আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১২)

আরিফা ঃ আমি জানি।
আংকেল ঃ তুই জেনেও এই বিয়েতে রাজি ছিলি ।
আরিফা ঃ না বাবা, আমি একটু আগে জেনেছি, আমিরুল আমাকে বলেছে।

আংকেল ঃ আনিছ তুমি এখনি আমার সামনে থেকে চলে যাও।
আমি ঃ আংকেল একটু অপেক্ষা করুন, আনিছ ভাইয়ের মা বাবা আসছে, উনারা আসলে তাদের সাথে আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করা যাবে।


আংকেল ঃ এখানে আমার কোন সমস্যা নাই, আর আমি আরিফা কে এমন ছেলের হাতে তুলে দিবো না।
আমি ঃ আপনাকে এমন ছেলের হাতে তুলে দিতে বলছি না,  আনিছ ভাইয়ের যেন কোন সমস্যা না হয় তা আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবো, উনার বাবা মা যেন তার সন্তান কে মেনে নেই তার ব্যবস্থা করেদেন।

আংকেল ঃ আমি এর বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাইনা।
আমি ঃ আংকেল আপনি যদি আনিছ ভাই ও তার পরিবার কে অপমান করেন তাহলে তো আনিছ ভাইয়ের বাবা মা তাকে বাসা থেকে বের করে দিবে, আর আপনি যদি স্বাভাবিক ভাবে কথা বলেন তাহলে তারা কিছুটা মেনে নিবে।
আংকেল ঃ আমার মেয়ের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে তার জীবন নিজের হাতে সাজাতে আমি পারবো না।
আমি ঃ এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য আপনি অনেক কিছু করেন আর নিজের আত্বীয়র জন্য করতে পারবেন না, যেই মেয়েটা আনিছ ভাইয়ের উপর বিশ্বাস করে নিজের বাসা বাড়ি মা বাবা আত্বীয় স্বজন কে ছেড়ে চলে এসছে তার জীবন কে আপনি নষ্ট করে দিবেন এটা আমি আপনার কাছে আশা করিনি। আংটি পড়ানোর সময় আনিছ ভাই আসেনি তারা বাবা মা এসেছিল, তখন আপনার বুঝার প্রয়োজন ছিলো।

আংকেল ঃ আরিফা তুই কি বলিস, ।
আরিফা ঃ আমার কিছু বলার নেই, তবে এখন আমি যাকে পছন্দ করি তাকে বিয়ে করবো তোমার কোন আপত্তি থাকতে পারবে না।
আংকেল ঃ আমিরুল কে তোর পছন্দ তা আমি জানি, আমিরুল কি তকে পছন্দ করে।
আরিফা ঃ হ্যা ওর কোন আপত্তি নেই,, 
আংকেল ঃ আমিরুল আরিফা যা  বলছে তা কি সত্যি,।
আমি ঃ জি আব্বা জান, আমি রাজি।

সবাই হাসা শুরু করলো এমন সময় আনিছ ভাইয়ের মা বাবা আসলো।
আনিছ ভাইয়ের মা এসেই আনিছ ভাইকে দুইটা গালে দিলো।
আফিফা তার মায়ের হাত ধরলো।

আফিফা ঃ মা তুমি ভাইয়া কে মারছো কেন,।
আনিছ ভাইয়ের মাঃ কি না করেছে, আমাদের কে ছোট করে দিয়ে আরিফার কাছে তার বাবা মার কাছে।
আমি ঃ আন্টি এই  বিয়ের সময় কি আপনি আনিছ ভাইয়ের অনুমতি নিয়ে ছিলেন, সরি বিয়ে এখনো হয়নি, আনিছ ভাই কেন আংটি বদলের সময় আসেনি তা একটা বারো জানতে চাননি, ।
আনিছ  ভাইয়ের বাবা ঃ আমার আর বাঁচার কোন উপায় রাখলো না, আমি সমাজের সামনে মাথা উঁচু করে ধারাতে পারবো না,, শেষ মেষ একটা অন্য  ধর্মের মেয়েকে বিয়ে করেছে।
আংকেল ঃ তাতে কি হয়েছে তোমার ছেলে তো বিয়ে করেছে নষ্টামী তো করেনি, তা ছাড়া ভুলটা আমরাই করি কিন্তু দোষ চাপিয়ে দেয় আমাদের সন্তানদের উপর, ও যাকে নিয়ে সুখী হবে তাকে বিয়ে করেছে।
আনিছ ভাইয়ের মা,ঃ  তা বিয়েটা কোন নিয়মে হয়েছে, মুসলমানদের নিয়ম অনুযায়ী না অন্য ধর্ম অনুযায়ী।
আনিছ ঃ মুসলমানদের নিয়ম অনুযায়ী, আর আমার বউ এখন মুসলমান,।
আংকেল ঃ যাও সমস্যা সমাধান হয়ে গেল, এখন তোমাদের ছেলে বউ নাতি নিয়ে বাসায় যাও, আর হ্যা আগামী কিছু দিনের মধ্যেই আমার মেয়ের বিয়ে দিবো তোমরা সবাই কিন্তু আসবে।

তারপর আরকি উনারা চলে গেল,
যাবার আগে আফিফা আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে গেলো।

আমি ঃ আংকেল এখন আমি আসি ।
আরিফা ঃ তুমি একটু আমার রুমে আসো।
আমি ঃ এখন না বাসায় যেতে হবে।
সাইদ ঃ বাসায় কি বউ বাচ্চা রেখে আসছিস, গিয়ে দেখবি বিছানা খালি,।
আংকেল একটু গলা কাশি দিলো।
সাইদ ঃ সরি সরি আমি এখন আসি ।
আমি ঃ ধারা আমিও যাবো একসাথে যাবো।
সাইদ ঃ ভাই বাসায় যেতে হবে রে, আমার আবার একটু কাজ আছে বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আবার আরেক জনের সাথে দেখা করতে হবে,
আমি ঃ ঠিক আছে।
তারপর আমি আরিফার সাথে ওর রুমে গেলাম।
আরিফা দরজা লাগিয়ে দিলো।
আমি ঃ দরজা  বন্ধ করে দিলে কেন।
আরিফা ঃ এমনি যেন কেউ বিরক্ত না করে।
আমি ঃ কি বলতে চাচ্ছ তুমি ।
আরিফা ঃ তোমাকে আজকে নিজের করে নিবো।
আমি ঃ জিনা আপু , বিয়ের পর হবে।
আরিফা ঃ তোর বিয়ের গুলি মারি, আজকেই হবে।
আমি ঃ বিয়ের আগে তুমি কি চাচ্ছ তা তুমি জানো, অপবিত্র হতে চাচ্ছো, আমার পবিত্র ভালবাসা কে অপবিত্র করতে চাচ্ছ।

আরিফা ঃ তাহলে একটা কিস দিতে দাও।
আমি ঃ ঠিক আছে দাও।
ঐ মিয়া আপনারা চোখ বন্ধ করেন।
আমরা এখন একটু ব্যস্ত।
পাঁচ মিনিট পর ছারলো।
তারপর বাসায় এলাম মা বাবা কে সব কিছু বললাম।
মা ঃ এখনি বিয়ের কোনো প্রয়োজন নেই, পড়ালেখা শেষ করে তারপর দেখা যাবে।
বাবা ঃ আমারো একি মত, আগে পড়ালেখা শেষ কর তারপর দেখা যাবে।
আমি ঃ এইটা কোন কথা হলো ।
মা ঃ বাসায় তোর বড় বোন আছে তাকে বিয়ে না দিয়ে তুই নিজেই আগে বিয়ে করতে চাচ্ছিস।
আমি আর মা বাবার উপর কোন কথা বললাম না।
ফোন করে আরিফাকে সব কিছু বললাম
আরিফা ঃ ঠিক আছে, কোন সমস্যা নেই, আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করতে পারবো, আমি বাবা মায়ের সাথে কথা বলছি,

আমি ঃ তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।
তারপর আর কি একটা ঘুম দিলাম সকাল বেলা ঘুম ভাঙলো সাইদের ফোনে।
আমি ঃ কিরে এত সকালে কল দিলি কেন।
সাইদ ঃ ভাই ঝামেলায় পড়ে গেছিরে,, হটাৎ করে বিয়ে করে ফেলেছি।
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম।
আমি ঃ বুঝলাম না আবার বল।
সাইদ ঃ গতকাল বাসায় যাবার পর মা বাবা আমার সাথে কথা না বলে আমার খালাতো বোনের সাথে বিয়ে করিয়ে দিয়েছে,
আমি ঃ কেন, এমন করার তো কোন কারণ নেই।
সাইদ ঃ সব তোর জন্য, তুই যদি আমাকে কিশোরগঞ্জ না পাঠাতি তাহলে আজকে আমার এই সর্বনাশ হতো না।
আমি ঃ তোর খালাতো বোন রাজি হলো কেন।

সাইদ ঃ ভাইরে তিন বছর ধরে প্রেম করছিলাম, কিন্তু মন থেকে করতাম না, কিন্তু আমার খালাতো বোন তা সিরিয়াস হিসেবে নিয়েছে,, দুই দিন কল ধরি নাই, তাই বাসার সব কিছু ভেঙে ফেলছে , আর বিষ খেয়েছিলো।
আমি ঃ তাহলে তো তোর খালাতো বোন, মানে ভাবি তোকে অনেক ভালোবাসে।
সাইদ ঃ এখনি কি বিয়ে করার বয়স হয়েছে রে পাগলা এখনো তো আমি কচি শশা , ।
আমি ঃ বাটপার বিয়ের সময় ফোন দিলি না কেন।
সাইদ ঃ ফোন মা কেরে নিয়ে ছিলো, এর বিয়ে না করে যদি আফিফা কে বিয়ে করতাম তাহলে বেশি ভালো হতো, কিছু মাল পানি পেতাম,,।

আমি ঃ বেঁচে গেছিস, সব গুলো মেয়ে যদি তোর বাসায় আসতো তাহলে একটা মিছিলের মত হতো।
সাইদ ঃ তুই একটু আসবি আমাদের বাসায়।
আমি ঃ ঠিক আছে আসছি,,
তারপর সাইদের বাড়িতে গেলাম,
আমি ঃ কিরে তোর বউ কোথায়।
সাইদ ঃ মায়ের সাথে রান্না করছে।
আমি ঃ বাহ, তাহলে তো নতুন বউয়ের হাতের রান্না খাওয়া যাবে।
সাইদ ঃ আমার জীবনটা কচি ভাব থেকে জুনা নারিকেল হয়ে গেলো রে।
আমি ঃ দোস্ত তোর বউকে ডাক দে দেখি, আমার কাজ আছে।

এমন সময় একটা মেয়ে আসলো।

মেয়ে ঃ আসসালামুয়ালাইকুম কেমন আছেন ভাইয়া।
আমি ঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন।
সাইদ ঃ আমিরুল তোর ভাবি, আর কবিতা এই হলো আমার বন্ধু আমিরুল।
আমি ঃ মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর বিয়ে করেছিস ।
সাইদ ঃ হ্যা আমি ওকে নিয়ে অনেক খুশি, আমার কপাল ভালো তাই ওকে পেয়েছি।
কবিতা ঃ ভাইয়া আপনারা বসুন আমি খাবার আনছি।
আমি ঃ কিরে সাইদ বউয়ের সামনে এত প্রসংশা আর আরালে এমন কথা কারণ কি।
সাঈদ ঃ আবার যদি বিষ খায় তাহলে তো আমার হাসপাতালে যেতে হবে,, তাই সামনে কিছু বলতে পারছিনা, হজম করতেও পারছিনা।

আমি ঃ তুই না ভালবাসতি তাহলে এমন করছিস কেন,, তুই অনেক গুলো রিলেশন করেছিস, কাকে বিয়ে করবি তাদের থেকে, কার মন ভাঙ্বি তাদের মধ্য থেকে তার চেয়ে অনেক ভালো হয়ে যে তোর বাবা মার পছন্দ আর তোর অনেক গুলো জিএফ এর মধ্যে একজন কে পেলি,, মন খারাপ করিস না, খুশি থাক, আমি চলি পরে আবার দেখা হবে।
সাইদ ঃ আমি কি ঠকেছি রে আমিরুল।
আমি ঃ মোটেও না, তুই সবাইকে ভালবাসিস কারো জন্য আজ পর্যন্ত নিজের শরীরের পশম পর্যন্ত ছিরিস নি,, তোর জন্য যেই মেয়ে বিষ খেতে পারে সে তোকে জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসে, তুই অনেক লাকি।
সাইদ ঃ ঠিক বলেছিস, আজ থেকে কোন মেয়ের দিকে তাকাবো না।
আমি ঃ তাহলে এখন আসি।
সাইদ ঃ নাস্তা করে যা ।
আমি ঃ পরে আসবো,,
সাইদ ঃ শোন আগামী দুইদিন পর আমার বিয়ের বউ ভাত তুই আসবি আর আরিফা তোরা দুইজন আমার প্রথম মেহমান,, তোর বাসার সবাই আমি দাওয়াত দিবো কোন চিন্তা করিস না।
আমি ঃ ঠিক আছে কোন সমস্যা নাই এখন আসি ।
তারপর বাসায় চলে আসি, খাওয়া দাওয়া শেষ করে কলেজের দিকে রওনা দিলাম,
তানিশা তো এখন একাই কলেজে যায়, আমি তো টোটো কোম্পানীর ম্যানেজার হয়ে গেছি তাই নিজেকে কলেজে গেলাম।

কলেজে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেছে নাই মিজান নাই সাইদ
কিযে করি ।
এমন সময় Rabbani Hossain Ridoy আসলো
আমার এক ক্লাস জুনিয়র
রব্বানী হোসাইন ঃ আমিরুল ভাই একটা সমস্যায় পড়েছি।
আমি ঃ কি সমস্যা ।
রব্বানী হোসাইন ঃ আমি আপনার এক ক্লাস জুনিয়র এই কলেজে পড়াশোনা করি আমার বাড়ি জালাল তাইড় ।
আমি ঃ এইটা আবার কোন গ্রহের নাম ।
রাব্বানী হোসাইন ঃ এইটা আমার গ্রামের নাম , পোস্ট অফিস মহিমাগন্জ ,ইউনিয়নের নাম কামালের পাড়া ,
উপজেলা সাঘাটা, জেলার নাম গাইবান্ধা।
আমি ঃ বুঝতে পারছি , তার মানে তোমার জেলা উত্তর অঞ্চলে।
রাব্বানী হোসাইন ঃ জি ভাই ।
আমি ঃ আমার কাছে কি চাও।
রাব্বানী হোসাইন ঃ ভাই আমার এক বন্ধু হাসপাতালে ভর্তি এখন আপনার বাইকটা একটু দরকার, আপনি যদি আমাকে নিয়ে যেতেন বা আপনার বাইক দিতেন,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,

SHARE THIS

Author:

0 Comments:

আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।