আমার কাধ থেকে জান্নাতিকে সরিয়ে রুমে চলে আসলাম। সারা দিনের ক্লান্তি ভরা
শরীর নিয়ে বিছানায় গা মেলিয়ে দিতে না দিতেই জান্নাতি রুমে হাজির....
- এই যে মিষ্টার আফ্রিকান এনাকোন্ডা এটা কি হলো...??
- কোনটা কি হলো...?(আমি)
- গাড়ি থেকে নামার সময় আমাকে সাথে করে আনলেন না কেন..??
- কেন তুমি কি কচি খুকি না কি যে তোমাকে কলে করে নামিয়ে আনবো? আর কি যেন বলছিলে আমি আফ্রিকান এনাকন্ডা নাহ...! আমি এনাকোন্ডা হলে তুমি পেত্নি, শাঁকচুন্নি, ডাইনি বুড়ি....
- কিহ, আমি পেত্নি, শাঁকচুন্নি, ডাইনিবুড়ি?
- তা নয়তো কি, তুমি আসলে এক নাম্বার শাঁকচুন্নি...
-ওই, হুলু বিড়াল, লালবাদর, আফ্রিকান এ্যানাকোন্ডা, তুই আমাকে
শাঁকচুন্নি বললি! আমি শাঁকচুন্নি নাহ (কথা গুলো বলেই ৩৬০ ডিগ্রী
এ্যাঙ্গেলে, অ্যাষ্টকেট পাথরের মত ৫০০০ গতিবেগ নিয়ে আমার ওপর ঝাপিয়ে পড়লো।
- আমি জান্নাতির হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য উল্টো হয়ে জান্নাতিকে বিছানার
ওপর দুই হাত চেপে ধরলাম, কিন্তু আমার এমন লাগছে কেন! নিজে কে কন্ট্রোল করতে
পারছি না কেন, জান্নাতিকে বিছানায় চেপে ধরায় এতোটা কাছে গিয়েছি যে
জান্নাতির মুখের গরম নিশ্বাস আমার মুখে পড়ায় আমি কেমন জানি পাগল হয়ে
যাচ্ছি। রীতিমতো জান্নাতি চুপ হয়ে গেছে আমাকে এই রকম হতে দেখে, জান্নাতির নিশ্বাস
ধীরে ধীরে ঘন হয়ে আসছে। আমি জান্নাতির ঠোটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, জান্নাতি চোখ বন্ধ করে ফেলে। গোলাপের পাপড়ির মত ঠোট জোড়া কাপছে, আমি যেই জান্নাতির
ঠোটের সাথে ঠোট লাগাব অমনি পাশে থাকা ফোনটি বেজে ওঠে...
জান্নাতি আমাকে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়, সালার ফোন টাও আর বাজার সময় পেল না। ফোনে তাকিয়ে দেখি ইমদাদুলের ফোন...
- হ্যালো, কেমন আছিস...?
- হুম, ভালো, তুই কেমন আছিস..?
- এই তো ভালো....!!
- তা নিজের গ্রামে গিয়ে আমাদের ভুলে গেলি নাকি...??
- আরে তোদের কি ভুলে থাকা যায় বল...!!
- হুম, তা ঢাকা আসবি কবে...??
- হুম যাবো এখানে কিছু কাজ আছে কাজ সেরে যাবো (আসলে কাজ বলতে জান্নাতি
আমাকে ওর প্রতি এত টাই আসক্ত করে নিয়েছে যে ওকে ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে মন
চাইছে না।)
- ওকে, ভালো থাকিস...বাই...
-হুম,বাই।
ইমদাদুল সাথে কথা বলে ফোনটা রেখে সারা দিন জান্নাতির সাথে কাটানো সময় গুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি মনে নেই....
পরদিন.....
বিয়ের আমেজ শেষ হয়ে গেলে আসিক আর নিলা ঢাকা ফিরে গেল। আমি বগুড়া আসলাম।
কারন ওখানেই আমার পরিবারের সবাই। জান্নাতির পরিবারও এইখানে থাকে আর
জান্নাতি বগুড়া একটা কলেজে পড়ে। আমি একটা বাসা ভাড়া নিলাম যেটা আমার
পরিবারের বাসা থেকে অনেকটা দুরে। আর জান্নাতিদের বাসার পাশে। এজন্য প্রতিদিন
বিকালে জান্নাতিকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হয়। মা প্রায়ই এখানে আসে আর
মাইশাও। এরা দুইজন ছাড়া আমার পরিবারে আর কেউ জানে না আমি এইখানে আছি।
বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। তখন ফোনটা বেজে উঠলো। দেখি জান্নাতি ফোন দিয়েছে..
- কোথায় আপনি?
জান্নাতি আমাকে এখনও আপনি করেই বলে। ওর নাকি আপনি করে বলতেই ভালো লাগে। তাই আমিও আর না করিনি।
- কেন বাসায়।।
- আজ বিকালে ঘুরতে যাবো।(জান্নাতি)
- প্রতিদিন তো যাই। আজ না গেলে হয় না।
- কেন??(জান্নাতি)
- আজ না আমার যেতে ইচ্ছা হচ্ছে না।
- আসতে বলছি আসবেন। না আসলে হাত-পা বেধে নিয়ে আসবো। (রেগে)
- এতে রাগ করছো কেন?? আমি আসবো।
- মনে থাকে যেন।
- ওকে।
- জান্নাতি যে সময় বলেছিল সেই সময় ওর বাসায় কাছে গেলাম। দেখলাম বাইরে জান্নাতি দাড়িয়ে আছে..
- চল কোথায় যাবে??
- আজ একসাথে ঘুরবো, আর কিছু জিনিস কেনার আছে??
- আচ্ছা চল।
আমরা সারা বিকাল ঘুরলাম। ওকে বাসায় পৌছে দিয়ে আমি ফিরে এলাম। রাতে আসিক ফোন দিল...
- হ্যালো কেমন আছিস??
- ভালো তুই। (আসিক)
- আমিও।
- যার জন্য ফোন করেছিলাম কাল আমরা তোর ওইখানে আসবো।(আসিক)
- কখন?
- ওই বিকালের দিকে। (আসিক)
- ওকে।
ফোনটা কেটে দিয়ে শুতে যাবো তখনি জান্নাতির ফোন
- এতক্ষন কার সাথে কথা বলছিলে?? (জান্নাতি)
- আমার বন্ধুর সাথে।
- বন্ধু না বান্ধুবী?
- আরে বন্ধু।
- সত্যি তো।
- বিশ্বাস না হলে আসিক কে ফোন দিয়ে জিঙ্গাসা করো, ও ফোন দিয়ে ছিল কিনা।
- দুলাভাই ফোন দিয়ে ছিল কেন??
- বলল কাল আমার এইখানে আসছে।
- কখন আসবে।
- বিকালে।
- আচ্ছা।
জান্নাতির এ সাথে আরো কিছুক্ষন কথা বলে ঘুমিয়ে গেলাম।
পরের দিনঃ
দুপুরের দিকে কলিংবেল বাজলো। আমি গিয়ে দেখি জান্নাতি।
- জান্নাতি, তুমি, এই সময়??
- হ্যা, কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি?
- না সমস্যা হবে কেন??
- আজ আপনার এইখানে আপুর আসার কথা তাই আসলাম।
.- ও, তা হাতে এইগুলো কি??
- আপনার জন্য আমি নিজে রান্না করে খাবার নিয়ে এসেছি। সরুন তো ভিতরে যেতে দিন।
ভিতরে আসার পর
- যান গিয়ে ফ্রেস হয়ে আসুন। আমি খাবার বেড়ে দিচ্ছি।
আমি গিয়ে ফ্রেস হয়ে এলাম। তারপর আমি আর জান্নাতি একসাথে দুপুরের খাবার
খেলাম। বিকাল পেরিয়ে গেছে। কিছুক্ষন পর সন্ধ্যা হয়ে আসবে তবু আসিক এল
না।
- আপুরা এখনও এল না কেন?
- আমিতো জানি না। ফোনটাও বন্ধ।
- আরেক বার চেষ্টা করুন।
- ওকে করছি।
ফোন দিতে যাবো এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলো।
- মনে হয় এসে পড়েছে।
- আমি দেখছি। (জান্নাতি)
জান্নাতি দরজা খুলতে গেল। কিন্তু ও দরজা খুলে দাড়িয়েই আছে।
- কি হল জান্নাতি, আসিক এসে পড়েছে?
.
জান্নাতির কোন উত্তর না পেয়ে আমি দরজার কাছে গেলাম কে এসেছে দেখার জন্য।
আমি যেই ওখানে গেছি একেবারে চমকে গেছি! কারণ দরজা খুলেই দেখি শান্তা। ওকে
দেখে শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। আবার কোনো সমস্যা বাঁধাবে না তো। অনেক কিছু
হারিয়েছি ওর জন্য। আজ যা পেয়েছি যদি আবার হারাই
............To Be
Continue
0 Comments:
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।