অনেক দিন পর বন্ধুদের কাছে পেয়ে সব কিছু ভুলে গিয়াছিলাম, আসিক ফোন না দিলে তো মনে পরতো না যে আজ আমি বগুড়া যাব।
.
আমি ফিরে এসে দেখি আসিক আর নিলা রেডি হয়ে আছে।
- ভাইয়া এতক্ষন কোথায় ছিলে?? (নিলা)
- পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা করতে।
- তা সেই কখন গেছ আর এখন এলে।
- সরি আপু, আর হবে না।
- ওকে ওকে, রেডি হয়ে নাও।
- ওকে।
আমি রেডি হয়ে নিলাম। বাসায় নিচে এসে দেখি আসিক গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। আমি গাড়িতে উঠার আগে....
.
- আসিক একটা অনুরোধ করবো রাখবি।
- কি?
- আমার পরিচয়টা যেন কেউ না জানে।
- সবাই যদি তোকে চিনতে পারে।
- কেউ পারবে না। শুধু তুই কাউকে বলিস না।
- ওকে যা বলবো না।
আমরা বেরিয়ে পড়লাম বগুড়ার উদেশ্য। অনেক সময় পর এসে পৌছালাম। গাড়িটা এসে
আমার বাসার সামনে থামলো। এখানে আমরা থাকতাম আর এর পাশের বাসায় আমার
চাচারা। আমি গাড়ির ভিতরে বসে আছি আর আসিক গিয়েছে বাসায় ভিতরে। কিছুক্ষন
পরে আসিক এল।
.
- ইয়াছিন, তোর পরিবারের কেউ বাসায় নেই।
- তাহলে সবাই কোথায়??
- দারওয়ান বলল, সবাই নাকি একটা বিয়েতে গিয়েছে।
- তাহলে....
- আরে গ্রামে চল, আমার বোনের বিয়ের পর আসিস। আর তখন যদি গ্রামে যায় তাহলে সেখানে সবাই কে দেখতে পারবি।
- তাহলে চল।
প্রায় ২ ঘন্টা পরে গ্রামে এসে পৌছালাম। গ্রামে রাস্তায় যখন প্রবেশ করলাম
তখন মনে হল এই মাটি বলছে কেউ ফিরে এসেছে। যার সাথে আমার অনেক দিনের
সম্পর্ক। গ্রামে পৌছাতে সন্ধ্যায় হয়ে গেছে। আর আকাশে যে গোধুলি ছেয়ে
গেছে এটা আমার চেনা। এখানকার ধুলো-বালির সাথে আমার খুব পুরোনো সম্পর্ক।
কিন্তুএই মাটিতে ৮ টা বছর পায়ের দুলো পড়ে নি। এখনকার বাতাসে আমার কন্ঠ
শুনায়া নি। গাড়িটা বাড়ির বাইরে থামলো। বাড়ির ভিতর থেকে আসিকের মা আর
বোন বেরিয়ে আসল।
- আসিক এসে পড়েছিস তোরা। (আসিকের মা)
- হ্যা, মা।
- ভাইয়া তোর সাথে এই ছেলেটা কে?? (আসিকের বোন প্রিয়া)
- আমরা বন্ধু।
- কোন দিন তো দেখি নি। (প্রিয়া)
- ও এতদিন দেশের বাইরে ছিল। ২ দিন হলো ফিরেছে। তাই সাথে করে তোর বিয়েতে নিয়ে এলাম।
- ভালো করেছিস। তা তোর বন্ধুর নাম কি?? (আসিকের মা)
- আরফান (আমি)
- তোমার বাড়িতে কে কে আছে?? (আসিকের মা)
- আরে মা, এত জার্নি করে এসেছি। আর তুমি প্রশ্ন করা শুরু করেছো। (আসিক)
- ও ভিতরে আয়।
.
আসিকদের বাড়ির ভিতরে গেলাম। বাড়িটা বদলে গেছে। যখন আমরা একসাথে পড়েছি
তখন অনেক এসেছি। আন্টি আমাকে চিনতে পারিনি। তাহলে এইটুকু বুজতে পারলাম কেউ
আমাকে চিনতে পারবে না। আমাকে ঘুমানোর জন্য একটা রুম দেওয়া হলো। বাড়িতে
এখনো মেহমান আসেনি। শুনলাম কাল থেকে আসা শুরু হবে। পরশু বিয়ে। তাই খুব তোর
জোর ভাবে বিয়ের কাজ চলছে। আমি রুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখি কয়েকজন উঠনে
বসে গল্প করছে। সাথে আসিকও আছে। আমাকে দেখে আসিক ডাক দিল। আমি সেখানে
গেলাম।
- সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। এই হলো আমার বন্ধু আরফান। (যেটা নকল নাম)
- দুলাভাই আগে কখনও তো দেখি নি। (ওখানে থাকা একটা মেয়ে)
- জান্নাতি, ও এতদিন দেশের বাইরে ছিল তাই দেখনি।
আসিক বাকিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। জান্নাতি নামের মেয়েটি নিলার ছোট
বোন। সবে মাত্র অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ে। আমি ওখানে বসে ওদের কথা শুনছিলাম।
- দুলাভাই তোমার বন্ধু বোবা নাকি, কতক্ষন এখানে এসেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন শব্দ শুনতে পারিনি। (জান্নাতি)
মেয়েটার কথা শুনে রাগ হল। তাই বললাম...
- আমি প্রয়োজন ছাড়া কথা বলি না।
আমি উঠে ওইখান থেকে চলে এলাম।
- দুলাভাই তোমার বন্ধুর মধ্যে এত এটেটিউড কেন। (জান্নাতি)
- ও এই রকমি। তুমি কিন্তু ভুল করেও ওর পিছে লাগবে না। ( আসিক)
- আমি তো লাগবোই। তোমার বন্ধুর এই এটেটিউড যদি ভাঙ্গতে না পারি তাহলে আমার নাম জান্নাতি নয়।
- ও কিন্তু অনেক রাগি।
- সেটা পরে দেখা যাবে।
- আমি কিন্তু তোমার বোনকে বলে দিবো।
- বল আমি ভয় পায় নাকি।
এটা বলে জান্নাতিও ওইখান থেকে চলে এল। আসিক ভাবছে জান্নাতি যা জেদি ও তো
করেই ছাড়বে। কিন্তু ইয়াছিন তো কম জেদি নয়। এখন কি হবে উপরআলায় জানে।
জান্নাতি রুমে গিয়ে রাগে গজগজ করছে। আর বলছে, আমার সাথে কথা বলার জন্য কত
ছেলে ওয়েট করে থাকে আর এ কি যেন নাম আরফান। আমাকে ইগনোর করে। আমি একে
দেখিয়ে দিবো জান্নাতিকে ইগনোর করার শাস্তি। তখন নিলা রুমে ঢুকলো। জান্নাতিকে দেখে কি যেন বিড়বিড় করছে।
- কি করে একা একা কি বলছিস?? (নিলা)
- (চমকে গিয়ে) ও তুই। (জান্নাতি)
- এতক্ষন কি বলছিলিস।
- এই ছেলেটা কত বড় সাহস আমাকে ইগনোর করে। আমি এর শাস্তি দেবই।
- কার কথা বলছিস??
- তোর বরের বন্ধুর কথা।
- এই তুই কিন্তু ভাইয়ার পিছনে লাগবি না।
- ওই ছেলে তোর ভাইয়া হলো কবে?
- ভাইয়া বলে আমি না কি উনার ছোট বোনের মত তাই আমাকে ভাইয়া ডাকতে বলেছে। তুই ও ভাইয়া ডাকবি।
- তুই ডাকিস বলে আমাকেও ডাকতে হবে নাকি।
তখন রুমে প্রিয়া ঢুকলো।
- ওকে বলে লাভ নেই ভাবি। ও মনে হয় আরফান ভাইয়ার প্রেমে পড়ে গেছে। তাই ইগনোর করেছে বলে এত রাগ দেখাচ্ছে। (প্রিয়া)
- এই সব কিছু না। (জান্নাতি)
- দাড়া তোকে বুঝাচ্ছি।
প্রিয়া দৌড়ে রুমে থেকে বেরিয়ে গেল। তার পিছে জান্নাতিও। আসলে জান্নাতি আর
প্রিয়া বন্ধবি। ওদের মধ্যমেই নিলা আর আসিকের পরিচয় হয় তার পর
বিয়ে।
........... To Be Continue
0 Comments:
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।