে বেশি বেতনের চাকরির দিকে । তবে ব্যাপারটা এমন না হয়ে যদি নিজের আকাঙ্ক্ষা
ও ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়া হতো, তাহলে ব্যাপারটা ঈর্ষণীয় হতো ।তাই আগে জানতে হবে, কোন
পেশার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন । আত্মজিজ্ঞাসার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে কোন
পেশাকে বেছে নেওয়া যায় । মনের তৃপ্তিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । আর সেজন্য দরকার
নিজেকে জানা । নিজের উপর যতটা নির্ভরশীল হওয়া যাবে, সাফল্যের পথে সে ততটা এগিয়ে যাবে
।
৩. চাহিদা ও দক্ষতা নির্ধারণ: প্রত্যেকেরই উচিত অবসর সময়টাতে নিজেকে
তৈরি করা । এইচএসসি পাস একজন নিশ্চয়ই ব্যাংকের চিফ এ্যাক্সিকিউটিভ হিসেবে চাকরি পাবে
না । তাই নিজের দক্ষতা উপর নির্ভর করেই চাহিদার চাকরিগুলোকে বেছে নিতে হবে । তারপর
সর্বোচ্চ কাঙ্ক্ষিত চাকরিটা পেতে প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে হবে । আপনাকে নির্ধারণ করতে
হবে কোন বিষয়টি আপনাকে বেশি চানে । ধরুন আপনি কম্পিউটারে কাজ করতেই বেশি পছন্দ করেন
। আর কম্পিউটারে ভাল জানা আপনার । এক্ষেত্রে বলা যায়, আপনার উচিত তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে
ক্যারিয়ার গড়া ।
৪. ব্যাক্তিত্ব নিরূপণ: কর্মক্ষেত্রে সফল হতে হলে ব্যাক্তিত্ব
বা পার্সোনালিটি নিরূপণ করার দায়িত্বও আপনারিই । পার্সোনালিটি নিরূপণ করার জন্য আপনি
নৈব্যক্তিক প্রশ্ন তৈরি করে নিতে পারেন । অথবা কারও তৈরি করা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে
নিজেকে যাচাই করে নিতে পারেন । মায়ারস ব্রিগস টাইপ ইন্ডিকেটর (এমবিটিআই) নামের পরীক্ষা
দিয়ে বুদ্ধিমত্তা ও ব্যাক্তিগত দৃঢ়তা নিরূপণ করতে পারেন ।
৫. নমনীয়তা: উগ্রতা সর্বদাই খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি
করে । কোনো কাজই জোর পূর্বক করিয়ে নেয়া যায় না । আর জোরপূর্বক করিয়ে নেয়া হলেও পরবর্তীতে
তার কুফল ভোগ করতেই হয় । তাই উগ্রতা নয়, নমনীয়তায় জীবন গড়াটাই যৌক্তিক ।
৬. পরামর্শ গ্রহণ: অনেক সময়ই আমরা দ্বিধাদ্বন্দে ভুগে থাকি
। এটা নয় ওটা ভাল । আসলে যে কোনটা ভাল তাই খুজেঁ বের করতে পারি না আমরা । তাইেআমাদের
উচিত পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় কিংবা কোনো বিশেষজ্ঞরা সাথে কথা বলে সঠিক ও উপযুক্ত
চাকরিটা বেছে নেয়া । বিশেষ করে বিশেষজ্ঞেরা চাকরির বাজার সম্পর্কে প্রচুর জানেন। শিক্ষাগত
যোগ্যতা, প্রতিযোগিতামূলক কর্মক্ষেত্র, ক্রমোন্নতি ও বেতন সবদিক সম্পর্কেই একজন বিশেষজ্ঞ
আপনাকে সঠিক চাকরিটি বেছে নিতে সহায়তা করতে পারবেন ।
৭. সময় সচেতনতা: প্রত্যেকটা মানুষেরই উচিত সময়ের সঠিক ব্যবহার
করা । সময়ের কাজ সময়ে করতে পারলে যে কোনো ব্যাক্তিই তার ক্যারিয়ারকে সফল স্থানে নিয়ে
যেতে পারবে । অযথা সময় ক্ষেপনকারী একজন ব্যাক্তি প্রয়োজনীয় সময়ে এসে হাঁপিয়ে উঠে ।
ফলে সে তার কাজে ভুল করে । পরে করবো বলে ফেলে রাখলে কোনো কাজেরই সফল সমাধান দেয়া সম্ভব
নয় । তাই সময় সচেতন হয়ে উঠুন ।আরও পড়ুন: সময় বাঁচানোর সহজ ৬টি উপায়
৮. নেটওয়ার্ক তৈরি: সফল ক্যারিয়ার গড়তে আপনাকে অবশ্যই একটি
নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে । তবে নেটওয়ার্কটি
অবশ্যই সৎ ও উদ্দেশ্যবহুল হওয়া চাই । নানাজনের সাথে কথা বলা ও বন্ধুত্ব করাটাও সফল
ক্যারিয়ার গড়তে সহায়তা করতে পারবে ।
৯. ক্যারিয়ার জিজ্ঞাসা: আপনি যদি আপনার কর্মক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ
না করেন তবে কিন্তু সমস্যার সম্মুখীন হবেন । আপনার তখন সম্ভব হবে না স্কুলে গিয়ে নতুনভাবে
পড়াশোনা করে অন্যক্ষেত্রে সফল হওয়ার । তাই আপনার উচিত সঠিক কোনো ক্যারিয়ার কলেজ বা
ট্রেনিং সেন্টার খুঁজে বের করা । কারণ সেখানে গিয়ে আপনি আপনার ক্যারিয়ারের নানা সমস্যার
উত্তর খুঁজে পাবেন । আপনি নিজেও ক্যারিয়ার জিজ্ঞাসার মাধ্যমে আপনার নানা সমস্যার সমাধান
করে নিতে পারেন । নতুন নতুন সব আইডিয়া তৈরি করে তার উপর পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমেও
ক্যারিয়ারে সফলতা পাওয়া সম্ভব ।
১০. সহিষ্ণুতা: প্রবাদ আছে, ‘ভাল জিনিস একটু দেরিতেই আসে’
। কোনো কাজেই তাড়াহুড়া করাটা ভাল না । তড়িৎ যে কোনো কাজের মধ্যে ভুল হবার সম্ভাবনা
বেশি ।
0 Comments:
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।