Showing posts with label আপুর বান্ধবী যখন বউ. Show all posts
Showing posts with label আপুর বান্ধবী যখন বউ. Show all posts
আপুর বান্ধবী যখন বউ - শেষ পর্ব

আপুর বান্ধবী যখন বউ - শেষ পর্ব


মা ঃ কিছুই করার নেই তোমারটা তুমি বুঝে নাও।
আমি ঃ ঠিক আছে আমি রাজি।
এরপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে এলাম।
আরিফা ঃ ফোন দিলো।
আরিফা ঃ এই ।
আমি ঃ কি ।
আরিফা ঃ খাওয়া দাওয়া শেষ করছো।
আমি ঃ হুম তুমি করছো।
আরিফা ঃ হুম।
আমি ঃ আচ্চা তাহলে এখন ঘুমাও ।
আরিফা ঃ এত তাড়াতাড়ি ঘুমাবে।
আমি ঃ হ্যা কারণ আমার সকালে কাজ আছে।
আরিফা ঃ বাববাহ, তোমার আবার কিসের কাজ।
আমি ঃ আগামীকাল থেকে অফিসের সব কাজ দেখার দায়িত্ব আমার উপর।
আরিফা ঃ বিয়ের কয়েকটা দিন পর দায়িত্ব নিতে।
আমি ঃ বাবা যা ভালো মনে করেছে তাই করেছে।
আরিফা ঃ আংকেল যদি দিয়ে থাকে তাহলে আমাদের ভালোর জন্যেই করেছে।
আমি ঃ হুম, আচ্চা এখন রাখি।
আরিফা ঃ ঠিক আছে।


তারপর একটা ঘুম দিলাম, সকালে বেলা ঘুম থেকে উঠেই হাল্কা নাস্তা করে বাবার সাথে রওনা দিলাম।
বাবা এক এক করে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন এবং সবাইকে বিয়ের দাওয়াত দিলো।
এরপর বাবা বাসায় চলে গেলেন।
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, কিভাবে কি করবো,
একটু পর একজন বললো স্যার অফিসের জুনিয়র ম্যানেজার নেওয়া হবে, আপনি যদি একটু দেখতেন।
আমরা প্রাথমিক কয়েকজন কে সিলেক্ট করেছি,
আপনি ভাইভা নিলে বেশি ভালো হতো।
আমি ঃ ঠিক আছে আপনি যান আমি আসছি।
একটু পরে গেলাম,
সবাই বেশ ভালো উত্তর দিচ্ছে।
একজন কে বললাম।
আমি ঃ যদি দেখেন অফিসে কোন টাকা নেই তাহলে কিভাবে কর্মচারীদের বেতন দিবেন।
সে উত্তর দিলো, কর্জ করে।
আমি ঃ আপনাকে কে টাকা কর্জ দিবে।
এভাবে কয়েক জন কে বলার পর একজন আসলো আমি তো বিশ্বাস করতে পারছিনা।
এইটা তো রূপা।
রূপা প্রথমে আমাকে দেখে একটু কোতুহলী হয়ে গিয়েছিল, তারপর নিজেকে সামলিয়ে নিলো।
আমি ঃ যদি দেখেন অফিসে টাকা নেই তাহলে কর্মচারীদের বেতন দিবেন কিভাবে।
রূপা ঃ অফিসের চেক বইয়ে টাকার পরিমাণ লিখে দিবো।
এরপর দুই একজন প্রশ্ন করলো ।
আমি ঃ বললাম এর চাকরি কনফ্রাম করুন।
এরপর রূপা কে বললাম যাওয়ার আগে আমার সাথে দেখা করে যেতে। একটু পর রূপা আসলো।
রূপা ঃ ভিতরে আসতে পারি।
আমি ঃ হ্যা আসো।
রূপা ঃ কিছু বলবেন স্যার।
আমি ঃ মজা করো আমার সাথে।
রূপা ঃ এইটা অফিস তাই বললাম।
আমি ঃ আগামী শুক্রবার আমার বিয়ে তুমি কিন্তু আসবে,।
রূপা ঃ দাওয়াত যেহেতু পেয়েছি, তখন আসবো।
আমি ঃ তাহলে এখন আসি, আর শোন একটা কথা বেতন পেলে আমার ট্রিট কিন্তু দিতে হবে।
রূপা ঃ অবশ্যই দিবো।
আমি ঃ তাহলে এখন আসি বাসায় যেতে হবে।
এমন সময় আরিফা আমার রুমে এলো।
আরিফা ঃ এই রূপা তোমার অফিসে কেন।
আমি ঃ ও এই অফিসে চাকরি নিয়েছে, আর আমাদের বিয়ের দাওয়াত দিলাম,।
আরিফা ঃ অফিসিয়ালি দাওয়াত দিলেই হতো পার্সোনাল ভাবে দেওয়ার কি আছে।
আমি ঃ রূপা তুমি এখন আসো।
রূপা চলে গেল, বেশ কিছুক্ষণ চলল আরিফার বকবক।
আমি ঃ আরিফা, তুমি কিন্তু কথা দিয়ে ছিলে আমার সাথে আর বাজে ব্যবহার করবে না।
আরিফা ঃ তুমি অন্য কোন মেয়ের সাথে কথা বলবে না।
আমি ঃ তুমি আমার বন্ধুদের কে অপমান করছো‌, আচ্চা রূপা কি ভাববে, ভাববে আমাকে ভালবাসার চেয়ে বেশি বেশি সন্দেহ করো।
আরিফা ঃ কে কি ভাবলো তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
আমি ঃ অফিসে আসসো কেন ‌।
আরিফা ঃ তুমি নাকি খাওয়া দাওয়া করোনি তাই আসছি, দুজন মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া করবো।
আমি ঃ ঠিক আছে বসো আমি ব্যবস্থা করছি ।
এরপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে আরিফা কে বাসায় পৌছে দিয়ে আমি বাসায় ফিরলাম।
রাতে আরিফা ফোন দিলো।
আমি ঃ কিছু বলবা।
আরিফা ঃ আগামীকাল গায়ে হলুদ, তুমি কি একটু বাড়িতে আসতে পারবা।
আমি ঃ আজকেই তো দেখা হলো।
আরিফা ঃ যখন মন চাইবে তখন দেখা করবে কোন সমস্যা আছে তোমার।
আমি ঃ না কোন সমস্যা নাই, তবে আমার একটা পার্সোনালিটি আছে।
আরিফা ঃ আমার সাথে তোমার কোন পারসোনালিটি চলবে না।
আমি ঃ ঠিক আছে আমি চেষ্টা করবো।
একটা ঘুম দিলাম, সকালে মানুষের চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো,
বাড়িটা সাজানো হচ্ছে।
অনেক মেহমান আসছে,,
তানিশার জামাই বাড়ি থেকে অনেক মানুষ আসছে।
মা ঃ আমিরুল ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করেনে।
আমি ঃ আছে ।
নাস্তা করে বসে আছি।
এদিক সেদিক বাচ্চাদের ছোটাছুটি, বিয়ের আমেজ কিছুটা অনুভব করতে পারলাম।
একটু পর মিজান সাইদ ওদের বউ নিয়ে এলো।
আমি মিজান মিজানের স্ত্রী  সাইদ স্ত্রী দুলাভাই তানিশা মিলে আডডা দিচ্ছি।
এমন সময় আরিফা ফোন দিলো।
আমি ঃ কি হলো কিছু বলবা।
আরিফা ঃ তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে।
আমি ঃ পাগলামী করছো কেন।
আরিফা ঃ তুমি যেভাবেই হোক একটু আসবা ।
আমি ঃ লোকে জানলে কি বলবে।
আরিফা ঃ আমি এত কিছু বুঝিনা, আর শোন আসার সময় আইসক্রিম নিয়ে আসবে।
আমি ঃ তানিশা তোমার জন্য আইসক্রিম নিয়ে যাবে।
আরিফা ঃ আমি বলছি আসতে তো আসবে না আসলে খবর আছে।
আমি ঃ চেষ্টা করবো।
আরিফা ঃ না এলে খবর করে ছাড়বো।
সন্ধ্যায় আরিফাদের ওখান  গায়ে হলুদ দেওয়ার জন্য অনেক মেহমান এলোহ সাথে আফিফা আর রাব্বানীও এসেছে‌।
তারপর গায়ে হলুদ দেওয়া শেষ হলো।
এখন আমাদের এখান থেকে যেতে হবে।
আরিফা তো ফোনের উপর ফোন করছে।
আমি ঃ আমি কিভাবে যাবো বলো, এইটা সম্ভব নয়।
আরিফা ঃ আমি তো এত কিছু জানলে চাইছি না, আমি মেনে নিতে পারলে কার কি সমস্যা,
আমি ঃ চেষ্টা করবো ।
আরিফা ঃ না এলে খবর আছে।
এরপর অনেকেই গেল কিন্তু আমি যেতে পারলাম না, আমার সাথে কিছু বাচ্চা বসে আছে।
আরিফা আবার ফোন করলো।
আমি ঃ কি হয়েছে আমার সাথে অনেক বাচ্চা বসে আছে আমার কিছু করার নাই, ক্ষমা করো আর আগামীকাল তো দেখা হচ্ছে।
আরিফা ঃ তোরে দেখা করতে বলছি তুই দেখা করবি, তুই আমার কোন কথা শুনিস না, তরে তো আমি খাইছি।
আমি ঃ এমন পাগলামি করছো কেন।
আরিফা ঃ আজকে আমার সাথে দেখা না করলে খবর আছে বলে দিলাম।
আমি ঃ ঠিক আছে, একটু রাত হোক আমি সব ব্যবস্থা করছি।
আরিফা ঃ ভালো করে বলি ছিলাম বাবু তখন শুনো নি এখন লাইনে আসছো তো, একটু তেরা হয়ে।
আমি ঃ আল্লাহ যদি আমারে উঠাই নিতো তাহলে মনে হয় বেঁচে যেতাম।
আরিফা ঃ এত সহজে ছাড়ছি না আমিও সাথে সাথে মরে যাবো আর তোমার কবরের পাশে কবর দিতে বলে যাবো।

আমি ঃ ঠিক আছে, দেখা যাবে।
গায়ে হলুদ দিয়ে সবাই চলে আসছে।
আমি ঃ মিজান সাইদ আমার সাথে এক যায়গায় যেতে হবে।
মিজান ঃ কয়,।
আমি ঃ আরিফা দেখা করতে বলছে।
সাইদ ঃ ঠিক আছে, তুই বাহিরে আয়।
তারপর বাহিরে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হলাম, কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে এলাম,
আমি মাক্স লাগিয়ে মিজান আর সাইদের সাথে ভিতরে গেলাম,
মিজান ঃ  একটু আগে এখানে আমি আমার ফোনটা ফেলে গেছি কোথায় রেখেছি একটু খুঁজে দেখতে হবে,তাই এলাম।
 সাইদ তুই ঐ দিকে দেখ আমি ছাদে যায়, আর তুই বউয়ের ঘরের দিকে যা ।
আমি মনে মনে বলি মিজানের ভালো বুদ্ধি আছে।
এরপর আরিফার রুমে গেলাম, আমার মুখে মাক্স লাগানো থাকলেও আরিফা চিনে ফেলেছে।
আরিফা ঃ তোমরা সবাই একটু বাহিরে যাও।
সবাই বাহিরে গেলে আরিফা বলে।
আমার আইসক্রিম কোথায়।
আমি ঃ আনতে পারিনি গো।
আরিফা ঃ কেন,
আমি ঃ এখন আমি আইসক্রিম খেতে আসছি খাওয়াতে না।
আরিফা ঃ ধারাও দেখাচ্ছি মজা, এই বলে আন্টিকে ডাকতে শুরু করলো ।
আমি ঃ এই কি করছ, ।
আরিফা ঃ আবার চিৎকার দিলো।
আমি আর কোন কিছু না বলে কিস করে বসলাম।
আরিফা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা।
একটু পরে ছাড়লাম।
আরিফা ঃ আরেকটু হলে আমি মরেই যেতাম।
আমি ঃ এখন আমি আসি,
আরিফা ঃ ধন্যবাদ আসার জন্য।
আমি ঃ হুম চলি,
তারপর বাসায় ফিরে এলাম, আজকে আর তেমন ঘুম হলো না, সকাল বেলা নাস্তা করার পর
মজা করতে সবাই ব্যস্ত আমি আরিফার সাথে কথা বলছি।
জুমার নামাজের পর বর সেজে রওনা দিলাম,
সব আজকে তো আরিফাকে দেখতে পাচ্ছি না, খাওয়া দাওয়া বিয়ের কাজ শেষ, এতক্ষণ আমি আরিফা কে দেখতে পাইনি।
সব এর যখন আসার সময় হলো তখন দেখলাম, বাপরে বাপ এইটা তো আরিফা না, মনে হচ্ছে একটা পরী, বেনারশি  শাড়িতে দারুন মানিয়েছে, চোখ ফিরাতে পারছি না, মনে হচ্ছে কোন পরী জগতের রানী,,,
বিদায় নেওয়ার সময় কান্না করছে,
অনেক কান্না করলো,
ওর কষ্টটা বুঝতে পারলাম
বিদায় নিয়ে বাসায় এলাম, সবাই নতুন বউ দেখতে, কিন্তু ওকে সবাই আগেও দেখেছে, এখন অন্ন ভাবে দেখছে, এখন বউ হিসেবে দেখছে।
আমি ছাদে চলে এসেছি, রাতের 11 দিকে দুলাভাই আমাকে নিয়ে আমার রুমে দিয়ে গেলেন,
আমি ভিতরে যেতেই সবাই রুম থেকে বের হয়ে চলে গেলো।
আমি আরিফার পাসে গিয়ে বসে আছি,
আরিফা ঃ তুমি গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে আসো।
আমি ঃ ঠিক আছে, এরপর দরজা বন্ধ করে, খাটে গেলাম, ।
আরিফা ঃ এবার খাটের নিচে নামো।
আমি ঃ মানে কি, মজা করছো নাকি আমার সাথে।
আরিফা ঃ না, তুমি নিচে যাও।
আমি ঃ খাটের নিচে নামলাম, ।
আরিফাও খাটের নিচে নামলো।
আমি ঃ কি মতলব তোমার।
আরিফা ঃ একদম চুপ করো।
তারপর চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি, এমন সময় আরিফা এসে পায়ে ধরে সালাম করলো, আমি মনে মনে অনেক খুশি হয়েছি।
তারপর আরিফা বলল তুমি এবার খাটে যাও, আমি একটু আসছি, ডেসিন টেবিলের কাছে গিয়ে গহনা গুলো খুলে খাট আসলো।
আরিফা ঃ আমি আর কখনো তোমাকে তুই তুই করে বলবো না, তোমার উপর হাত তুলবো না।
আমি ঃ আহ আরো আগে বিয়ে করলে এতদিন তাহলে কোন সমস্যাই ছিলো না।
আরিফা ঃ তবে কোন মেয়ের সাথে কথা বললে একবারে খুন করে ফেলবো।
আমি ঃ ঠিক আছে কখনো তাকাবো না , যাও এখন ঘুমাও,
আরিফা ঃ ঘুমাবো মানে।
আমি ঃ তুমি উত্তর দিকে তাকিয়ে ঘুমাও আমি দক্ষিণ দিকে তাকিয়ে ঘুমাই কারণ তুমি বলছো কোন মেয়ের দিকে না তাকাতে।
আরিফা ঃ এই মজা করো আমার সাথে।
আমি ঃ তুমি বলছ মেরে ফেলবে তাই জীবন বাঁচাতে এইটাই করতে হবে।
আরিফা ঃ কোন কথার সুযোগ দিলো না আগেই ঝড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো
তারপর
তারপর
কি হলো না জানলেও চলবে।
তবে।
আজকে আমাদের বিয়ের দুই বছর হয়েছে,
আমরা দুজন মিলে ফেইসবুক থেকে একটা বাচ্চা ডাউনলোড দিছি,
নাম আরিফ।
আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৭)

আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৭)



তারপর নিচ থেকে বাবা মা আংকেল আন্টি তানিশা দুলাভাই সবাই আসলো।আন্টি  তো চিৎকার দিয়ে কান্না করতে শুরু করেছে।
আংকেল কোন কথা বলতে না।
বাবা ঃ কিরে আমিরুল কি হয়েছে, তোর মাথায় রক্ত আবার আরিফা নিচে পরে আছে কারণ কি, তোরা কি ঝগড়া করেছিস ।
আংকেল ঃ হাসপাতালে নিয়ে চলো, তারাতাড়ি মনে হয় ওরা দুজন মারামারি করেছে।
আমি ঃ আংকেল তেমন কিছু না, আসলে হটাৎ করে আমি মাটিতে পড়ে গিয়েছিল তখন মাথায় আঘাত লাগার কারণে রক্ত বের হয়, আর তা দেখে আরিফা অচেতন হয়ে গেছে।
মা ঃ তানিশা তুই নিচ থেকে পানি নিয়ে আয়, এদের কে নিয়ে আর পারা গেল না, এরা ছবির চেয়ে নাটক বেশি করে।
তানিশা পানি আনলো এদিকে আন্টি কেঁদেই যাচ্ছে।
চোখে পানি দেওয়ার পর হুস ফিরল।
আরিফা ঃ আমিরুল কোথায়।
আমি ঃ এইখানেই আছি ।
আরিফা ঃ তোমার মাথা থেকে রক্ত পরা বন্ধ হয়েছে,
আমি ঃ না এখনো একটু একটু ব্যাথা করছে আর হালকা রক্ত পড়ছে।
আরিফা ঃ চলো তোমাকে নিয়ে হাসপাতালে যায়, আমার কারণে তোমার মাথা কেটে গেছে।
আমি ঃ চুপ করো, বাসায় হালকা চিকিৎসা করলেই হবে, এত ইমার্জেন্সি না।
বাবা ঃ না হাসপাতালে চল, অনেক রক্ত পরেছে।
আংকেল ঃ ঠিক বলছেন।
আন্টি ঃ আমার মনে হয়, আরিফা তোমাকে ধাক্কা দিছে, তখন মোবাইলে শুনলাম তো আরিফা তোমাকে মারে।
আমি ঃ না আন্টি ও আমাকে মারেনি।
মা ঃ তাহলে পরে যাবি কেন।
আমি ঃ আরিফা দৌড়ে আমার কাছে আসছিলো তখন নিজেকে সামলে রাখতে পারেনি তখন আমার উপর পরে গেছে, আর আমি মাটিতে পড়ে গেছি, এই আরকি।
তানিশা ঃ আচ্চা এসব কথা বাদ দাও, এখন ডাঃ কে ফোন দিয়ে আনো আর মাথাটা ব্যেন্ডেস করো, তাহলে ঠিক হয়ে যাবে।
দুলাভাই ঃ তানিশা একদম ঠিক বলছে বাবা, এখন একটু চিকিৎসা করলেই ঠিক হয়ে যাবে।
তারপর আর কথা বাড়ালাম না, ডাঃ এসে কিছু ঔষধ দিয়ে গেল , আর মাথাটা ব্যেন্ডেস করে দিলো।
সন্ধ্যায় আংকেল আন্টি আরিফা কে বলছে এখন চল বাসায় যায়।
আরিফা ঃ আমিরুল কে এইভাবে রেখে যাওয়াটা ঠিক হবে না বাবা।
বাবা ঃ আরিফা আগে তুমি তানিশার বান্ধবী হয়ে ছিলে, কিন্তু এখন তো তোমার সাথে আমিরুলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে আছে, তাই তোমাকে এখন তো বাসায় যেতে হবে।
আরিফা ঃ আমি তো ভেবেছিলাম যে আমিরুল কে সাথে নিয়ে শপিং করবো।
আংকেল ঃ আমিরুল দুদিনের মধ্যে সম্পূর্ণ ঠিক হয়ে যাবে তখন করিস।
আমি ঃ আরিফা ধারাও ।
আরিফা ঃ আমি জানতাম তুমি আমাকে যেতে দিবে না।
আমি ঃ তুমি একটু ধারাও আমি আমার রুম থেকে আসছি।
তারপর রুমে গিয়ে একটা লাগেজ নিয়ে এলাম।
আমি ঃ আরিফা এখানে তোমার বিয়ের সব কিছু কেনা আছে।
আরিফা ঃ সব কিছু মানে মেয়েদের কি কি লাগে তুমি কিভাবে জানবে।
আমি ঃ শপিং করার সময় আমার সাথে একটা মেয়ে ছিলো
যেই মেয়েটার সামনে তুমি আমাকে মেরে ছিলে।
আরিফা ঃ তুমি কি রূপার কথা বলছো।
আমি ঃ বাহ তোমার দেখছি নামটাও মনে আছে, হ্যা রূপা ছিলো সাথে।
আরিফা ঃ আমার ইচ্ছে ছিলো নিজের হাতে শপিং করবো।
আমি ঃ এখানে তোমার আংকেল আন্টির জন্য সব কিছু আছে,
বাবা ঃ এই ধারা ধারা তুই বিয়ের আগেই শশুর বাড়ির জন্য এত কিছু আনলী অথচ আমাদের জন্য আনলিনা ।
আমি ঃ আনবো না, কারণ তানিশার বিয়ের সময় তুমি আমাকে বলনি।
মা ঃ তাহলে ঘরে আর দুইটা লাগেজ কার কার জিনিস এনেছিস।
আমি ঃ একটা আমার জন্য আরেকটা বন্ধুদের জন্য।
মা ঃ কাজটা কিন্তু ঠিক করলি না।
আমি ঃ তোমরাও কাজটা ঠিক করোনি।
তানিশা ঃ হয়ছে হয়ছে, তোর জিনিস কেউ চাইছে নাকি।
আমি ঃ আরিফা এখন বাসায় যাও।
আরিফা ঃ ঠিক আছে আগামীকাল আবার আসবো।
আমি ঃ না, বিয়ের আগে আর আসার দরকার নেই।
আরিফা ঃ তাহলে তুমি আমাদের বাসায় যাবে।
আমি ঃ সেটা দেখা যাবে।
তারপর আরিফা চলে গেলো, মনে হয় রাগ করেছে, যেতে চায়নি, এক প্রকার জোর করেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বাসায় গিয়ে ফোন করে বলো যে বাসায় গিয়েছে।
এভাবে দুইটা দিন কেটে গেলো,
বাবা ঃ আমিরুল তুই বাসায় থাক আমরা শপিং করতে যাবো।
আমি ঃ শপিং করতে যাবে মানে ।
বাবা ঃ আমাদের তো কেনাকাটা করার প্রয়োজন তা ছাড়া আমার একটা মাত্র ছেলে সব কিছু তো চমৎকার হতে হবে।
আমি ঃ ধারাও তোমাদের ব্যাগ নিয়ে যাও। এইটা তোমাদের ব্যাগ এখানে তোমাদের যা দরকার সবি আছে।
মা ঃ তাহলে ঐ দিন তাহলে না করলি কেন।
আমি ঃ এমনি, করেছিলাম, এখানে তানিশার দুইটা শাড়ি আর দুইটা জামা আছে সব কিছু ম্যাচিং করে কেনা, তানিশা আর আরিফার সব কিছু রূপা কিনেছে।
আর তোমাদের দুজনের সব কিছু আমি কিনেছি।
বাবা ঃ গায়ে হলুদের সব কিছু কিনেছিস।
আমি ঃ না, গায়ে হলুদের সব কিছু সবাই মিলে কিনবো।
বাবা ঃ তাহলে  সবাই মিলে গায়ে হলুদের কাপড় চোপড় তা লাগে সব কিছু কেনাকাটা করি।
মা ঃ সব কিছু আবার নতুন করে কিনবো।
বাবা ঃ আমিরুল যেহেতু একবার কিনেছে তাহলে আর আমার কেনার কি দরকার।
মা ঃ আমি আমার ছেলের জন্য আবার সব কিছু কিনবো তোমার কোন সমস্যা আছে।
বাবা ঃ ঐ ওর নিজের পছন্দ মত কিনেছে এখন আবার লাগবে নাকি।
মা ঃ বেশি কথা বললে রাতের খাবার বন্ধ করে দিবো।
বাবা ঃ আমি কি না করেছি, আমি বলেছি তোমার ছেলের ইচ্চাটাকে মেনে নিতে।
মা ঃ টাকা খরচ করতে ভয় পাচ্ছো তা ভালো করেই জানি।
আমি ঃ ঠিক আছে চলো   ।
মা ঃ আমিরুল তুই একটু আরিফাদের ফোন করে দেখ তো ওরা কি বের হয়েছে নাকি।
আমি ঃ এখানে আবার ও আসছে কেন।
বাবা ঃ দুই পরিবার একসাথে শপিং করবে, তাই তো আমার চিন্তা হচ্ছে।
মা ঃ এই তুমি টিপ্টামী বন্ধ করো তো।
তানিশা ঃ মা আমরা রেডি চলো বের হয়।
মা ঃ আমিরুল ফোন করে দেখ ওরা কখন বের হয়েছে কিনা।
তানিশা ঃ বের হয়েছে আমার সাথে কথা হয়েছে, তোমার ছেলেকে আরিফা ফোন দিয়েছিল নবাব জাদা ফোন ধরেনি।
আমি ঃ মিথ্যা বলিস কেন আমাকে ফোন দিলো কখন।
এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলো।
তানিশা দরজা খুলে দিলো।
তানিশা ঃ আরে এত মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি, মা আরিফা আর আংকেল আন্টি চলে এসেছে।
তারপর সবাই মিলে কথা বলছে, হাসাহাসি করছে।
আরিফা চোখে ইশারা করছে আমাকে আমার রুমে যেতে।
আমি ঃ মা আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
মা ঃ ও হ্যা তুই তারাতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে।
আমি  আমার রুমে এলাম বাথরুমে গিয়ে গোসল করে বের হয়ে দেখি আরিফা আমার রুমে এসে বসে আছে।
আমি  ঃ কি ব্যপার তুমি এখানে।
আরিফা ঃ ঐ তোর সমস্যা কি রে, তুই আমার ফোন রিসিভ করিস না কেন।
আমি ঃ কি বলছো এসব , আমি আবার কখন তোমার ফোন রিসিভ করলাম না।
আরিফা ঃ ফোন চেক কর।
আমি ফোন চেক করে দেখি ২৯ কল।
আমি ঃ আসলে ফোনটা সাইলেন্ট করি ছিলো।
আরিফা ঃ এবার বল তকে কি করব, মারতে পারবো না, কানধর,।
আমি ঃ কান ধরবো কেন।
আরিফা ঃ আমি বলছি তাই, ফোন না ধরার শান্তি।
আমি ঃ পারবো না।
আরিফা ঃ তাহলে গালে একটা দিবো।
আমি ঃ দাও দেখি তোমার কত বড় সাহস, তুমি দিবা আর আমি কানাডা চলে যাবো।
আরিফা ঃ কি এত বড় সাহস আমাকে ছেড়ে কানাডা যাওয়া , যাওয়াচ্ছি ।
বলেই আমাকে বিছানায় ফেলে দিলো,
ইচ্ছা মত কিস করলো,
তারপর ছাড়লো।
আমি ঃ এইটা কি হলো।
আরিফা ঃ এইটাই তোমার শাস্তি, আর কখনো ছেড়ে যাওয়ার কথা বললে তোমাকে জীবনের মত শেষ করে ফেলবো আর আমিও শেষ হয়ে যাবো।
আমি ঃ ঠিক আছে আর বলবো না, এইবার তোমার মুখ পরিষ্কার করে আসো বাথরুম থেকে মুখে তো লিপস্টিক বড়ে আছে।
আরিফা একটু মুচকি হাসি দিয়ে বলল তোমার মুখেও ।
আমি ঃ তুমি আগে পরিস্কার করে আসো, আর তারপর আমি করছি।
আরিফা ঃ ঠিক আছে।
তারপর রেডি হয়ে বসার রুমে এলাম,
মা ঃ চলেন এবার বের হয়।
আন্টি ঃ ঠিক বলছেন।
এখন গাড়িতে উঠার পালা
আমি ঃ আংকেল আমরা একটা গাড়ি দিয়ে যায়, আর আপনারা একটা দিয়ে।
বাবা ঃ ফাইজলামি করিস। আমরা সব বয়সী একসাথে যাবো, তরা চারজন একসাথে যা ।
তানিশা ঃ ঠিক বলছো বাবা তোমরা একটা দিয়ে যাও আমরা একটা দিয়ে।
তারপর তানিশা প্রথমেই গাড়িতে উঠে পরে,
আমি ঃ কি তানিশা তুই আরিফার সাথে বসে থাক।
দুলাভাই ঃ আমি আমার বউকে ছাড়া যাবো কেন।
তানিশা ঃ এই তুমি সামনে আসো, তুমি আমার পাশে বসে ড্রাইভ করবে দুজন মিলে রোমান্টিক ভাবে যাবো,
আমি ঃ ঠিক আছে যাও কোন সমস্যা নাই, যেতে পারো,।
আরিফা ঃ আমিরুল তুমি এমন করছো কেন।
আমি ঃ কোথায় কেমন করছি ।
আরিফা ঃ এখানে চুপ করে বসো।
আমি ঃ ঠিক আছে বসছি।
তারপর চুপচাপ বসে আছি কোন কথা নেই।
শপিং শুরু করলো আমার জন্য সাধা একটা পাঞ্জাবী ।
আরিফার জন্য হলুদ রঙের একটা শাড়ি।
এভাবে সবার জন্য ম্যাচিং করে কিন লো।
আরিফা ঃ আমিরুল তুমি পছন্দ করে একটা শাড়ি কিনে দাও।
আমি ঃ তোমাকে নীল রঙের শাড়িতে বেশ মানাবে।
আরিফা ঃ তাহলে কিনে দাও।
একটা শাড়ি বের করে কিনে দিলাম।
শপিং শেষ।
বাবা ঃ চলো সবাই কিছু খেয়ে নেয়।
আংকেল ঃ আমারো খুদা লাগছে।
আরিফা ঃ সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করবো।
আমি ঃ আংকেল  শপিং তো এখনো শেষ হয়নি।
আংকেল ঃ কেন সবার জন্য তো কেনা হয়েছে।
আমি ঃ কেউ কি বাদ যায়নি।
আরিফা ঃ না সবার জন্য কেনা হয়েছে।
আমি ঃ আপনার এতিমখানার বাচ্চাদের জন্য কিনেছেন।
আরিফা ঃ সরি সরি একদম ভুলে গেছি।
আংকেল ঃ আমিও ভুলে গিয়েছিলাম।
আরিফা ঃ তোমরা সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাসায় চলে যাও, আমি আর আমিরুল বাচ্চাদের জন্য শপিং করে দিয়ে আসবো ।
দুলাভাই ঃ আমিরুল তাহলে গাড়ির চাবি তোমার কাছে রাখো।
আরিফা ঃ মা বাবা তোমরা আমার এগুলো নিয়ে যাও, আমিরুল তোমার কাপড় গুলো আংকেল আন্টির কাছে দিয়ে দাও।
আমি ঃ এই তানিশা কেটে ভাত খা এই গুলো তুই নিয়ে যাবি।
দুলাভাই ঃ আমি নিয়ে যায়।
আমি ঃ আপনারা দুজন মিলে নিয়ে যান।
এরপর আমরা আলাদা ভাবে শপিং করতে শুরু করলাম।
চার ঘন্টা পর শেষ হলো, আরিফা সব বিল দিলো।
আরিফা ঃ চলো এবার কিছু খেয়ে নেয়।
আমি ঃ এগুলো দিয়ে তারপর খাওয়া দাওয়া করবো।
আরিফা ঃ কিন্তু এগুলো নিয়ে যাবো কিভাবে অনেক গুলো।
আমি ঃ ধারাও দেখছি কি করা যায়।
তারপর মিজান কে ফোন দিলাম।
আমি ঃ কিরে কয় তুই।
মিজান ঃ কে আমিরুল।
আমি ঃ হুম।
মিজান ঃ দেশে কবে এলি।
আমি ঃ কয়েকদিন হয়েছে ।
মিজান ঃ কয়েক দিন ধরে আসছিস অথচ এখন ফোন দিলি তুই কিরে মানুষ নাকি বেইমান ।
আমি ঃ অপরাধ যেহেতু করেছি তো সাজা যা ইচ্ছা দিতে পারিস, তুই এখন শপিং মলে আয় আমি ট্রিড দিবো।
এভাবে সাইদ কেউ আনলাম।
সাইদ ঃ কিরে কেমন আছিস,।
আমি ঃ ভালো আছি তুই কেমন আছিস।
এমন সময় মিজান আসলো
আমি ঃ তোরা এই গুলো নিতে আমাদের কে একটু সাহায্য কর।
মিজান ঃ তার মানে সার্ত ছাড়া আমাদের ফোন দেসনি।
আমি ঃ এই গুলো নিয়ে চল ।
তারপর আর কোন কথা বলল না।
দুইটা রিক্সা নিয়ে যেতে থাকলাম।
রিক্সা থামলো।
আরিফা ঃ চলেন ভিতরে যায়।
তারপর সব কিছু দেখে মিজান আর সাইদ কোন কথা বলছে না।
আমি ঃ চল এখন খেতে যায়।
মিজান ঃ দোস্ত তরে ভুল বুঝেছিলাম।
সাইদ ঃ আমি মনে মনে পুরোটা রাস্তা তরে কিস্তি দিয়ে আসছিলাম।
আমি ঃ বাদদে তো।
আরিফা ঃ আজকে আমি ট্রিট দিবো।
আমি ঃ আমি দিবো।
সাইদ ঃ আপনাদের দুজনের ট্রিট আমরা গ্রহণ করলাম।
মিজান ঃ আমিও খাবো।
আমি ঃ মিজান আর সাইদ তরা দুজন তোদের পুরো পরিবারকে নিয়ে সামনের শুক্রবার আমাদের এখানে থাকবি, আর তার আগে তরা আমার বাসায় আসবি, আমাদের বিয়ে শুক্রবারে।
সাইদ ঃ তাইলে তো আজকে ডাবল ট্রিট দিবি।
মিজান ঃ দুইজন খাওয়াবে তাহলে তো ডাবল হলো।
এরপর খাওয়াদাওয়া শেষ করে ওরা দুজন চলে গেলো।
আমি আর আরিফা বসে আছি।
আরিফা ঃ এখন আমার হাত ধরে হাঁটবে ।
আমি ঃ দাও হাত দাও।
তারপর হাট হাঁটতে আরিফার বাসায় চলে এলাম, আরিফা খাওয়া দাওয়া করে যাও।
আমি ঃ কি খাওয়াবে।
আরিফা ঃ কি খাবে ।
আমি ঃ ঐটা দিবে।
আরিফা ঃ এখানে কেন রাস্তায় যখন ছিলাম তখন বলতা।
আমি ঃ ঠিক আছে, এখন চলি পরে কথা হবে।
আরিফা ঃ এদিক সেদিক তাকিয়ে দিলো একটা কিস।
আমি ঃ এবার ছাড়ো।
আরিফা ঃ আরো লাগবে।
আমি ঃ না, বাসর ঘর পর্যন্ত চার্জ হয়ে গেছে।
বাসায় এলাম,
মা ঃ আমিরুল এদিকে আয়।
আমি ঃ কি ।
বাবা ঃ আগামীকাল আমার সাথে আমার অফিসে যাবি ।
আমি ঃ কেন।
বাবা ঃ ব্যবসার কাজ বুঝে নিবি তাই।
আমি ঃ এখনি।
বাবা ঃ দুদিন পর বিয়ে, বেকার হয়ে বিয়ে করার দরকার কি।
আমি ঃ কিন্তু অফিসের অর্ধেক তো তানিশা তাহলে ওর জামাই কেও সাথে নিয়ে যাবো।
তানিশা ঃ আমি বাবার সম্পত্তি চাই না, তবে মায়ের সম্পদ আমার জন্য ঐ টাতে হাত দিবি না। আমি সময় হলে চেয়ে নিবো।
আমি ঃ মা দেখছো তোমার সম্পদ থেকে কিভাবে বঞ্চিত করছে।
মা ঃ কিছুই করার নেই, তোমারটা তুমি বুঝে নাও।



চলবে.............
আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৬)

আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৬)


তানিশা ঃ সবাই কে যখন ক্ষমা করে দিলি আমাকে কেন করতে পারিস না।
আমি ঃ তোর জামাই কয়।
তানিশা ঃ তোর কথা শুনে লজ্জায় রুমে চলে গেছে।
আমি ঃ ঠিক করছি, তোর জামাইয়ের লজ্জা আছে তাই চলে গেছে তোর লজ্জা থাকলে তুই চলে যা।
তানিশা ঃ ঠিক আছে, আগামীকাল আমি ওকে নিয়ে চলে যাবো, আর কখনো আসবো না।
আমি ঃ আজকেই চলে যা।
তানিশা ঃ আমি চলে যেতাম কিন্তু শশুর বাড়ীতে কথা উঠবে তাই যেতে পারছি না।
আরিফা ঃ আমিরুল তুমি আর আমার আগের আমিরুল নেই, অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছো।
আমি ঃ সময়ের সাথে নিজেকে পরিবর্তন করতে হয়।
আমি ঃ তানিশা আজকে যদি না যাস তাহলে।
তানিশা ঃ তাহলে কি।
আমি একটু চুপ করে থাকলাম।
বাবা ঃ তাহলে কি।
আমি ঃ তাহলে ।
আরিফা ঃ তাহলে কি।

আমি ঃ তাহলে ওর শাস্তি হবে ও আর ওর জামাই আমাদের বিয়ের আগ পর্যন্ত এখানে থাকবে।
সবাই যেন দম ছেড়ে বাঁচলো, আর হাসতে থাকলো।
তানিশা ঃ না বিয়ের আগ পর্যন্ত থাকতে পারবো না।
আমি ঃ তুই যেতেও চাস না, আবার থাকতেও চাস না, এটা আবার কোন রকমের নাটক ।
মা ঃ এখনো তো বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়নি।
বাবা ঃ আরে তারিখ ঠিক হয়নি এখানে আমরা সবাই আছি তারিখ ঠিক করে নিতে সময় লাগবে না।
আংকেল ঃ আমিরুল বিয়ের তারিখ কবে হলে ভালো হয় তোমার কাছে।
আমি ঃ আমি জানি না, আপনারা ঠিক করেন,।
এই কথা বলে আমি ওখান থেকে তানিশার রুমে চলে গেলাম সবার সাথে কথা বলেও দুলাভাইয়ের সাথে কথা হয়নি। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আমি ।
আমি ঃ  এই যে গরু চোর ভিতরে আসতে পারি।
দুলাভাই ঃ  ও তুমি আসো আসো ।
আমি ঃ মন খারাপ নাকি।
দুলাভাই ঃ তেমন কিছু না।
আমি ঃ আমার উপর রাগ করে আছেন নাকি ।
দুলাভাই ঃ তুমি কি মনে করো।
আমি ঃ বিয়ের সময় আমার কোন খোঁজ খবর নিয়েছেন।
দুলাভাই ঃ আসলে এখানে তোমার পরিবারের কোন দোষ নেই, তারা তোমার ভবিষ্যতের কথা ভেবে বলনি।
আমি ঃ আমার চিন্তা তো আপনাকে করতে বলিনি।
দুলাভাই ঃ তোমার বোন যা বলছে তুমি আসলে তেমন।
আমি ঃ কি বলেছে,
দুলাভাই ঃ তোমার মনটা অনেক নরম কিন্তু একটু অভিমানি।
আমি ঃ ঠিক বলেছেন, দুলাভাই আমি একটু এমনি, আচ্ছা আপনার কোন বোন আছে।
দুলাভাই ঃ তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে তুমি আমার বোনকে দিয়ে কি করবা।
আমি ঃ আপনার বোনের বিয়েতে যদি আপনাকে না রাখা হয় তাহলে কেমন লাগবে, তখন কি মুখ দিয়ে মধু বের হবে নাকি নিম পাতার রস ।
দুলাভাই ঃ তোমার কথা ঠিক আছে,
আমি ঃ তাহলে সব কিছু ভুলে যান।
দুলাভাই ঃ আমার কোন সমস্যা নাই তো, আমি কষ্ট পাচ্ছিলাম তোমার বোনের কথা ভেবে ঐ তোমাকে অনেক মিস করেছে।
আমি ঃ থাক পাম দিতে হবে না,  এখন চলেন ছাদে যায়।
দুলাভাই ঃ তোমার বোনের অনুমতি ছাড়া ঘর থেকে বের হতে পারবো না,।
আমি ঃ কেন যেতে পারবেন না কেন।
দুলাভাই ঃ বিয়ের আগে মেয়েরা থাকে একদম সহজ সরল, কিন্তু বিয়ের পর তাদের অনুমতি ছাড়া কিছুই করা যায় না, দুদিন পর বিয়ে করছো তখন বুঝতে পারবে।
আমি ঃ দিলেন তো আমার মনে ভয় ঢুকিয়ে।
দুলাভাই ঃ কিছুই করার নেই, তবে তোমার জন্য রইলো শুভ কামনা,।
আমি ঃ ধন্যবাদ, ( গল্পের লেখক আমিরুল ইসলাম)
দুলাভাই ঃ তুমি ছাদে যাও।
আমি ঃ হ্যা ছাদে যাচ্ছি,
তার ছাদে গিয়ে দেখি আরিফা ছাদে দাঁড়িয়ে আছে।
আরিফা ঃ কখন থেকে তোমার জন্য দাঁড়িয়ে আছি তুমি এত দেরী করলে কেন।
আমি ঃ আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দিবা ।
আরিফা ঃ কি ।
আমি ঃ বিয়ের পর কি আমার ইচ্ছা মত চলতে দিবা।
আরিফা আমার হাত ধরে বলল ।
আরিফা ঃ দুনিয়াতে কোন নারী তার স্বামীর দিবে না, স্বামীর ভাগ ছাড়া সব কিছুর  ভাগ দিতে রাজি।
আমি ঃ বিয়ের পর কি আমাকে মারবে,
আরিফা ঃ না, আমি আমার জুনিয়র বরটা কে কিভাবে মারব তখন তো সে আমার স্বামী হয়ে যাবে,
আমি ঃ ধন্যবাদ।
আরিফা ঃ আচ্চা। যদি আগামী সপ্তাহে বিয়ে হয় তাহলে কেমন হয়।
আমি ঃ আজকে হলেও আমার কোন আপত্তি নেই, তবে বিয়েটা একটু বড় অনুষ্ঠান করে করার অনেক ইচ্ছা আমার।
আরিফা ঃ আচ্চা ঠিক আছে তাহলে আগামী সপ্তাহে হোক।
আমি ঃ সেটা তো বাবা মা আংকেল আন্টি ঠিক করবে।
আরিফা হাত ফোন করে বললো বাবা আগামী সপ্তাহে বিয়ে হলে কোন সমস্যা নেই।
আমি ঃ এইটা কি হলো।
আরিফা ঃ মা বাবা আমাকে তোমার সিদ্ধান্ত যানাতে বলেছে।
আমি ঃ তার মানে আমরা এতক্ষণ যা বলেছি মা বাবা সব কিছু শুনেছে।
আরিফা ঃ হ্যা কেন কি হয়েছে।
আমি ঃ কাম সারছে , তুমি আমাকে বলবা না যে সব কিছু উনারা শুনছেন।
আরিফা ঃ তাতে কি হয়েছে, উনারা জেনেছে তাতে আরো ভালো হয়েছে, এখন আগামী সপ্তাহে বিয়ে ঠিক হয়ে যাবে,
আমি ঃ তুমি একটাবার আমাকে বলতে।
আরিফা ঃ আহারে কি কষ্ট। কিন্তু আমি খুশি, আমি বউ সেজে থাকবো আমার বরটা রাজ কুমার সেজে আমাকে নিয়ে আসতে যাবে, আমার তো ভেবেই আনন্দ হচ্ছে।
আমি ঃ হয়েছে হয়েছে, এখন থামো।
আরিফা ঃ তুমি আগামীকাল বের হবে দুজন মিলে শপিং করতে যাবো।
আমি ঃ আমি পারবো না, তুমি। একাই করো, আমার শপিং আমার বাসার শপিং আমি কানাডা থেকে করে এনেছি।
আরিফা ঃ এইটা তুমি মোটেও ঠিক করনি,,
আমি ঃ কেন কি হয়েছে আবার।।
আরিফা ঃ আমার অনেক স্বপ্ন ছিল দু'জন মিলে বিয়ের শপিং করবো।
আমি ঃ ঠিক আছে গায়ে হলুদের কিছুই কেনা হয়নি, তাই কিনবে।
আরিফা ঃ তোমার তো মোটামোটি কেনা হয়েছে আমি তো কিছুই কেনা কাটা করিনি।
আমি ঃ ও, তাও ঠিক চিন্তা করো না, তানিশা তোমাকে নিয়ে শপিং করবে।
আরিফা ঃ হয়েছে হয়েছে, আমার জন্য তোমাকে চিন্তা করতে হবে না, আমার শপিং আমি একাই করতে পারবো, নিজেরটা তো বিদেশ থেকে করে এসেছো।
আমি ঃ কি করবো ।
আরিফা ঃ কিছুই করতে হবে না।
এমন সময় তানিশা হাজির।
তানিশা ঃ আরিফা তকে নিচে যেতে বলছে।
আরিফা ঃ কেন।
আরিফা ঃ এখন তোকে তোর বাসায় যেতে হবে, আর বিয়ের আগে এখানে আসার দরকার নাই।
আরিফা ঃ ঐ তানিশা হুকুম করবি না, তুই তোর স্বামীর বাড়ি যা আমি আমার স্বামীর বাড়ি থেকে যেতে পারবো না।
তানিশা ঃ তাহলে আংকেল কে গিয়ে এই কথা বলি।
আরিফা ঃ এই না না,  আমি আসছি ।
তানিশা ঃ তুই আয় আমি নিচে যাচ্ছি।
আরিফা ঃ দুই মিনিট পর আসছি।
তারপর তানিশা চলে গেল।
আরিফা ঃ এইবার একটা কিস দাও তো।
আমি ঃ এখন আবার কিসের কিস।
আরিফা ঃ এই তুমি দাও আমাকে নিচে যেতে হবে।
আমি ঃ আর তো মাত্র অনেকটা দিন, অপেক্ষা করো।
আরিফা ঃ বুঝতে পারছি।
এই কথা বলেই ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার উপর।
আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি, ছাদে পড়ে গেলাম আরিফা আমার উপর পড়ে গেলো,
আমার বুকের সাথে লেপ্টে আছে তার শরীর।
কিছুক্ষণ চোখে চোখে কথা,
আমি ঃ আরিফা আমার মাথায় ব্যথা করছে, মনে আঘাত লেগেছে।
আরিফা ঃ কয় দেখি দেখি,।
আরিফা ঃ এই তোমার মাথা থেকে রক্ত পরছে।
আমি মাথায় হাত দিয়ে দেখি অনেক রক্ত ঝড়ছে।
আরিফা একটা চিৎকার দিয়ে গেন হাড়াল ।
কেমন লাগে বলেন তো, কেটেছে আমার অথচ উনি গেন হাড়াল , এইটা জাতি মেনে নিবে বলেন,। থাক জাতির মেনে নিতে হবে না, আপনারা মেনে নিলেই হবে।

চলবে..............
আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৫)

আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৫)

রূপা , ঠিক আছে, আমারো তখন এবাবে কথা বলা উচিত হয়নি।
আমি ঃ আপনি কি করেন এখানে কোন কলেজে পড়াশোনা করেন।
রূপা ঃ আমি এখানে একটা কলেজে পড়াশোনা করি আর পার্টটাইম হিসেবে একটা শপিং মলে জব করি,।
আমি ঃ ও, আমি এখানে পড়ালেখা করার জন্য এসেছি,,  কানাডা নিউ ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি।
রূপা ঃ তো, তো আপনি কি কোন পার্টটাইম জব করবেন না,,

আমি ঃ না, আমার জব করার খুব একটা প্রয়োজন নেই, আর আর্থিক কোনো সমস্যা নেই,
রূপা ঃ এখানে মানুষ আর্থিক সমস্যার কারণে কাজ করে না , সময়টাকে কাজে লাগানোর জন্য কাজ করে।
আমি ঃ পড়ালেখা ছাড়া অন্য কিছু আমার করার ইচ্ছা আপাতত নেই।
রূপা ঃ আপনার সাথে কথা বলে ভালো লাগলো।
আমি ঃ জি আমারো ধন্যবাদ আপনাকে।
রূপা ঃ স্বাগতম আপনাকে ।





তারপর আরিফা কে ফোন দিলাম,

আরিফা ঃ কেমন আছো তুমি, খাওয়া দাওয়া শেষ করছো, এত সকালে ঘুম থেকে উঠলে কিভাবে।
আমি ঃ আরিফা, আমি ভালো আছি, আর এখানে সকাল না, এখানে এখন রাত।
আরিফা ঃ আচ্চা খাওয়া দাওয়া শেষ করছো, আর তোমার কি কোন সমস্যা হচ্ছে সেখানে।
আমি ঃ না কোন সমস্যা হচ্ছে নাহ এত চিন্তা করো না তো, খাওয়া দাওয়া শেষ করছি, তুমি নাস্তা করছো।
আরিফা ঃ হ্যা আমি নাস্তা করছি, আমি তোমাকে ভিডিও কল দিয়ে।
আমি ঃ ওকে দাও।

তারপর ভিডিও কল করে কথা হলো।
একটা ঘুম দিলাম, আর সকালে আবার রূপা ডাকছে।

আমি ঃ কি হলো সকালে ডাকছেন কেন।
রূপা ঃ আপনার খাবার এসে গেছে, তাই ডাক দিলাম।
আমি ঃ ধন্যবাদ কিন্তু এত সকালে ডাক দেওয়ার কি আছে, রুমের সামনে রেখে দিলেই হত।
রূপা ঃ একটা কথা বলার ছিলো যদি আপত্তি না করেন তাহলে বলি।
আমি ঃ বলেন কোনো সমস্যা নাই।
রূপা ঃ এই মাসের বাসা ভাড়াটা আপনি একা দিবেন আর আগামী মাসের টা আমি দিবো, আমার বাড়িতে টাকা পাঠাতে হবে, মায়ের চিকিৎসার জন্য।
আমি ঃ ভিতরে আসুন তারপর বলুন কি সমস্যা আপনার।

রূপা ভিতরে এসে বলে বলতে লাগলো।
রূপা ঃ আমি অনেক কষ্ট করে এই দেশে এসেছি , বাড়িতে মা আর বাবা আছে, বড় ভাই বিয়ে করে শশুর বাড়িতে চলে গেছে,,  প্রতি মাসে যা ইনকাম করি তা দিয়ে আমাদের সংসার আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো করেই চলে যায়, কিন্তু হঠাৎ করে মায়ের অসুস্থ হয়ে পড়েন, পরে মানতে পারলাম, কিডনিতে সমস্যা হয়েছে, এখন অপারেশন করা খুব জরুরি, তাই এই মাসের বাসা ভাড়াটা আপনি দিবেন।
আমি ঃ আপনার বাসা ভাড়ার টাকা দিয়ে আপনার মায়ের চিকিৎসা হয়ে যাবে নাকি।
রূপা ঃ কোন রকম চিকিৎসা করতে থাকি, তারপর না হয় টাকা হলে অপারেশন করাবো।
আমি ঃ ঠিক আছে, যদি আমি আপনার মায়ের অপারেশনের টাকা দেয়, তাহলে কেমন হবে।
রূপা ঃ আপনি আমার মায়ের অপারেশনের টাকা দিবেন কেন, কারো দয়ার দান নিতে চাই না।
আমি ঃ কোন দয়া আমি আপনাকে করছি না, আপনার পড়ালেখা শেষ হলে ভালো চাকরি পেলেই আমার টাকা ফেরত দিয়ে দিবেন, অবশ্য তার জন্য আপনাকে শোধ পরিষদ করতে।
রূপা ঃ কত টাকা লাভ দিতে হবে।

আমি ঃ চাকরি পেলে আমাকে ভালো করে ট্রিট দিতে হবে,
রূপা ঃ আর আসল দেওয়ার সময় কতদিন।
আমি ঃ বললাম তো চাকরি পেলেই দিতে হবে, চাকরি পেলেই দিবেন, সাথে শোধ স্বরুপ ট্রিট ।
রূপা ঃ আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,।

আপনার একাউন্ট টাকা চলে যাবে কোন চিন্তা করবেন না,,
তারপর রূপা তার রুমে চলে গেল,
নাস্তা করে, কলেজের দিকে রওনা দিলাম, কলেজে বাঙালি বলতে এক দুইজন ছাড়া তেমন নেই বললেই চলে। শুরু করলাম পড়ালেখা ভালো করে।

এভাবে কেটে গেল ৬ মাস এখন রূপার সাথে আমার বেশ ভালো একটা সম্পর্ক। আমরা একে অপরকে বন্ধু বলে মনে করি। Sunday  সব কিছু বন্ধ তাই শপিং করতে যাবো, এমন সময় রূপা বললো সেও শপিং করতে যাবে। দুজন মিলে শপিং শেষ করলাম, খাওয়া দাওয়া ঘুরাঘুলি করলাম। তারপর বাসায় এলাম। রাতে খাবার খেলাম, এমন সময় রূপার রুম থেকে চিৎকারের আওয়াজ।

আমি ভিতরে গিয়ে খুঁজে যাচ্ছি কিন্তু পাচ্ছিনা।

আমি ঃ রূপা আপনি কোথায়।
রূপা ঃ আমি বাথরুমে পড়ে গেছি please help me ।
আমি ঃ ঠিক আছে আমি আসছি।
তারপর বাথরুমে গিয়ে দেখি রূপা পড়ে আছে, পায়ে প্রচন্ড রকমের ব্যথা পেয়েছে।
রূপা ঃ আমি হাঁটতে পারছিনা কিছু একটা করুন প্লিজ, আমার পায়ে অনেক ব্যথা করছে।
আমি ঃ কোন কিছু না ভেবে কোলে তুলে বাহিরে এসে টাক্সি নিয়ে হাসপাতালে গেলাম।

কিছুক্ষণ পর ডাক্তার বললো।
ডাঃ প্রেশেন্টের  পা ভেঙ্গে গেছে এখন সে আগামী একমাস বেডরেস্টে থাকবে, আগামীকাল উনাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন।
আমি ঃ ধন্যবাদ ।

তারপর ভিতরে গিয়ে রূপা কে বললাম।

আমি ঃ আপনার পায়ে এমন আঘাত পাওয়ার কি কারণ।
রূপা ঃ টয়লেটের ছাদে ময়লা ছিল পরিস্কার করার জন্য চেষ্টা করছিলাম, তখন হঠাৎ করে পরে যায়।
আমি ঃ আপনি যদি ছাদ পরিস্কার করতে যেতেন তাহলে টয়লেটে টুল বা চেয়ার থাকতো। আমার সাথে মিথ্যা বলেন কেন।
রূপা ঃ আসলে বাথরুমে নাচানাচি করছিলাম।
আমি ঃ হা হা হা হা, খুব ভালো হয়েছে।
রূপা ঃ আপনার সব কিছু হয়েছে।
আমি ঃ আমি আবার কি করলাম ।
রূপা ঃ আপনি জানেন না।
আমি ঃ না।
রূপা ঃ থাক আর জানার দরকার নেই।
আমি ঃ আপনার ইচ্ছা, তবে আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখবেন না, কারণ আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
রূপা ঃ আমি বিশ্বাস করি না।
আমি ঃ সেটা আপনার পার্সোনাল বিষয়, এখন ঘুমিয়ে পড়েন ।
রূপা ঃ আপনি কোথায় থাকবেন।
আমি ঃ এখানেই আসি কোন কিছুর প্রয়োজন হলে বলবেন।
রূপা ঃ আপনি আমার সামনে থাকেন তাহলে আর কোন কিছুর প্রয়োজন হবে না।
আমি ঃ রূপা আপনি আমার বন্ধু, আপনার কাছে কোন কিছু লোকানোর কারণ নেই, আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে, আমার জন্য একটা পাগলি মেয়ে পথের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করছে।
রূপা ঃ থাক আর বলতে হবে না।

তারপর বাহিরে এলাম
রাতে রূপা ফোন করে বলে ভিতরে যেতে ।
তারপর বাথরুমে নিয়ে গিয়ে দিয়ে আসতাম, কিছুক্ষণ পর আবার বিছানায় শুয়ে দিয়ে বাহিরে চলে আসি।
সকাল বেলা রূপা কে নিয়ে বাসায় এলাম,

রূপা ঃ আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমি ঃ কেন।
রূপা ঃ আমাকে এভাবে সাহায্য করার জন্য।
আমি ঃ আমার হলেও আপনি আমাকে সাহায্য করতেন তা আমি জানি, অতএব ধন্যবাদ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
রূপা ঃ আমার অফিসে একটু খবরটা দিবেন তাহলে হয়তো বা তারা আমাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিবে না।
আমি ঃ ঠিক আছে আমি আপনার অফিসে খবর দিচ্ছি।
রুমে এসে গোসল করে রূপা কে খাবার দিয়ে বাহিরে চলে আসি,
কলেজে ক্লাস করে রূপার অফিসে গেলাম।
আমি ঃ শুভ অপরাহ্ন ।
ম্যানেজার ঃ শুভ অপরাহ্ন। কিভাবে সাহায্য করতে পারি।
আমি ঃ স্যার আপনার শপিং মলের একজন কর্মী গতকাল এক্সিডেন্টলি পা ভেঙ্গে ফেলেছে।
ম্যানেজার ঃ নাম কী উনার।
আমি ঃ উনার নাম মিস রূপা ।
ম্যানেজার ঃ উনাকে বলবেন উনি যেন সুস্থ হয়ে আবার কাজে ফিরেন। আর যতদিন উনি কাজে না আসবেন ততদিন তার সেলারি বন্ধ থাকবে,
আমি ঃ ধন্যবাদ কিন্তু উনার চাকরিটা যেন না জায় সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।
ম্যানেজার ঃ না উনিতো ঘন্টা হিসেবে কাজ করেন, পার্টটাইম হিসেবে না করে যদি সরাসরি জব করতো তাহলে আমরা তাকে বেতন দিতে পারতাম,, আপনি নিশ্চিতে থাকতে পারেন উনার চাকরি যাবে না।
আমি ঃ ধন্যবাদ এখন আমি আসি,,,
তারপর বাসায় এসে রূপা কে বললাম এই কাহিনী।
রূপা ঃ এই মাসে কি তাহলে বাসায় টাকা পাঠাতে পারবো না ।
আমি ঃ এই মাসের রুম ভাড়া আপনি দিবেন খাওয়ার বিল আপনি দিবেন কিভাবে দিবেন তা আমি জানি না।
রূপা ঃ আমার কাছে এখন কোন টাকা নাই, কিভাবে দিবো আমি ।
আমি ঃ তা আমি জানি না, আচ্ছা আপনি আপনার বাসায় প্রতিমাসে কত পাঠান ।
রূপা ঃ ৩০ হাজার ।
আমি ঃ ও ঠিক আছে, আপনি এখন রেস্ট নেন।

রুমে এসে একটা লম্বা ঘুম দিলাম।
বাড়ি ভাড়া ও খাবার বিল দিয়ে আসলাম, আর রূপার বাবার নাম্বারে বিকাল করে দিলাম।
এখন বাসায় একটা ফোন দেওয়া দরকার। তাই ফোন দিলাম

আমি ঃ  বাবা কেমন আছো তুমি।
বাবা ঃ বেশ ভালো আছি।
আমি ঃ সকালের নাস্তা করছো।
বাবা ঃ হুম, করছি ।
কিছুক্ষণ বাবার সাথে কথা বলে মায়ের সাথে কথা বললাম।
তারপর তানিশার সাথে,
জানতে পারলাম আরিফা ওদের বাড়িতে গিয়েছে।
তারপর ফোন কেটে দিলাম।
আরিফা কে ফোন দিলাম,
আরিফা ঃ কেমন আছো তুমি।
আমি ঃ ভালো আছি কি করো এখন।
আরিফা ঃ বাসায় আসছি, মা বাবাকে দেখার অনেক ইচ্ছা করছিলো তাই।
আমি ঃ তুমি চাইলে ওখানেই থাকতে পারো, বিয়ের পর আমাদের বাড়িতে থাকতে হবে।
আরিফা ঃ আহারে কি কথা, আমি এখানে কেন থাকবো আমি তো আমার শশুর বাড়ীতেই থাকবো ।
আমি ঃ তোমার ইচ্ছা।
আরিফা ঃ এই জানো তানিশার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
আমি ঃ কি বলো বাবা মাকে ফোন দিলাম মা বাবা তো কিছুই বলল না।
আরিফা ঃ যদি তুমি তোমার পড়ালেখা শেষ না করে চলে আসো তাই মনে হয় বলেনি।
আমি ঃ কবে বিয়ে।
আরিফা ঃ আগামী মাসের প্রথম শুক্রবার।
আমি ঃ ও আচ্ছা, তুমি যে আমাকে এই কথা বলেছো তা যেন মা বাবা না জানে।
আরিফা ঃ ঠিক আছে, ।
আমি ঃ এখন রাখি।
আরিফা ঃ আবার রাতে ফোন দিবা কিন্তু ।
আমি ঃ এখানে এখন রাত সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন দিবো তখন তোমাদের ওখানে রাত থাকবে।
আরিফা ঃ আমিও তো তাই বললাম।

এরপর ফোন কেটে দিলাম।
মাথাটা নষ্ট হয়ে গেছে, বলেন তো কেমন লাগে, আমার বোনের বিয়ে অথচ আমি জানি না।
বাসায় আবার ফোন করে বললাম,

বাবা ঃ কিরে আবার ফোন করলি যে কিছু লাগবে তোর।
আমি ঃ বাবা , আজ থেকে আমার নাম্বারে ফোন দিওনা, এখানে থাকা অবস্থায় পরিবারের কারো সাথে যোগাযোগ করতে চাই না।
বাবা ঃ হটাৎ এমন কথা বলছিস কেন।
আমি ঃ আমি পরিবারের থার্ড পারসন তাই যোগাযোগ করতে চাইনা,।
বাবা ঃ এমন কথা বলছিস কেন।

আমি ফোন কেটে দিলাম, বাসার সাথে আর যোগাযোগ করবো না, যা ইচ্ছা করুক।

এভাবে কেটে গেল আরো একটা বছর, আমার পরীক্ষা শেষের দিকে, আর দুইটা পরীক্ষা আছে, বাসার সাথে যোগাযোগ নেই, মাঝে মাঝে আরিফার কাছ থেকে বাসার খোঁজ খবর নেয়, আর আরিফার কাছ থেকে আমার বাসার লোকজন আমার খোঁজ খবর নিচ্ছে তা আমি ভালো করেই জানি।

রূপা ঃ আমি তো কয়েক দিন পর দেশে যাবো, আপনি কি এখানে থাকবেন।
আমি ঃ আমার আর দুইটা পরীক্ষা আছে পরীক্ষা শেষ হলেই দেশে চলে যাবো, অনেক দিন ধরে মা বাবাকে দেখিনা, বোনের কোন খোঁজ খবর নিতে পারিনি,
রূপা ঃ আমি আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই, এখন যদি বলতে না পারি তাহলে জীবনে এই না বলাটা আমাকে একটু একটু করে কুরে কুরে খাবে আর তার জন্য সারাজীবন শুধু কেঁদেই যাবো যে একবার যদি বলতাম,
আমি ঃ  কি বলবা তার জন্য এত ভূমিকা করতে হচ্ছে  কি বলবা বলো তো কোন সমস্যা নাই।
রূপা ঃ আমি আপনাকে ভালোবাসি।
আমি ঃ কিছুদিন পর আমার বিয়ে, আর আপনি আমাকে প্রপোজ করছেন।
রূপা ঃ বিয়ে ঠিক করেছেন বিয়ে করেন নী।
আমি ঃ আমার কথা আমি বাদ দিলাম, আমার আরিফার কথা চিন্তা করেন, মেয়েটা নিজের বাবার বাড়ি থেকে পরে আছে আমাদের বাড়িতে, অনেকেই হয় তো অনেক কথা বলে, তা সহ্য করে যেই মেয়েটা আমার জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে তাকে ভুলে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়,,,
রূপা ঃ আমি আপনাকে ভালোবাসে ফেলেছি,, আমার জীবনে আপনাকে চাই,,।
আমি ঃ আপনাকে অনেক আগেই আমি বলছি আপনি আমার কথা বুঝতে চেষ্টা করছেন না কেন,।
রূপা ঃ আমি ভালবাসি আপনাকে।
আমি ঃ আপনাকে মেনে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
রূপা ঃ আপনি যদি আমাকে মেনে না নেন তাহলে আমি আত্মহত্যা করবো।
আমি ঃ আমাকে জোর করলে আমি আত্মহত্যা করবো।
রূপা ঃ তাহলে আপনি আমার সাথে এভাবে কেন থাকলেন, আমার পরিবারের এত খোঁজ খবর কেন রাখলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম নিজের হাতে কেন সেবা করলেন, আমার পরিবার কে টাকা দিয়ে কেন সাহায্য করলেন,  আমি ভেবেছিলাম আমাকে ভালবেসে আপনি এসব করেছেন, তাহলে কি আপনি আমার উপর করুনা করেছেন।
আমি ঃ তুমি ভুল বুঝছো তুমি আমার কাছের বন্ধুদের মাঝে একজন, তোমাকে করুনা করার মত ক্ষমতা আমার নেই,, আমার মনটা তো আগেই আরিফা কে না দিতাম তাহলে হয় তো তোমাকে ভালবাসতাম।
রূপা ঃ আমি আপনার ছোট বউ হিসেবে থাকতে রাজি আছি।
আমি ঃ রূপা তুমি পাগল হয়ে গেছো।
রূপা ঃ হ্যা আমি পাগল হয়ে গেছি তোমার জন্য পাগল হয়ে গেছি,,।
আমি ঃ আরিফা যদি শুনতে পায় যে আমি তোমার সাথে একি বাসায় ছিলাম তাহলে আমার অবস্থা খারাপ করে দিবে। আজ থেকে দুই বছর আগে আফিফা আমাকে সাথে নিয়ে একটা ছবি তুলে ছিলো আর সেই ছবি গুলো ফেইসবুকে পোস্ট করেছিলো সেই জন্য আমার গালে তিনটা থাপ্পর দিয়ে ছিলো।
রূপা ঃ আমি এসব বুঝিনা না, তুমি আমাকে ভালবাসবে

আমি ঃ ভেবেছিলাম দেশে গিয়ে তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব কিন্তু তুমি তা করতে দিবে না মনে হয়।
রূপা ঃ একটাবার আমাকে বল ভালবাসি।
আমি ঃ আমার ভালবাসা অন্য একজন কে ঘিরে।

রূপা আমাকে জড়িয়ে ধরে কিস করতে থাকলো
নিজেকে ছাড়িয়ে একটা দিলাম গালে ঠাস করে উঠলো।
তারপর রূপা তার রুমে চলে গেল।
মনটা অনেক খারাপ লাগছে রূপার উপর হাত তোলাকা কোন ভাবেই উচিত হয়নি।
আমি রূপার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে টোকা দিচ্ছি।

আমি ঃ রূপা দরজা খুলো।
রূপা ঃ আমি দরজা খুলতে পারবো না।
আমি ঃ আমি দুঃখিত তোমার উপর হাত তোলাটা আমার উচিত হয়নি I am sorry  এখন please দরজা খুলো।
রূপা ঃ আমি মরলেই কি তোমার তো কিছু আসে যায় না।
আমি ঃ আসে যায় অনেক কিছুই আসে যায়।
রূপা ঃ কি আসে যায় বলো।
আমি ঃ তোমার কিছু হয়ে গেলে তোমার মা বাবা কে মানুষের কাছে হাত পেতে চলতে হবে, তা আমি মেনে নিতে পারবো না,  আর তুমি যদি চাও তোমার জন্য আমি নিজের ক্ষতি করবো তাহলে তাই করবো, কিন্তু আমি কাউকে ঠকাতে পারবো না, আমি আমার সমাজের কাছে ঠকবাজ হিসেবে পরিচিত হতে চাইনা, তুমি কি চাও তোমার কারণে আমার পরিবারের কাছে ছোট হয়ে যায়, তুমি কি চাও তোমার এই একটা ভুলের জন্য তোমার পরিবারের ক্ষতি হোক, তুমি কি চাও আমার ভালোবাসার বাগান নষ্ট হয়ে যাক।

রূপা ঃ আচ্চা তাহলে সারাজীবন আমার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখবে।
আমি ঃ ঠিক আছে, এখন দরজা খুলো আর পড়তে বসো ।
তারপর রুমে এসে পড়তে বসলাম।
আজকে পরীক্ষা শেষ হলো,
বিমানের টিকেট কেটে আসলাম,
রূপা আর আমি একি সাথে এক সাথে বসে বাংলাদেশে যাবো।
রূপা ঃ আচ্চা দেশে গিয়েই কি তুমি বিয়ে করবে।
আমি ঃ রূপা তোমার মাথায় কি এই কথাটাই ঘুরে।
রূপা ঃ পরীক্ষা দিলাম অথচ রেজাল্ট না নিয়ে দেশে যাওয়াটা কি ঠিক হবে।
আমি ঃ তুমি আরো এখানে থাকতে চাইলে থাকতে পারো, ভিসা তো আছেই কোন সমস্যা নাই, যখন মন চাইবে তখন চলে আসবে,

আমাকে তো যেতেই হবে।

রূপা ঃ পরীক্ষায় যদি ফেল করি তাহলে তো আবার এসে পরীক্ষা দিতে হবে।
আমি ঃ হুম তবে আমার পরীক্ষা মোটামুটি ভালো হয়েছে ফেল করার মত পরীক্ষা দেয়নি।
রূপা ঃ আচ্চা চলো আল্লাহ ভরসা যা হয় দেখা যাবে।

সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে দুজন মিলে শপিং মলে গেলাম, ইচ্ছা মত জিনিস কিনলাম, তারপর বাসায় এসে পেক করে রওনা দিলাম, আর বাসায় ফোন করে বলে দিলাম যে আমি আসছি, পুরোটা রাস্তা কথা বলতে বলতে চলে এলাম, ঢাকায় এসে নামলাম, সব কিছু চেক করে বাহিরে এলাম, আমি আর রূপা পাশাপাশি হেটে আসছি।

দূরে আরিফা মা বাবা আংকেল আন্টি তানিশা আর তানিশার স্বামী দাঁড়িয়ে আছে। আর তার অন্য পাশে দাড়িয়ে আছে,  রূপার মা বাবা

আমি ঃ রূপা আমার মা বাবা ঐ দিকে দাঁড়িয়ে আছে,
রূপা ঃ আমার মা বাবা এদিকে দাড়িয়ে আছে,
আমি ঃ তাহলে তুমি তোমার মা বাবার কাছে যাও আমি আমার মা বাবার কাছে যায়,,
রূপা ঃ তুমি কিন্তু আমার সাথে দেখা করবে,,
আমি ঃ অবশ্যই দেখা করবো, আর তুমি আমার বাসায় যেও।

রূপা আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে শুরু করলো, অনেক কিছুর জন্য ক্ষমা চাইলো আমি ছাড়াতে চেষ্টা করছি কিন্তু পাচ্ছিনা, এই দিকে আরিফা আমার দিকে তাকিয়ে আছে, এই হয়ছে, এখন দেখি আমার দিকেই আসছে,,
পুলিশ দেখা যায় আরিফা কে আটকানোর চেষ্টা করেছে,, কি বলে যেন চলে আসছে ।
আমি ঃ রূপা প্লিজ ছাড়ো তোমার পিছনে আরিফা দাড়িয়ে আছে,,
আরিফা ঃ এই তুই আমিরুল কে জড়িয়ে ধরেছিস কেন,, 
এসেই আমার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
আমি ঃ এইটা কি করলা, আমাকে মারলে কেন।
আরিফা ঃ এতদিন এই মেয়ের সাথে লটর পটর করেছিস  আর বলেছিস পড়ালেখা করার জন্য বিদেশে গিয়েছিস।
রূপা ঃ আপনার নাম কি আরিফা ।
আরিফা ঃ নাম আরিফা হোক আর যায় হোক তুই আমিরুল কে ঝড়িয়ে ধরে ছিস কেন।
রূপা ঃ জড়িয়ে ধরেছি আমি আর মারলেন আমিরুল কে এটা কেমন কথা,,
আরিফা ঃ তোর কোন কথা আমি শুনতে চাই না,, আর আমিরুল তুই বাসায় চল তোকে দেখাচ্ছি মজা।
আমি ঃ চলো ।
রূপা ঃ এক মিনিট ধারাও আরিফা আর আমিরুল তুমিও ধারাও,।
আরিফা ঃ কেন কি সমস্যা তোমার।
রূপা ঃ সমস্যা আমার না আরিফা সমস্যা তোমার, তোমাকে যে পাগলের মত ভালবেসে তাকে এমন যায়গায় না মারলেও পারতে,, আমি আমিরুল কে কতবার প্রপোজ করেছি তা আমি নিজেও জানি না, প্রতিবার শুধু বলেছে, আমার জন্য আরিফা অপেক্ষা করছে, তোমাকে যে পাগলের মত ভালবেসে তাকে না মারলেও পারতে,, আর আমিরুল কে জড়িয়ে ধরার যথেষ্ট কারণ আছে, ঐ আমার জীবনের সেরা একজন মানুষ, অনেক বার আমাকে সাহায্য করেছে, ওর মত বন্ধু পাওয়াতেই আমি খুশি, এমন একটা ছেলে পেলে জীবন ধন্য হয়ে যাবে,,, তুমি না মারলেও পারতে।
আমি ঃ রূপা তুমি চুপ করো, আরিফা চলো ।
আরিফা ঃ দাড়াও, রূপা তুমি বলো।
রূপা ঃ আমিরুল আর আমি একি বাসায় ছিলাম কোনো দিন বাজে কথা তো দূরের থাক বাজে নজরেও তাকায় নি,,।
আমি ঃ রূপা প্লিজ তুমি যাও তোমার মা বাবা অপেক্ষা করছে, আর হ্যা আগামী মাসে আবার চলে যাবো,, খোদা হাফেজ।

আরিফা ঃ সরি , আমি তোমাকে বুঝতে চেষ্টা করিনি।
আমি ঃ বাবা মা অপেক্ষা করছে এখন চলো।
তারপর বাসায় আসলাম, একটু পর  তানিশা আমার রুমে এলো ।
তানিশা ঃ কেমন আছিস,
আমি ঃ আপনি কে, আমি আপনাকে চিনি না, আমার কোন বোন নেই,।
তানিশা ঃ আমার উপর রাগ করিস কেন, সবটাই তো মা বাবা করেছে, আমাকে বলতে না করেছিলো তাই বলিনি।
আমি ঃ তুই এখন এখান থেকে না গেলে আমি বাসা থেকে চলে যাবো, তোর দশটা পাঁচটা ভাই ছিলো না, একটা ভাই ছিলো তুই বলতে পারতি আমাকে, আর সবার ব্যবহার আমার কাছে অনেক সুন্দর লাগছে, কয়েকটা দিন এখানে আসিস না, আমি আবার কানাডায় চলে যাবো, তখন সারাজীবনের জন্য এই বাড়ি গাড়ি সব কিছু তোর হবে,।
তানিশা ঃ প্লিজ তুই চুপ কর, আমার আর সহ্য হচ্ছে না।
আমি ঃ আমার কেমন সহ্য হয়েছে, তুই যা আমার চোখের সামনে থেকে,
আরিফা এলো আমার রুমে।
আরিফা ঃ ফ্রেশ হয়ে আসো, সবাই খাওয়া দাওয়া করার জন্য অপেক্ষা করছে।
আমি ঃ তুমি যাও আমি আসছি।
ফ্রেশ হয়ে খাবার খাওয়ার জন্য গেলাম।
বাবা ঃ তোর পরীক্ষা কেমন হলো।

আমি ঃ (আসতে করে বললাম, ) ভালো।
মা ঃ কেমন রেজাল্ট হবে বলে মনে হয়।
আমি ঃ ভালো ।
আংকেল ঃ আমি জানি আমিরুল ভালো রেজাল্ট করবে।
আন্টি ঃ এখন ভালো একটা দিন দেখে বিয়ের দিনটা ঠিক করাই ভালো।
বাবা ঃ আল্লাহর দিন সব দিনি ভালো।
আংকেল ঃ আগামী সপ্তাহের মাঝে একটা দিন ঠিক করেন ভাই।
আমি হাত দুয়ে চলে আসছি।
মা ঃ খাবি না।
আমি ঃ খিদা নেই।
আরিফা ঃ কেন কি হয়েছে।

আমি ঃ থাপ্পর খেয়ে পেট ভরে গেছে ভরে গেছে, আর খেতে পারবো না, আর সামনের মাসে আমি আবার চলে যাবো, দেশে আসাটা আমার উচিৎ হয়নি, সবাই দান দুভলা দিয়ে বরণ হলেও আমার বরন চর থাপ্পর দিয়েই হয়,
সবাই বড় বোনের বিয়ে থাকতে পারলেও আমার না থাকাটাই সবার কাছে বেশি ভালো মনে হয়, আমি মনে করি এখানে আমি না থাকলেই সবার জন্য অনেক ভালো হবে।
বাবা ঃ এইটা কোন ধরনের বেয়াদবি করছিস।
আমি ঃ কিছু করার নাই বাবা, তোমরা আমাকে বাধ্য করেছো।
আরিফা ঃ সরি আমার ভুল হয়ে গেছে।
আমি ঃ তোমার কোন ভুল থাকতে পারে না, ঠিক এই একটা কারনেই আমি দুই বছরের জন্য দেশ ছেড়ে ছিলাম, আর এইবার ছাড়বো সারা জীবনের জন্য।
মা ঃ আমরা না হয় একটা ভুল করেছি তাই বলে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়াটা ঠিক হচ্ছে না।
আমি ঃ তোমরা তো আমাকে কাছের মানুষ ভাবো না, আর আরিফা  তুমি কখনো আমাকে বিশ্বাস করেছো, আগের বার কি হলো তুমি মারলে কান ধরে উটবোস করালে তার আবার মায়ের কাছে মার খাওয়ালে, আচ্চা আমি কি তখন সত্যিই আফিফার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম, নাকি রাব্বানী হোসাইনের সাথে গিয়েছিলাম। আজকে আমার অপরাধ ছিল কি, বলো রূপা আমার সাথে দুই বছর ছিলো একবারে চলে যাচ্ছে হয়তোবা আর কখনো দেখা হবে না এই ভেবে আবেগ আপ্লুত হয়ে ঝড়িয়ে ধরেছিল, তখন আমার কি উচিত ছিলো ওকে ডাককা মেরে ছাড়িয়ে দেওয়া,  আপনারা সবাই মিলে আলোচনা করে দেখেন এখন আমি রেডি কথা বলছি তা কি আমার যায়গা থেকে ঠিক নাকি ভুল।

আংকেল ঃ হ্যা আমাদের অন্যায় হয়েছে, কিন্তু এখন তুমি যেই সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছো তা আরো বড় অন্যায়।
আরিফা ঃ আমি তোমার পায়ে পড়ি দয়াকরে ক্ষমা করে দাও, তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না, যদি আবার বিদেশে চলে যাও তাহলে নিজের হাতে মেরে ফেলো আমাকে, আমি আর থাকতে পারছি না।
আমি ঃ আগে বিশ্বাস করতে শেখো তার ভালবেসো।
আরিফা ঃ প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও।
আমি ঃ পারবো না তোমাকে ক্ষমা করে জীবনের বাকিটা সময় তোমার হাতের থাপ্পর খেতে পারবো না।
আরিফা ঃ আর জীবনেও তোমাকে মারব না।
আমি ঃ তার গ্যারান্টি কি।
আরিফা ঃ এত গুলো মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে কথা দিচ্ছি আর কখনো হবে না।
আমি ঃ ঠিক আছে, কিন্তু তানিশা তুই কখনো আমার সামনে আসবি না, আর তোর জামাই কে বলবি আমার সামনে যেন না আসে।
বাবা ঃ আমিরুল আমার জামাই কে নিয়ে কোন কথা বলবি না,,
আমি ঃ ঠিক আছে, বললাম না, এই আমি গেলাম, আজকের পর আর আসবো না, আরিফা তুমি যাবে আমার সাথে ।
আরিফা ঃ কোথায়।
আমি ঃ যেখানে মন চায় সেখানে।
আরিফা ঃ চলো।

আংকেল ঃ আমি এখনো বেঁচে আছি, আবার বাসায় চলো তোমরা।
আমি ঃ চলেন, আংকেল আপনার মেয়ে কে বিয়ে করে ঘর জামাই থাকবো।
আংকেল ঃ আমার কোন আপত্তি নেই।
মা ঃ না, আমার ছেলে আমার বাড়িতেই থাকবে, দরকার হলে আমার জামাই যাবে আবার আমার মেয়ের জামাই যাবে।
বাবা ঃ কি বলছো এসব  তুমি, তোমার মাথা ঠিক আছে।

মা ঃ আমার মাথা একদম ঠিক আছে, বারবার বলেছিলাম আমিরুল কে ছাড়া বিয়ে দিওনা, আমার একটা মাত্র ছেলে, বিয়ে দিলে তো দিলেই একটা বার জানানোর প্রয়োজন মনে করলে না, ওর কি জানার অধিকার ছিলো না।
বাবা ঃ তাই বলে কি আমার মেয়ের জামাই কে কথা বলবে।
মা ঃ তোমার মন চাইলে বাসা থেকে বের হয়ে যাও, আমার ছেলে আমার কাছেই থাকবে।
বাবা ঃ তাহলে আমি কোথায় থাকবো ।

মা ঃ ফুটপাতে হাজার হাজার মানুষ থাকে তাদের সাথে থাকবে।
বাবা ঃ তুমি এমন কথা বলতে পারলে।
আমি ঃ থাক আর কাউকে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে হবে না, আমি তোমাদের কে একটু ঝালাই তে চাইছিলাম,তোমরা সবাই ঝলেছ আর কোন কথা হবে না,
আংকেল ঃ আমি আগেই বুঝতে পারছিলাম তাই তালে তাল মিলিয়ে যাচ্ছিলাম।
সবাই হা হা হা করে হাসতে লাগলো।
আমি ঃ তবে আমার বিয়েতে তানিশা থাকতে পারবে না, তানিশা দেখুক কাছের মানুষদের বিয়ের সময় না থাকতে পারলে কেমন লাগে, এইটা ওর শাস্তি।
তানিশা ঃ আমার কি করার আছে বাবা মা আমাকে না করেছিল।
আমি ঃ এখন আমি না করছি, আসবি না।

চলবে....................
আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৪)

আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৪)


আমি ঃ আমাকে যেতে দাও এতে আমাদের দুজনের জন্যেই ভালো হবে।
আরিফা ঃ আমি আর কখনো তোমার সাথে বাজে ব্যবহার করবো না, তোমাকে আর সন্দেহ করবো,, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি তাই তোমাকে কখনো হারাতে চাই না।
আমি ঃ আরিফা  তুমি এত পাগল হলে আমি যেতে পারব না, তুমি আমাকে যেতে দাও, আমি পড়ালেখা করে তোমার কাছে ছুটে আসবো।
আরিফা ঃ কেন যাবে তুমি, আমার কাছে থাকো।
আমি ঃ তোমার মন চাইলে তুমি কানাডায় যেতে পারো, আর আমি তোমার সাথে প্রতিদিন ভিডিও কল করে কথা বলবো, ও আর একটা কথা তুমি মনে হয় আফিফার খবর জানো না, ঐদিন যেই ছেলেকে সাথে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম সেই ছেলের সাথে আফিফা চুটিয়ে প্রেম করছেন।


আরিফা ঃ কোন দিনের কথা বলছো তুমি।
আমি ঃ ঐ যে ফেইসবুকে যেদিন আমাকে নিয়ে ছবি পোস্ট করেছিলো, ঐ দিন রাব্বানী হোসাইন আমার সাথে ছিলো, সেই ছেলেকে আফিফা ভালবাসে ।
আরিফা ঃ ঐ কারণে আমি তোমাকে মেরেছিলাম, আর মাও তোমাকে মেরেছিল।
আমি ঃ হ্যা কিন্তু ঐ দিন আমি বিনা কারণে মার খেয়েছিলাম।
আরিফা ঃ আর মারবো না বিদেশে যেওনা প্লিজ।
আমি ঃ আমার নিজেকে তোমার জন্য প্রস্তুত করতে চাচ্ছি মাত্র দুইটা বছর তোমার কাছ থেকে চেয়ে নিচ্ছি, আমাকে তুমি বিশ্বাস করো না কেন।
আরিফা ঃ যদি গিয়ে সাধা চামরা দেখে বিয়ে করে ফেলো তাহলে আমি কিন্তু মরে যাবো।
আমি ঃ আমার সিনিয়র আপু কে রেখে কারো প্রেমে পরতেই পারি না,, আর তা ছাড়া আমি জীবনে তোমাকে ছাড়া অন্য কোন মেয়েকে ভালবাসিনি।
আরিফা ঃ তুমি প্রতিদিন আমাকে কল দিবে, আমি তোমার সাথে কথা বলা ছাড়া থাকতেই পারবো না।
আমি ঃ তাহলে তুমি অনুমতি দিচ্ছো তো।
আরিফা ঃ ওখানে অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাবে না।
আমি ঃ হা হা হা ঠিক আছে।
আরিফা ঃ  কখন যাবে আগামীকাল।
আমি ঃ বিকালে।
আরিফা ঃ আমি যদি আজকে তোমাদের বাসায় থাকি তাহলে কি তুমি আপত্তি করবে।
আমি ঃ তোমার ইচ্ছা, তবে আমি রাতে তোমার সাথে বসে আডডা দিতে পারবো না, আমার বাসায় অনেক কাজ আছে।

আরিফা ঃ ব্যাগপত্র গুছানো হয়ে গেছে।
আমি ঃ কিছুটা হয়েছে।
আরিফা ঃ বাসায় চলো আমি নিজের হাতে গুছিয়ে দিবো।
আমি ঃ ঠিক আছে, আন্টি আর আংকেল কে বলে নাও নয়তো বা উনারা চিন্তা করবে।
আরিফা ঃ আচ্চা তুমি মা বাবাকে বলেছো যে তুমি বিদেশে যাচ্ছো।
আমি ঃ হ্যা সকালে তোমার বাবা আর মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এসেছি।
আরিফা ঃ চলো তাহলে।
আমি ঃ হুম চলো।
তারপর বাসায় এলাম, খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম, সবাই মিলে আমার ব্যাগপত্র গুছিয়ে দিচ্ছে।
আমি  সাইদ ও মিজান কে আসতে বললাম ওরা এলো ওদের সাথে দেখা করলাম, রাতে আবার খাওয়া দাওয়া শেষ করে ছাদে গেলাম।

কিছুক্ষণ পর আরিফা ছাদে আসলো।
আরিফা ঃ একা একা দাঁড়িয়ে আছো কেন।
আমি ঃ এমনি, মনটা ভালো লাগছে না।
আরিফা ঃ তাহলে যেওনা।
আমি ঃ তোমার কথা চিন্তা করেই মন খারাপ হচ্ছে।
আরিফা ঃ আমার কথা তোমার ভাবার সময় আছে তাহলে।
আমি ঃ আমি ভাবছি যদি বিদেশে কোন সুন্দরী একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করে ফেলি তাহলে তোমার কি হবে।
আরিফা ঃ আবার শুরু করলা, আজকে আমি তোমাকে মারতে পারব না, তাই এমন করছো।
আমি ঃ আমাকে একবার ঝড়িয়ে ধরবে প্লিজ।

এই কথা বলার সাথে সাথে ঝড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো।
আমিও কান্না শুরু করলাম,
সব কিছু রাগের মাথায় করেছি কিন্তু আসলে তো আমিও আরিফা কে পাগলের মত ভালবাসি।
অনেকক্ষণ পর আমি শান্ত হলাম।

আমি ঃ আরিফা, এই আরিফা এবার আমাকে ছাড়ো।
আরিফা ঃ আর একটু পর এখন একটু এভাবে ধরে রাখো।
এমন সময় তানিশা গলা কাশি দিয়ে ছাদে এলো।
দুজন ঝটকা মেরে ছেড়ে দিলাম।
তানিশা ঃ মনে হয় এখন ছাদে আশাটা আমার উচিৎ হয়নি।
আরিফা ঃ না ঠিক আছে কোন সমস্যা নাই।
আমি ঃ কেন এখন ছাদে আসলে কি সমস্যা।
তানিশা ঃ তোরা তো দুজন ঝড়ে ধরে পিষে ফেলছিলি তাই বললাম।
আমি ঃ কয়, কিছু না তো।
আরিফা ঃ আমি একটু নিচে যাচ্ছি আমার একটু কাজ আছে।
তানিশা ঃ তোরা দুজন থাক আমি নিচে যাচ্ছি আর আমিরুল তোর সাথে বাবার কি জানি কথা আছে,, আরিফা তোর বাবা মা এসেছে, তোদের দুইজনকে ডাকছে, আমি এই সেই বলে কিছুক্ষণ কথা বলছি তোরা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আয়।

আমি ঃ না চল এখনি যায়,
আরিফা ঃ ৫ মিনিট পর যাবো তুমি এখন থাকো, এই তানিশা তুই নিচে যা ,
আমি ঃ পাগলামী করো না তো আংকেল আন্টি আসছে নিশ্চয় কোন জরুরী কথা আছে।
আরিফা ঃ তাহলে আবার ছাদে আসবা চলো নিচে চলো।
তারপর নিচে গেলাম।
আমি ঃ আসসালামুয়ালাইকুম আংকেল আন্টি কেমন আছেন।
আংকেল ঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম, ভালো আছি,।
বাবা ঃ আমিরুল তোর আংকেল বলছিলো তোর আর আরিফার বিয়েটা আজকে হয়ে যাক,,,
আমি ঃ এটা আবার কেমন কথা, আমি এখন বিয়ে করতে পারব না।
আংকেল ঃ আমরা চাই আরিফা তোমার মায়ের কাছে থাকুক।
আমি ঃ এমনিতেই থাকুক কোন সমস্যা নেই, আপনি মনে হয় আমাকে বিশ্বাস করতে পারছেন না।
আন্টি ঃ আমিরুল আমরা তোমাকে বিশ্বাস করি, তাই তোমার হাতে আমাদের একমাত্র মেয়েকে তুলে দিচ্ছি।
আমি ঃ পড়ালেখা শেষ না করে আমি বিয়ে করতে পারব না, বেয়াদবি নিবেন না দয়াকরে। আমি বিয়ে করে বউ বাসায় রেখে পড়ালেখা করতে পারবো না।

আংকেল ঃ অসুবিধা কী বাবা তোমার কাছে রাখো আর তোমার কি টাকা পয়সার অভাব আছে যে বিদেশে গিয়ে বড় ডিগ্রি নিয়ে আসতে হবে এবং চাকরি করে সংসার চালাতে হবে।
আমি ঃ আংকেল সকাল বেলা আপনি আর আন্টি আমাকে অনুমতি দিয়েছেন, আর এখন অন্য কথা বলছেন।
বাবা ঃ দেখুন ভাই সাহেব আমি আমার ছেলের উপর কোন কিছু চাপিয়ে দিতে পারছিনা, আর আমার ছেলের চেয়ে আমার মেয়ে বড় তাই আগে আমি আমার মেয়ের বিয়ে দিতে চাইছিলাম, এখন যদি আপনারা এমন করেন তাহলে কিভাবে হবে বলেন।
আংকেল ঃ তাহলে আপনি আপনার মেয়েকে বিয়ে দেন, এরপর আমিরুল পড়ালেখা শেষ করে আসুক পড়ে বিয়ে করবে।

তারপর আমি আমার রুমে গেলাম,,
কিছুক্ষণ পর আরিফা কল করে ছাদে যেতে বললো, এবং ছাদে গেলাম

আমি ঃ আবার ছাদে আসতে বললে কেন।
আরিফা ঃ আজকে বিয়েটা করলে কি এমন হতো।
আমি ঃ পড়ালেখা করেই বিয়ে করবো, আর বিয়ে করবো বড় অনুষ্ঠান করে, এমন চুপ করে বিয়ে করবো কেন।
আরিফা ঃ আমি মা বাবা কে অনেক রিকোয়েস্ট করে এখানে এনেছিলাম, তুমি সব কিছু নষ্ট করে দিলে।
আমি ঃ ভালবেসেছি সবাইকে জানিয়ে আর বিয়ে করবো এভাবে তা তুমি ভাবলে কিভাবে।
আরিফা ঃ তোর মাথা তুই যা ভালো মনে করিস তাই করিস, আমি আর বাসায় যাবো না, আজ থেকে এখানেই থাকবো।
আমি ঃ তুমি তোমার বাড়িতে থাকবে, আর এখানে মাঝে মাঝে থাকতে আসবে,।
আরিফা ঃ আমি মাঝে মাঝে বাসায় যাবো আর সব সময় এখানেই থাকবো।
আমি ঃ তোমার ইচ্ছা যা মনে করো তাই করো এখন আমি রুমে যাচ্ছি ঘুমাতে হবে।
আরিফা ঃ আপনার ফ্লাইট বিকালে সকালে ঘুমাবে সারারাত আমার সাথে বসে আডডা দিবে এই নিয়ে কোন কথা হবে না।
আমি ঃ ঠিক আছে কিন্তু আমি সারারাত থাকতে পারবো না, সকালে কিছু কাজ করতে হবে,
আরিফা ঃ আমি কাজ করে দিবো, আচ্চা তুমি আমার হাঁটুর উপর মাথা দিয়ে এখানে ঘুমিয়ে যাও, আমি তোমার মাথার চুল গুলো বিলি কেটে দিচ্ছি।

আমি ঃ ঠিক আছে,।
তারপর অনেকক্ষণ এবারে আরিফার হাঁটুর উপর মাথা রেখে গল্প করলাম,
কখন যে ঘুমিয়ে গেছি তা নিজেই বলতে পারব না, সকাল বেলা ঘুম ভাঙলো তখন দেখি আরিফার মাথা আমার বুকের উপর, আর আমি আরিফার হাঁটুর উপর মাথা দিয়ে শুয়ে আছি।
তারপর হঠাৎ করে বাবা ছাদে আসলো।
বাবা ঃ কিরে তুই রাতে ঘুমাসনি।
আমি না শোনার ভান করে এভাবেই থাকলাম। বাবা কিছুক্ষণ বকবক করে নিচে চলে গেলো।
বাবা নিচে যেতেই আরিফা বলছে এই উঠো উঠো বাবা এসেছিলো,
আমি ঃ আমি জানি বাবা এসেছিলো, কিন্তু লজ্জায় উঠতে পারিনি।
আরিফা ঃ তুমি নিজেই ফেঁসে গেলে আমাকেও ফাসালে।
আমি ঃ তুমি তো এখানে থাকতে বললে, এখন নিচে যাও ফ্রেশ হতে হবে, আর আমার কাজপত্র গুলো গুছানো লাগবে।
আরিফা ঃ নিচে চলো,
তারপর নিচে গিয়ে সব কিছু গুছিয়ে নাস্তা করলাম,
বাসায় বসে বসে গল্প করছি, দুপুরের খাবার খেয়ে বিমানবন্দরের দিকে রওনা দিলাম,
এখন আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি বিমানবন্দরের সামনে দাঁড়িয়ে।
বাবা ঃ কানাডায় গিয়ে একটা ফোন দিবি ।
মা ঃ ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করবি ।
তানিশা ঃ নিজের খেয়াল রাখবি ।
আমি ঃ হুম।

এখন আমার যেতে মন চাইছে না, কারো মুখের দিকে তাকাতে পারছিনা,
কেউ কান্না করছে না, তবে সবার চোখে পানি তা বুঝতে পারছি।
মাকে জড়িয়ে ধরে আছি,,

মা ঃ কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করবি না,  মন চাইলে আসবি ।
আমি ঃ তুমি নিজের খেয়াল রেখো।
বাবা কাছ থেকে বিদায় নিলাম, আরিফার বাবা মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিলাম।
এইবার আরিফার সামনে গেলাম।
আমি ঃ আরিফা আমি আসি দোয়া করো, মন চাইলে আমাদের বাসাতেই থেকো।
আরিফা কোন কথা না বলে ঝড়িয়ে ধরে কান্না করতে শুরু করলো,,,
আমি কিছু বলতে পারছিনা গলাটা কেমন যেন শুকিয়ে গেছে, চোখের পানি পড়ছে কিন্তু মুখ দিয়ে কিছু বলতে পারছিনা।
কিছুক্ষণ পর বললাম এইবার ছাড়ো আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
আরিফা ঃ নিজের খেয়াল রাখবে, কোন ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করবে, মোবাইলে ভিডিও কল করে কথা বলবে।
আমি ঃ ঠিক আছে,
আরিফা ঃ কেঁদে কেঁদে বলছে আর কোন মেয়ের দিকে তাকাবে না, বিদেশে সুন্দর সুন্দর মেয়ে দেখে আমাকে ভুলে যেওনা, মনে রেখো তোমার জন্য কেউ একজন অপেক্ষা করছে।
আমি ঃ হুম এখন আসি,
তারপর আসতে আসতে ভিতরে গেলাম পিছনে তাকানোর শক্তি আমি হারিয়ে ফেলেছি,
আমি জানি পিছনে তাকালে আমি আর যেতে পারবো না।
ভিতরে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ শেরে বিমানে উঠে বসলাম।
ভিডিও কল দিয়ে সবাইকে দেখলাম, কিছুক্ষণ পর বিমান ছেড়ে দিলো আর ভিডিও কলটা কেটে গেলো।
তারপর কানাডায় দুইদিন পর আসলাম,,,
অনেক সুন্দর একটা দেশ, উন্নত দেশ উন্নত জাতি,,
সব কিছু থাকলেও আমার জন্ম ভূমির কাছে এসব কিছুই না,, আপনারা হয়তো বা বিশ্বাস করবেন না কিন্তু যারা প্রবাসী তারা যানে দেশের মায়া কেমন, দুনিয়াতে একমাত্র প্রবাসীরাই দেশ কে বেশি ভালোবাসে...

(এখন খারাপ সময় তাদের সাথে চলতে না পারলেও তাদের কে কষ্ট দিয়ে কোন কথা বলবেন না, এই সময়ে আমরা নিজেদের কে সচেতন করে রাখার চেষ্টা করবো গুরুত্বপূর্ণ কাজ না থাকলে বাহিরে যাবার কোন প্রয়োজন নেই, আপনার পাসের মানুষের খোঁজ খবর নেন,, এবং আপনার অবস্থান থেকে তাদের কে সাহায্য করুন, মনে রাখবেন হতদরিদ্র সবার কাছে হাত পাততে পারলেও মধ্যবিত্যরা তা পারে না,,  সম্পদ ব্যবহার করার জন্য এখন উপযুক্ত সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন,, নিজে বাঁচুন অন্যকে বাঁচানোর চেষ্টা করুন,, তবে সব কিছু খেয়াল রেখে করবেন নিজের জীবন কে ঝুঁকিতে ফেলবেন না, ইতালিতে অনেক সম্পদ শালী ব্যক্তি তাদের সম্পদ রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে আর বলছে এই অর্থ সম্পদ দিয়ে কি লাভ যা আমাদের কোন কাজে আসেনি, বাঁচাতে পারেনি আমাদের আপনজনের, আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন- আমিন)

এর মা বাবা কে ফোন করলাম, আরিফা নাকি আমাদের বাসাতেই থাকবে, মেয়েটা পাগলী , এতটা পাগল অথচ ওর উপর রাগ করেই আমি চলে এলাম কাজটা আমার মোটেও ঠিক হয়নি,,
যাই হোক এবার আমার রুমে গেলাম,
আমার সাথে একটা রুমমেট আছে মনে হয়,
আমি বাসার মালিকের কাছ থেকে চাবি নিয়ে রুমে গেলাম দুই তলা বাসা  দিতীয় তলায় আমার রুম আমার রুম বলতে আমার পাশের রুমে একজন থাকবে তার সে তার রুমে থাকলেও দুজনের একটা কিচেন একটা ওয়াশ রুম,
তারপর নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ রুমে গেলাম,,
গোসল করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
বিকালে ঘুম ভেঙে গেল,, দরজায় টুকার আওয়াজে,,

আমি দরজা খুলে দেখলাম একটা মেয়ে।
আমি ঃ কি চাই এখানে।
মেয়ে ঃ আমি আপনার পাসের রুমে থাকি।
আমি ঃ আপনি কি বাঙালি।
মেয়ে ঃ হ্যা আমি বাঙ্গালী এই বাসার মালিক বাঙালি।
আমি ঃ ঠিক আছে আপনি এখন আসতে পারেন, আমি এখন ঘুমাবো।
মেয়ে ঃ এই যে মিস্টার ধারান, আপনার নাম কি, আপনি কানাডায় কেন আসছেন।
আমি ঃ আমার নাম আমিরুল, পড়ালেখা করার জন্য আসছি ।
মেয়ে ঃ গুড, সকালে আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত বাথরুমে যেতে পারবেন না।
আমি ঃ আপনার নাম কি ।
মেয়ে ঃ আমি রূপা,
আমি ঃ দেখো রূপা একসাথে থাকবে কোন জোর খাটাতে যেওনা, যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে অন্য বাসা দেখতে পারো, আমার সাথে উচ্চ আওয়াজে কথা বলবে না, মেরে তকটা বানিয়ে দিবো,, ১০০% ময়মনসিংহের মাল,,  কথাটা যেন মনে থাকে,,
রূপা ঃ ঐ শালা আমিও ময়মনসিংহের প্রডাক্ট এত বড় বড় কথা বলিস না মেরে মাটি চাপা দিয়ে দিবো।
সাথে ঠাস ঠাস করে দিলাম একটা গালে।
আমি ঃ এখান থেকে বিদায় হো,, অন্য বাসা দেখ টাকা লাগলে আমাকে বলিস,,,,।
রূপা ঃ আমি তোকে জেলের ভাত খাওয়াবো ।

আমি ঃ তোকে মার্ডার করবো, তারপর নিজেই জেলে যাবো।
তারপর রূপা আর কোন কথা বলেনি,,, চলে যায়, অবশ্য রূপা চাইলে আমাকে জেলের ভাত খাওয়াতে পারতো কিন্তু তা করেনি,, বরং বাড়িওয়ালা কে বলেছে আমাকে যেন বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
রাতে খুদা লাগছে, বাহিরে গিয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে এলাম,,
রূপা ঃ এই যে মিস্টার আপনার খারাপ রুমে রাখা আছে খেয়ে নেন।
আমি ঃ আমি তো বাহিরে গিয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে এলাম।
রূপা ঃ এখানে সহজে বাঙালি খাবার পাওয়া যায় না, একটা লোকের সাথে কথা বলে খাবার ঠিক করেছিলাম, সে আমাকে প্রতিদিন খাবার দিয়ে যায় আজকে বাড়িওয়ালা আপনার নাম দেখিয়ে দিয়েছে, তাই আজ থেকে আপনি ঐ খাবার খাবেন।
আমি ঃ ধন্যবাদ রূপা, তখন আমার মাথা নষ্ট ছিলো তাই তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিলাম,আমি সত্যিই দুঃখিত।
রূপা ঃ ঠিক আছে আমারো তখন এভাবে কথা বলা ঠিক হয়নি।

চলবে...........
আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৩)

আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১৩)

রব্বানী ঊ ঃ আপনি যদি আপনার বাইকটা একটু দিতেন বা আপনি যেতেন তাহলে আমার অনেক উপকার হতো।
আমি ঃ আমার বাসা চিনো।
রাব্বানী হোসাইন ঃ না ভাই ।

আমি ঃ তাহলে আমার বাইক পৌঁছে দিবে কিভাবে।
রব্বানী হোসাইন ঃ ভাই একটু গেলে বেশি ভালো হতো।
আমি ঃ ঠিক আছে চলো।
তারপর রব্বানী হোসাইন কে সাথে নিয়ে হাসপাতালে গেলাম।
হাসপাতালে গিয়ে বললাম






আমি ঃ আমি এখন আসি।
রব্বানী হোসাইন ঃ ভাই এত টুকু যেহেতু আসছেন একবার আমার বন্ধু কে দেখে যান।
আমি ঃ তোমরা না মিয়া,, আচ্চা চলো।
তারপর হাসপাতালের ভিতরে যাচ্ছি এমন সময় পিছন থেকে কেউ একজন আমার কোলার ধরে টান দিলো।
আমি ঃ কোন শালারে। পিছনে তাকিয়ে দেখি আফিফা
আফিফা ঃ শালা না দুলাভাই শালী বলেন।
আমি ঃ তুমি এখানে কেন।
আফিফা ঃ ভাবি কে সাথে নিয়ে আসছি, চেকাপ করানোর জন্য।
আমি ঃ বাহ এর মধ্যেই সবাই ভাবিকে নিজের করে নিলে, তা আনিছ ভাই কোথায়।
আফিফা ঃ আনিছ ভাই তো ভাবিকে সাথে নিয়ে গেল, আচ্চা এখানে কোথায় আসছেন।
আমি ঃ এক ছোট ভাইকে দেখতে।
আফিফা ঃ আপনার সাথে এই তিন নাম্বার ছাগলের বাচ্চা আবার কে।
আমি ঃ ও রাব্বানী হোসাইন, আমার জুনিয়র ।
রাব্বানী হোসাইন ঃ এই মেয়ে তিন নাম্বার ছাগলের বাচ্চা মানে কি।

আফিফা ঃ এই যে মিস্টার আসছে কথা বলেন, আমি আমার দুলাভাইয়ের সাথে কথা বলছি, আর এই হাসপাতাল।
রাব্বানী হোসাইন ঃ ভাই কিছু বলছেন না কেন।
আমি ঃ আচ্চা আফিফা তুমি তোমার কাজে যাও,, রাব্বানী হোসাইন চলো,, কোথায় তোমার বন্ধু।
আফিফা ঃ আরে ধারান একটা ছবি তুলি তারপর যাবেন।
আমার কাদে হাত দিয়ে মুখ বেঁকিয়ে কয়েকটা ছবি তুলে নিলো।
আমি ঃ এই ছবি দিয়ে কি করবে।
আফিফা ঃ ফেইসবুকে পোস্ট করবো, আর আপনাকে ট্যাগ করবো।
আমি ঃ এইসব আরিফা পছন্দ করে না, আমাকে বকা শুনিও না।
আফিফা ঃ ঠিক আছে কোন সমস্যা নাই, নিজের কাছে রেখে দিবো।

তারপর চলে এলাম,
রাব্বানীর বন্ধু কে দেখে রব্বানী হোসাইন কে বাসায় পৌছে দিয়ে আমি বাসায় চলে এলাম।
এসে একটু  বিছানায় নিজের শরীরটা কে এলিয়ে দিলাম।
এমন সময় আরিফা ফোন করলো।

আরিফা ঃ কোথায় তুমি।
আমি ঃ বাসায়।
আরিফা ঃ জান একটু আমাদের বাসায় আসবে।
আমি ঃ কেন তোমার বাসায় যাবো কেন।
আরিফা ঃ তাহলে তোমার রুমের দরজা খুলো।
আমি গিয়ে দরজা খুললাম একি এই মেয়ে তো আমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে।
আরিফা আমার রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিলো,

আমি ঃ দরজা লাগালে কেন।
আরিফা ঃ তোমাকে একটু আদর করবো।
আমি ঃ কি উল্টা পাল্টা কথা বলছো।
আরিফা ঃ ঐ ছেমরা আমি তরে আমার বাসায় যেতে বললাম বললি যেতে পারবি না আর আফিফা ফোন করার সাথে সাথে হাসপাতালে গেলি এক নজর দেখার জন্য।

আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম।
আমি ঃ কি সব উল্টা পাল্টা কথা বলছো।
আরিফা ঃ আফিফা ফেইসবুকে পোস্ট করছে তোরে ট্যাগ করছে আমারে ট্যাগ করছে আমার সব বন্ধুদের কে ট্যাগ করছে, তোর শরীরে হাত দিয়ে ছবি তুলছে তোর মজা লাগছে তাইনা, আমি গায়ে হাত দিলেই গায়ে ফুসকা পড়ে তাই না।
আমি ঃ আমি তো আফিফার সাথে দেখা করতে যায়নি,, আমি আমার জুনিয়রের বন্ধু কে দেখতে গিয়েছিলাম।
ঠাস ঠাস ঠাস
আরিফা ঃ কান ধর ।
আমি গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
আমি ঃ তুমি আমাকে মারতে পারলে।
আরিফা ঃ আমি ছাড়া অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাতে পারবি না,, এখন কানদর।
আমি ঃ আমি তো আফিফার সাথে দেখা করতে যায়নি।
আরিফা ঃ আর নাটক করার প্রয়োজন নাই তুই কানদর।
আমি কান ধরে দাঁড়িয়ে আছি।
আরিফা ঃ বল আর কোন মেয়ের দিকে তাকাবো না।
আমি ঃ আর কোন মেয়ের দিকে তাকাবো না।
আরিফা ঃ গুড বয় এখন কান ছাড়।
আমি ঃ আরো কিছু বলবা।
আরিফা ঃ এখন তোমাকে নিয়ে শপিং করতে যাবো।
আমি ঃ আমার শরীর ভালো না, তুমি যাও।
আরিফা ঃ আফিফার সাথে দেখা করার সময় মন ভালো থাকে।
আমি ঃ আরিফা একদম চুপ করো, আমি তোমাকে কতবার বলবো যে আফিফার সাথে আমি দেখা করতে যায়নি।
আরিফা ঃ আচ্চা বিশ্বাস করলাম এখন চলো শপিং করতে যাবো।

আমি ঃ আমি বললাম আমি যেতে পারব না, তোমার মন চাইলে তুমি যাও, আর আমাকে একা থাকতে দাও।
আরিফা ঃ  ঠিক আছে না গেলে নাই, আমি মা কে ডাক দিচ্ছি।
আমি ঃ যা খুশি করো, আমি যেতে পারব না।
আরিফা যাকে ডেকে আনলো।
মা ঃ কি হয়েছে তোর সমস্যা কি, একটু শপিং করতে যেতে বলছে সাথে যা।
আমি ঃ কিন্তু।
মা ঃ কোন কিন্তু না, সোজা যা ।
আমি ঃ ঠিক আছে আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।

তারপর মা চলে গেল।

আরিফা ঃ আমি জানি কিভাবে কাকে সোজা করতে হয়।
আমি ঃ তুমি আমাকে বিশ্বাস করলে না তো আফিফার উপর বিশ্বাস করলে কোন সমস্যা নাই। আমিও দেখে নিবো।
আরিফা ঃ আহারে আমার বাবুটা রাগ করেছে, আসো তোমাকে আদর করে দেয়,
তারপর কিস দেবার জন্য আমাকে ধরেছে
আমি ঝটকা দিয়ে চলে গেলাম ওয়াশ রুমে।
গোসল করে আরিফার সাথে বের হয়েছি।
আরিফা ঃ তুমি কিছু বলছো কেন।
আমি ঃ আমার কথার কোন মূল্য নেই, অতএব আমার কথা না বলাটাই ভালো।
আরিফা ঃ এমন ভাবে কথা বলছো কেন।
আমি ঃ এর চেয়ে ভালো ভাবে কথা আমি বলতে পারি না।
আরিফা ঃ আমার সাথে রাস্তায় খারাপ ব্যবহার করছো করো কোন সমস্যা নাই, বাসায় যাও মার কাছে সব বলবো।
তারপর কি যেন শপিং করলো আমি কিছু দেখিনি।

আমার সাথে বাসায় আসলো মায়ের হাতে কয়েকটা ব্যাগ দিয়ে বললো মা তোমার ছেলে আমার সাথে রাস্তায় খারাপ ব্যবহার করেছে।

মা ঃ আমিরুল আরিফা যা বলছে তা সত্য।
আমি ঃ হ্যা আমি খারাপ ছেলে তাই খারাপ ব্যবহার করেছি।
ঠাস ঠাস ঠাস ।
মা ঃ আগেরবার আরিফা আমাকে তোর ছবি গুলো দেখিয়েছে আমি কিছু বলিনি আরিফা না করে ছিলো, এখন দেওয়াটা খুব জরুরি ছিলো তাই দিলাম।

আমি সোজা চলে এলাম রুমে।
রাতে খাবার জন্য অনেকক্ষণ ডাকার পর গেলাম।


আমি ঃ বাবা আমি দেশের বাহিরে গিয়ে পড়ালেখা শেষ করতে চাই।
তানিশা ঃ তোর কি মাথা ঠিক আছে, তুই যাবি দেশের বাহিরে তাও আবার পড়ালেখা করার জন্য, হাসালি।
আমি ঃ বাবা তুমি ব্যবস্থা করে দিতে পারবে।
বাবা ঃ পড়ালেখার জন্য আমি না করবো না, কিন্তু তুই বিদেশে একা একা থাকতে পারবি।
আমি ঃ খুব পারবো, আগামী মাসে আমার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হবে তুমি সব কিছু ব্যবস্থা করে রেখো, আমি মাস্টার্স দেশের বাহিরে করতে চাই।
মা ঃ বিয়ে করে তোর বাবার ব্যবসায় হাত দে,, বাজে চিন্তা মাথায় আনিশ না।
আমি ঃ বাবা তুমি ব্যবস্থা করে দাও।
রাতে রুমে এসে বসে আছি এমন সময় আরিফা ফোন দিলো।
আমি ঃ কিছু বলবা তুমি।
আরিফা ঃ খাওয়া দাওয়া শেষ করছো।
আমি ঃ হ্যা, তুমি করছো ।
আরিফা ঃ করছি, কি করো তুমি।
আমি ঃ বসে আছি রাখি এখন ঘুমাবো, ভালো লাগছে না।
আরিফা ঃ তোমার কি শরীর খারাপ হয়েছে আমি আসবো।
আমি ঃ না আসার দরকার নাই, আমি একটু ঘুমাতে চাই।

এবাবে প্রতিটা দিন ঝগড়া হয়, ভালো লাগে না আর,
পরীক্ষা দিয়ে বাসায় আসলাম সব গুলো পরীক্ষা বেশ ভালো করেই শেষ হলো।
রাতে খাবার সময় হাতে একটা চিঠি দিলো।

বাবা ঃ এইনে তোর ভিসা আর আর পাসপোর্ট, আগামীকাল গিয়ে টিকেট ওকে করে আসিস, আর আজকে রাত ভালো করে চিন্তা করে দেখ।
আমি ঃ ঠিক আছে।
মা আর তানিশা আমার দিকে তাকিয়ে আছে, মা ভেবেছিল ঐদিন কথা গুলো আমি নাটক করে বলছিলাম।
তারপর রুমে আসি এসে কাগজ পত্র গুলো দেখছি।
পিছন থেকে মা রুমে এলো।
মা ঃ আমার উপর রাগ করে চলে যাচ্ছিস ।
আমি ঃ কি যে বলো মা, তোমার উপর রাগ করবো কেন, এখানে থাকলে বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়িয়ে সময়টা চলে যাবে , দেশের বাহিরে গেলে মন দিয়ে পড়ালেখা করতে পারবো।
মা ঃ তুই চলে গেলে আমার বাসা একদম খালি হয়ে যাবে।
আমি ঃ মাত্র দুইটা বছর মা, এরপর তো চলেই আসবো।
আর তানিশা তো আছে, আরিফাও মাঝে মাঝে আসবে হয়তো।

মা ঃ ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখ,,।
আমি ঃ অনেক আগেই চিন্তা করে নিয়েছি।

এমন সময় তানিশা রুমে এলো।

তানিশা ঃ তুই বিদেশে যাবি তা আমাদের বলিসনি কেন।
আমি ঃ তোর সামনেই তো বাবা কে বলেছিলাম, আর হ্যা এরপর দুইদিন গিয়ে ছিলাম বাবার অফিসে আর একদিন পাসপোর্ট অফিসে।
তানিশা ঃ না গেলে হয় না।
আমি ঃ নারে পড়ালেখা করে আসি, জীবনে পড়ালেখা নিয়ে কখনো সিরিয়াস হয়নি, দুইটা বছর সিরিয়াস হয়ে পড়ালেখা করি,,।
তানিশা ঃ আরিফা কি জানে যে তুই বিদেশে যাচ্ছিস।
আমি ঃ না, টিকেট কেটে পড়ে বলবো এর আগে কেউ কিছু বলবে না।

তারপর একটা ঘুম দিলাম,
টিকেট কাটার সময় রাস্তায় আফিফা আর রাব্বানী হোসাইন বসে বসে গল্প করছে।
আমি গিয়ে সামনে দাঁড়ালাম।

আফিফা ঃ দুলাভাই আপনি এখানে।
আমি ঃ রাব্বানীর সাথে কি করো ।
আফিফা ঃ এমনি দেখা করছি।
আমি ঃ কিসের জন্য দেখা করতে আসলে।
রাব্বানী হোসাইন ঃ ভাই ঐ দিন আপনাকে ট্যাগ করে পোস্ট করেছিলো, আর আমি ওর আইডিতে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিয়ে ছিলাম পরে আমরা একে অপরকে ভালবেসে ফেলেছি।
আমি ঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগলো তোমাদের কথা শুনে, তোমরা কথা বলো আমি আসি।
তারপর টিকেট কেটে বাসায় আসি।

আরিফা কে কল দিলাম।

আমি ঃ আরিফা কেমন আছো তুমি।
আরিফা ঃ ভালো আছি, তুমি কেমন আছো, আর শোন আগামীকাল আমার সাথে দেখা করবে বলে দিলাম।
আমি ঃ ঠিক আছে, আমি দেখা করতে আসবো তোমার সাথে আমার ইমার্জেন্সি দেখা করতে হবে।
আরিফা ঃ সামনে তো আমাদের বিয়ে তা সেই দিকে কি তোমার কোন খেয়াল আছে।
আমি ঃ কে বললো এখনো তো পড়াশোনা শেষ হয়নি।
আরিফা ঃ অনার্স তো শেষ করলা আরকি।
আমি ঃ মাস্টার্স কোর্স শেষ করে তারপর বিয়ে, বাদ দাও এইসব কথা আগামীকাল দেখা হচ্ছে এখন রাখি।
আরিফা ঃ এত রাখি রাখি করছো কেন,
আমি ঃ কিছু বলবা ।
আরিফা ঃ আগামীকাল আমার সাথে এতিম খানায় যেতে হবে তোমাকে।
আমি ঃ ঠিক আছে যাবো।
আরিফা ঃ সকাল ৯ টার সময় আমার বাসায় থাকবে বলেছিলাম।
আমি ঃ ঠিক আছে,
আরিফা ঃ ওকে বাবু রাখি ।
আমি ঃ হুম।

আগামীকাল আরিফাদের বাসায় গিয়ে আংকেল ও আন্টির কাছে বলবো দেখি উনারা কি বলেন।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আরিফার বাসায় গিয়ে হাজির হলাম। আংকেল অফিসে যাবার জন্য বের হচ্ছেন ।

আমি ঃ আংকেল একটু সময় দিতে পারবেন।
আংকেল ঃ বলো বাবা কি বলবে আমার আজকে একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে।
আমি ঃ আংকেল আগামীকাল আমি বিদেশে যাচ্ছি।
আংকেল ঃ কোন দেশে পিকনিকে যাচ্ছো ।
আমি ঃ পিকনিকে যাচ্ছি না।
আংকেল ঃ আমি জানি তো পরীক্ষা শেষ এখন বন্ধ বান্ধবী মিলে ঘুরতে যাবে , কোন সমস্যা নাই আরিফা কে নিয়ে যাও।
আমি ঃ আংকেল আপনি আমাকে বলতে দেন,, আমি কোন পিকনিকে যাচ্ছি না, আমি পড়ালেখা করার জন্য বিদেশে যাচ্ছি দুই বছরের জন্য।
আংকেল ঃ কি সব আবোল তাবোল বলছো, সামনে তোমাদের বিয়ে এখন এইসব কথা বলছো কেন।
আমি ঃ আংকেল আরিফা মেয়ে মাস্টার্স এই বছর শেষ আর আমার শুরু আমি আরিফার যোগ্য হয়ে বিয়ে করবো।
আংকেল ঃ তোমার বাবা মা কি বলে।
আমি ঃ মা বাবা সবাই রাজি এখন আপনি অনুমতি দিলেই মেতে পারি।
আংকেল ঃ কেরিয়ার নিয়ে ভাবছো এটা একদম ঠিক ভাবনা, তবে মন দিয়ে পড়ালেখা করতে হবে।
আমি ঃ দোয়া করবেন।

তারপর আংকেল চলে গেলো ,
আন্টির কাছ থেকেও একি ভাবে বিদায় নিলাম।

তারপর আরিফার রুমে গেলাম।

আমি ঃ ভিতরে আসতে পারি।
আরিফা ঃ বলার কি আছে ভিতরে আসো।
আমি ঃ নিচে তোমার জন্য অপেক্ষা করতে করতে এখানে এলাম ।
আরিফা ঃ আমিও রেডি চলো।
তারপর আরিফার সাথে এতিম খানায় গিয়ে বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করে পার্কের দিকে রওনা দিলাম।
একটা যায়গায় বসলাম।
আমি ঃ আরিফা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
আরিফা ঃ বলো ।
আমি ঃ আমি তোমার কাছে একটা জিনিস চাইবো দিবে।
আরিফা ঃ আমার যা আছে সবি তোমার।
আমি ঃ তা আমি জানি, আমার কথাটা শুনো নিজেকে শক্ত করো।
আরিফা ঃ কি এমন কথা যার জন্য এত নাটক করছো।।
আমি ঃ আমি আগামীকাল কানাডায় চলে যাচ্ছি।
আরিফা ঃ হা হা হা কেন।
আমি ঃ পড়ালেখা করার জন্য।
আরিফা ঃ পড়ালেখা নিয়ে মজা করো না তো।
আমি ঃ আগামীকাল চলে যাচ্ছি, বিকালে আমার ফ্লাইট ।
আরিফা ঃ তুমি কি সিরিয়াস।
আমি ঃ হ্যা ।
আরিফা কান্না শুরু করে দিলো।
আমি ঃ তুমি কান্না করছো কেন।
আরিফা ঃ দেশে কি পড়ালেখা করা যায়না, বিদেশে যাওয়ার কি দরকার,  তুমি যেতে পারবেনা এটাই আমার শেষ কথা।
আমি ঃ আমার সব কিছু রেডি, তোমাকে জানানো আমার প্রয়োজন তাই বললাম, আর এমনিতেও আজ কাল আমার কথা তোমার বিশ্বাস হয় না, বিশ্বাস হয় আফিফার কথা, সাইদের কথা তানিশার কথা। শুধু আমার কথা ছাড়া , এই পর্যন্ত তুমি আমাকে কয়টা থাপ্পর দিছো তা তুমি নিজেও বলবে পারবে না, আগামী দুইটা বছর আমাকে কারো কাছে মার খেতে হবে না।


আরিফা ঃ তার মানে তুমি আমার সাথে রাগ করে এমন করেছো।
আমি ঃ আমার ভবিষ্যতের কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নিজের পায়ে দাড়াবো তারপর বিয়ে করবো।
আরিফা ঃ তুমি বিয়ে না হয় পাঁচ বছর পর করো কিন্তু বিদেশে যেওনা ।
আমি ঃ তুমি কি চাওনা তোমার স্বামী মাথা উঁচু করে চলুক,,, তোমাকে এখন বিয়ে করলে মানুষে আমাকে বলবে মেয়ে মাস্টার্স পাস ছেলে অনার্স আমি আমার ভালোবাসা কে মানুষের কাছে হাসির খোরাক করতে পারবো না।
আরিফা এটাই কি তোমার শেষ কথা।
আমি ঃ আমাকে যেতে দাও, এতে দুজনের ভালো হবে।

চলবে................
আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১২)

আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১২)

আরিফা ঃ আমি জানি।
আংকেল ঃ তুই জেনেও এই বিয়েতে রাজি ছিলি ।
আরিফা ঃ না বাবা, আমি একটু আগে জেনেছি, আমিরুল আমাকে বলেছে।

আংকেল ঃ আনিছ তুমি এখনি আমার সামনে থেকে চলে যাও।
আমি ঃ আংকেল একটু অপেক্ষা করুন, আনিছ ভাইয়ের মা বাবা আসছে, উনারা আসলে তাদের সাথে আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করা যাবে।


আংকেল ঃ এখানে আমার কোন সমস্যা নাই, আর আমি আরিফা কে এমন ছেলের হাতে তুলে দিবো না।
আমি ঃ আপনাকে এমন ছেলের হাতে তুলে দিতে বলছি না,  আনিছ ভাইয়ের যেন কোন সমস্যা না হয় তা আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবো, উনার বাবা মা যেন তার সন্তান কে মেনে নেই তার ব্যবস্থা করেদেন।

আংকেল ঃ আমি এর বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাইনা।
আমি ঃ আংকেল আপনি যদি আনিছ ভাই ও তার পরিবার কে অপমান করেন তাহলে তো আনিছ ভাইয়ের বাবা মা তাকে বাসা থেকে বের করে দিবে, আর আপনি যদি স্বাভাবিক ভাবে কথা বলেন তাহলে তারা কিছুটা মেনে নিবে।
আংকেল ঃ আমার মেয়ের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে তার জীবন নিজের হাতে সাজাতে আমি পারবো না।
আমি ঃ এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য আপনি অনেক কিছু করেন আর নিজের আত্বীয়র জন্য করতে পারবেন না, যেই মেয়েটা আনিছ ভাইয়ের উপর বিশ্বাস করে নিজের বাসা বাড়ি মা বাবা আত্বীয় স্বজন কে ছেড়ে চলে এসছে তার জীবন কে আপনি নষ্ট করে দিবেন এটা আমি আপনার কাছে আশা করিনি। আংটি পড়ানোর সময় আনিছ ভাই আসেনি তারা বাবা মা এসেছিল, তখন আপনার বুঝার প্রয়োজন ছিলো।

আংকেল ঃ আরিফা তুই কি বলিস, ।
আরিফা ঃ আমার কিছু বলার নেই, তবে এখন আমি যাকে পছন্দ করি তাকে বিয়ে করবো তোমার কোন আপত্তি থাকতে পারবে না।
আংকেল ঃ আমিরুল কে তোর পছন্দ তা আমি জানি, আমিরুল কি তকে পছন্দ করে।
আরিফা ঃ হ্যা ওর কোন আপত্তি নেই,, 
আংকেল ঃ আমিরুল আরিফা যা  বলছে তা কি সত্যি,।
আমি ঃ জি আব্বা জান, আমি রাজি।

সবাই হাসা শুরু করলো এমন সময় আনিছ ভাইয়ের মা বাবা আসলো।
আনিছ ভাইয়ের মা এসেই আনিছ ভাইকে দুইটা গালে দিলো।
আফিফা তার মায়ের হাত ধরলো।

আফিফা ঃ মা তুমি ভাইয়া কে মারছো কেন,।
আনিছ ভাইয়ের মাঃ কি না করেছে, আমাদের কে ছোট করে দিয়ে আরিফার কাছে তার বাবা মার কাছে।
আমি ঃ আন্টি এই  বিয়ের সময় কি আপনি আনিছ ভাইয়ের অনুমতি নিয়ে ছিলেন, সরি বিয়ে এখনো হয়নি, আনিছ ভাই কেন আংটি বদলের সময় আসেনি তা একটা বারো জানতে চাননি, ।
আনিছ  ভাইয়ের বাবা ঃ আমার আর বাঁচার কোন উপায় রাখলো না, আমি সমাজের সামনে মাথা উঁচু করে ধারাতে পারবো না,, শেষ মেষ একটা অন্য  ধর্মের মেয়েকে বিয়ে করেছে।
আংকেল ঃ তাতে কি হয়েছে তোমার ছেলে তো বিয়ে করেছে নষ্টামী তো করেনি, তা ছাড়া ভুলটা আমরাই করি কিন্তু দোষ চাপিয়ে দেয় আমাদের সন্তানদের উপর, ও যাকে নিয়ে সুখী হবে তাকে বিয়ে করেছে।
আনিছ ভাইয়ের মা,ঃ  তা বিয়েটা কোন নিয়মে হয়েছে, মুসলমানদের নিয়ম অনুযায়ী না অন্য ধর্ম অনুযায়ী।
আনিছ ঃ মুসলমানদের নিয়ম অনুযায়ী, আর আমার বউ এখন মুসলমান,।
আংকেল ঃ যাও সমস্যা সমাধান হয়ে গেল, এখন তোমাদের ছেলে বউ নাতি নিয়ে বাসায় যাও, আর হ্যা আগামী কিছু দিনের মধ্যেই আমার মেয়ের বিয়ে দিবো তোমরা সবাই কিন্তু আসবে।

তারপর আরকি উনারা চলে গেল,
যাবার আগে আফিফা আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে গেলো।

আমি ঃ আংকেল এখন আমি আসি ।
আরিফা ঃ তুমি একটু আমার রুমে আসো।
আমি ঃ এখন না বাসায় যেতে হবে।
সাইদ ঃ বাসায় কি বউ বাচ্চা রেখে আসছিস, গিয়ে দেখবি বিছানা খালি,।
আংকেল একটু গলা কাশি দিলো।
সাইদ ঃ সরি সরি আমি এখন আসি ।
আমি ঃ ধারা আমিও যাবো একসাথে যাবো।
সাইদ ঃ ভাই বাসায় যেতে হবে রে, আমার আবার একটু কাজ আছে বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আবার আরেক জনের সাথে দেখা করতে হবে,
আমি ঃ ঠিক আছে।
তারপর আমি আরিফার সাথে ওর রুমে গেলাম।
আরিফা দরজা লাগিয়ে দিলো।
আমি ঃ দরজা  বন্ধ করে দিলে কেন।
আরিফা ঃ এমনি যেন কেউ বিরক্ত না করে।
আমি ঃ কি বলতে চাচ্ছ তুমি ।
আরিফা ঃ তোমাকে আজকে নিজের করে নিবো।
আমি ঃ জিনা আপু , বিয়ের পর হবে।
আরিফা ঃ তোর বিয়ের গুলি মারি, আজকেই হবে।
আমি ঃ বিয়ের আগে তুমি কি চাচ্ছ তা তুমি জানো, অপবিত্র হতে চাচ্ছো, আমার পবিত্র ভালবাসা কে অপবিত্র করতে চাচ্ছ।

আরিফা ঃ তাহলে একটা কিস দিতে দাও।
আমি ঃ ঠিক আছে দাও।
ঐ মিয়া আপনারা চোখ বন্ধ করেন।
আমরা এখন একটু ব্যস্ত।
পাঁচ মিনিট পর ছারলো।
তারপর বাসায় এলাম মা বাবা কে সব কিছু বললাম।
মা ঃ এখনি বিয়ের কোনো প্রয়োজন নেই, পড়ালেখা শেষ করে তারপর দেখা যাবে।
বাবা ঃ আমারো একি মত, আগে পড়ালেখা শেষ কর তারপর দেখা যাবে।
আমি ঃ এইটা কোন কথা হলো ।
মা ঃ বাসায় তোর বড় বোন আছে তাকে বিয়ে না দিয়ে তুই নিজেই আগে বিয়ে করতে চাচ্ছিস।
আমি আর মা বাবার উপর কোন কথা বললাম না।
ফোন করে আরিফাকে সব কিছু বললাম
আরিফা ঃ ঠিক আছে, কোন সমস্যা নেই, আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করতে পারবো, আমি বাবা মায়ের সাথে কথা বলছি,

আমি ঃ তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।
তারপর আর কি একটা ঘুম দিলাম সকাল বেলা ঘুম ভাঙলো সাইদের ফোনে।
আমি ঃ কিরে এত সকালে কল দিলি কেন।
সাইদ ঃ ভাই ঝামেলায় পড়ে গেছিরে,, হটাৎ করে বিয়ে করে ফেলেছি।
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম।
আমি ঃ বুঝলাম না আবার বল।
সাইদ ঃ গতকাল বাসায় যাবার পর মা বাবা আমার সাথে কথা না বলে আমার খালাতো বোনের সাথে বিয়ে করিয়ে দিয়েছে,
আমি ঃ কেন, এমন করার তো কোন কারণ নেই।
সাইদ ঃ সব তোর জন্য, তুই যদি আমাকে কিশোরগঞ্জ না পাঠাতি তাহলে আজকে আমার এই সর্বনাশ হতো না।
আমি ঃ তোর খালাতো বোন রাজি হলো কেন।

সাইদ ঃ ভাইরে তিন বছর ধরে প্রেম করছিলাম, কিন্তু মন থেকে করতাম না, কিন্তু আমার খালাতো বোন তা সিরিয়াস হিসেবে নিয়েছে,, দুই দিন কল ধরি নাই, তাই বাসার সব কিছু ভেঙে ফেলছে , আর বিষ খেয়েছিলো।
আমি ঃ তাহলে তো তোর খালাতো বোন, মানে ভাবি তোকে অনেক ভালোবাসে।
সাইদ ঃ এখনি কি বিয়ে করার বয়স হয়েছে রে পাগলা এখনো তো আমি কচি শশা , ।
আমি ঃ বাটপার বিয়ের সময় ফোন দিলি না কেন।
সাইদ ঃ ফোন মা কেরে নিয়ে ছিলো, এর বিয়ে না করে যদি আফিফা কে বিয়ে করতাম তাহলে বেশি ভালো হতো, কিছু মাল পানি পেতাম,,।

আমি ঃ বেঁচে গেছিস, সব গুলো মেয়ে যদি তোর বাসায় আসতো তাহলে একটা মিছিলের মত হতো।
সাইদ ঃ তুই একটু আসবি আমাদের বাসায়।
আমি ঃ ঠিক আছে আসছি,,
তারপর সাইদের বাড়িতে গেলাম,
আমি ঃ কিরে তোর বউ কোথায়।
সাইদ ঃ মায়ের সাথে রান্না করছে।
আমি ঃ বাহ, তাহলে তো নতুন বউয়ের হাতের রান্না খাওয়া যাবে।
সাইদ ঃ আমার জীবনটা কচি ভাব থেকে জুনা নারিকেল হয়ে গেলো রে।
আমি ঃ দোস্ত তোর বউকে ডাক দে দেখি, আমার কাজ আছে।

এমন সময় একটা মেয়ে আসলো।

মেয়ে ঃ আসসালামুয়ালাইকুম কেমন আছেন ভাইয়া।
আমি ঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন।
সাইদ ঃ আমিরুল তোর ভাবি, আর কবিতা এই হলো আমার বন্ধু আমিরুল।
আমি ঃ মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর বিয়ে করেছিস ।
সাইদ ঃ হ্যা আমি ওকে নিয়ে অনেক খুশি, আমার কপাল ভালো তাই ওকে পেয়েছি।
কবিতা ঃ ভাইয়া আপনারা বসুন আমি খাবার আনছি।
আমি ঃ কিরে সাইদ বউয়ের সামনে এত প্রসংশা আর আরালে এমন কথা কারণ কি।
সাঈদ ঃ আবার যদি বিষ খায় তাহলে তো আমার হাসপাতালে যেতে হবে,, তাই সামনে কিছু বলতে পারছিনা, হজম করতেও পারছিনা।

আমি ঃ তুই না ভালবাসতি তাহলে এমন করছিস কেন,, তুই অনেক গুলো রিলেশন করেছিস, কাকে বিয়ে করবি তাদের থেকে, কার মন ভাঙ্বি তাদের মধ্য থেকে তার চেয়ে অনেক ভালো হয়ে যে তোর বাবা মার পছন্দ আর তোর অনেক গুলো জিএফ এর মধ্যে একজন কে পেলি,, মন খারাপ করিস না, খুশি থাক, আমি চলি পরে আবার দেখা হবে।
সাইদ ঃ আমি কি ঠকেছি রে আমিরুল।
আমি ঃ মোটেও না, তুই সবাইকে ভালবাসিস কারো জন্য আজ পর্যন্ত নিজের শরীরের পশম পর্যন্ত ছিরিস নি,, তোর জন্য যেই মেয়ে বিষ খেতে পারে সে তোকে জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসে, তুই অনেক লাকি।
সাইদ ঃ ঠিক বলেছিস, আজ থেকে কোন মেয়ের দিকে তাকাবো না।
আমি ঃ তাহলে এখন আসি।
সাইদ ঃ নাস্তা করে যা ।
আমি ঃ পরে আসবো,,
সাইদ ঃ শোন আগামী দুইদিন পর আমার বিয়ের বউ ভাত তুই আসবি আর আরিফা তোরা দুইজন আমার প্রথম মেহমান,, তোর বাসার সবাই আমি দাওয়াত দিবো কোন চিন্তা করিস না।
আমি ঃ ঠিক আছে কোন সমস্যা নাই এখন আসি ।
তারপর বাসায় চলে আসি, খাওয়া দাওয়া শেষ করে কলেজের দিকে রওনা দিলাম,
তানিশা তো এখন একাই কলেজে যায়, আমি তো টোটো কোম্পানীর ম্যানেজার হয়ে গেছি তাই নিজেকে কলেজে গেলাম।

কলেজে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেছে নাই মিজান নাই সাইদ
কিযে করি ।
এমন সময় Rabbani Hossain Ridoy আসলো
আমার এক ক্লাস জুনিয়র
রব্বানী হোসাইন ঃ আমিরুল ভাই একটা সমস্যায় পড়েছি।
আমি ঃ কি সমস্যা ।
রব্বানী হোসাইন ঃ আমি আপনার এক ক্লাস জুনিয়র এই কলেজে পড়াশোনা করি আমার বাড়ি জালাল তাইড় ।
আমি ঃ এইটা আবার কোন গ্রহের নাম ।
রাব্বানী হোসাইন ঃ এইটা আমার গ্রামের নাম , পোস্ট অফিস মহিমাগন্জ ,ইউনিয়নের নাম কামালের পাড়া ,
উপজেলা সাঘাটা, জেলার নাম গাইবান্ধা।
আমি ঃ বুঝতে পারছি , তার মানে তোমার জেলা উত্তর অঞ্চলে।
রাব্বানী হোসাইন ঃ জি ভাই ।
আমি ঃ আমার কাছে কি চাও।
রাব্বানী হোসাইন ঃ ভাই আমার এক বন্ধু হাসপাতালে ভর্তি এখন আপনার বাইকটা একটু দরকার, আপনি যদি আমাকে নিয়ে যেতেন বা আপনার বাইক দিতেন,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,