আপুর বান্ধবী যখন বউ - পর্ব (১)

আপু ঃ ঐ তোর সমস্যা কি, তুই আমার বন্ধুদের সাথে ঝগড়া করিস কেন, বাসাটা কি তোর একার নাকি, আরেকদিন উল্টাপাল্টা কথা বললে তোর খবর আছে
আমি ঃ তোর বন্ধুদের তোর রুমে থাকতে বলবি আমার রুমের সামনে দিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে কেন, আরেকদিন যদি তোর বান্ধবীরা আমার ফুল গাছের ফুল ছিরে তাহলে তোর বান্ধবীদের চুল ছিরবো, না হয় তোর চুল ছিরব।

আপু ঃ কি তোর এতবড় সাহস তুই আমার চুল ছিরবি দারা দেখাচ্ছি মজা।
আমি ঃ কি করবি, তোর কোন কিছু এখন কাজ করবে না।







আপু নিজের হাতে চুল গুলো এলোমেলো করে চিৎকার দিতে শুরু করলো,,
পাসের রুম থেকে আম্মু এলো।

আম্মু ঃ কী হয়েছে কাঁদছিস কেন।
আপু ঃ তোমার ছেলে আমাকে মারছে ।
আমি ঃ মিথ্যা কথা আমি মারিনি, আম্মু আপু নিজের হাতে চুল এলোমেলো করে আমার উপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

আম্মু ঃ ঐ তুই কোন দিন মানুষ হবি, তোর বড় বোন কে তুই মারিস,, আজকে তোর খাবার বন্ধ।
আমি ঃ খাবো না যাও, আমার কথা সত্য, অথচ আমার কথা বিশ্বাস করো না।
মা ঃ তোর আজকে খাবার বন্ধ , আমার এখন কাজ আছে আমি কিচেনে গেলাম, তানিশা তুই আমার সাথে রান্না ঘরে চল।
আমি ঃ যাও কোন ব্যাপার না।

আপনারা তো কিছুই বুঝতে পারছেন না মনে হয়,
আমি আমিরুল বাবা মায়ের আদরের সন্তান, নাকি সাসনের সন্তান তাই বুঝিনা,
আপুর নাম তানিশা, সব কিছু দখল করে আছে, বাবা ব্যবসা করে, সংসারের মাথা হলো মা,,
মায়ের কথাই শেষ কথা, বাবা নাকি মাকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলো বাকিটা ইতিহাস।

বাসা থেকে বের হয়ে বন্ধুদের নিয়ে আডডা দিচ্ছি,
আমার কয়েকটা বন্ধু আছে, বন্ধু বললে ভুল হবে এরা সব গুলো একেকটা কলিজার টুকরা

মিজান ঃ কিরে মামা কি হয়ছে মন খারাপ নাকি।
আমি ঃ দূর এইটা কোন জীবন হলো নাকি, কলেজে শাসন বাসায় শাসন সব যায়গায় মহিলা আর মহিলা,,
এই জীবন আর রেখে লাভ কি।
সাইদ ঃ হরে আর বাঁচতে চাইনা আমার সব গুলো গার্লফ্রেন্ড গুলো মেয়ে ।
মিজান ঃ আমার গার্লফ্রেন্ড গুলোও মেয়ে।
আমি ঃ বালের কথা বাদদে,, আমার সাথে মজা করিস নাকি, হালারা ফকিন্নি কোন হানের,, তোরা কি ছেলেদের সাথে প্রেম করতে চাস নাকি,,।

মিজান ঃ হুন তোর বালের কথা বাদদে, আজকে মহিলাদের উপর রাগ করছিস কেন সেটা বল।

আমি সবটা খুলে বললাম।


মিজান ঃ আবে আমি আজকে কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারবো না, আজকে আমার অবস্থাও একি রকম, বাসায় কে যেন বলে দিছে, আমি মামার মেয়ের সাথে প্রেম করি, মা অনেক খেপে আছে,।
আমি ঃ সাইদ পেটে টানপরছে কিছু খেতে হবে।
সাইদ ঃ আমি বেঁচে থাকতে তুই না খেয়ে থাকবি না, দারা আমি তোর জন্য খাবা আনছি।

পাঁচ মিনিট পর এক ক্লাস পানি এনে বলে এইটা খা গলাটা ভিজিয়ে নে।

আমি ঃ এইটা কি ?
সাইদ ঃ এইটা বিশুদ্ধ পানি ,, খাইলে শরীরে একটু জোর পাবি
আমি ঃ সাইদদা বেশি রকম হয়া যাইতাছে কয়লাম।
মিজান ঃ আমি জানতাম এমন কিছু হবে , সাইস খাওয়াবে তরে, ওর চৌদ্দ গুষ্টি কিপটুস।
আমি ঃ তোরা থাক আমি গেলাম,
মিজান ঃ চল দোকানে গিয়ে খেয়ে আসি।।
আমি ঃ চল।


তারপর তিনজন মিলে খাওয়া দাওয়া করলাম, চা রুটি কলা কেক।

আমি ঃ আমার ফোনে টাকা নাই সাইদ তোর ফোনটা একটু দে,
সাইদ ঃ কি করবি, বেশি টাকা নাই এক মিনিটের মধ্যেই শেষ করবি।
আমি ঃ আরে বেটাদে, তুই চাইলেই দিয়ে দিবো।


তারপর মোবাইলটা দোকানদার কে দিয়ে বললাম,
এই নেন মোবাইল যখন এই খাবারের বিল দিতে পারবে, তখন মোবাইল দিয়ে দিবেন।

সাইদ ঃ আমিরুল কাজটা ঠিক করলি না ।
মিজান ঃ আবে শালা,, খুদা লাগছে খাইছি, এখন আমাদের দুজনের জন্য নিজের এই সামান্য মোবাইলটা বন্ধক দিতে পারবি না।
আমি ঃ সাইদ আজ থেকে তুই বন্ধুদের জন্য উদাহারণ হয়ে থাকলিরে পাগলা, আমরা জানি তুই তোর বন্ধুদের জন্য নিজের কিডনি পর্যন্ত বিক্রি করতে পারবিরে পাগলা
সাইদ ঃ বালের কথা পরে বলিস এহন আমার মোবাইল দে,
আমি ঃ তর মোবাইল তো তুই চাইলেই দোকানদার দিয়ে দিবে।


এমন সময় একটা মেয়ে দোকানে এসে বলে মামা একটা আইসক্রিম দেন।


মিজান ঃ আমিরুল তুই গরম হয়ে গেছিস ডান্ডা একটা আইসক্রিম খা।
আমি ঃ আবে আইসক্রিম আমি খাইনা, আইসক্রিম খায় ফকিন্নির গার্লফ্রেন্ড ।
মেয়েটা ঃ এই তোদের সমস্যা কিরে,
আমি ঃ ঐ ফকিন্নি তুই তুই করে বলিস কারে।
মেয়েটা ঃ কানের নিচে একটা দিবো দুই ঘন্টা হা করে দাঁড়িয়ে থাকবি।
আমি ঃ আবে সালী তোর এত বড় সাহস তুই আমারে থাপ্পড় দিবি, তার আগেই লাত্থি মাইরা বাত্তি নিবায়া দিমু।
মেয়েটা ঃ ঐ ছেমরা তোর সমস্যা কিরে, আরেকবার উল্টা পাল্টা কিছু বললে চিৎকার দিবো বলে দিলাম।

তারপর মেয়েটা চলে গেল,।

এভাবে ঘু্যাফেরা করে রাতে বাসায় গেলাম,।

মা ঃ সারাদিন কয় ছিলি?
আমি ঃ জাহান্নামে।

গিয়ে দরজা বন্ধ করে লাইট অফ করে ঘুমিয়ে আছি।

১০ টার দিকে মা ডাকছে খাবার জন্য।

আমি ঃ খাবো না, তুমি খাও আর তোমার মেয়েকে খাওয়াও।
মা ঃ এখন খেলে খা, না খেলে সারারাত না খেয়ে থাকতে হবে।
আমি ঃ আসতাছি।

তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে ছাদে গেলাম।

ছাদে গিয়ে দেখি আপু দাড়িয়ে আছে ইচ্ছা করছে কয়েকটা দেয়।
তাই গিয়ে পিছন থেকে একটা থাপ্পর দিয়ে বললাম কিরে ছাদে কি করিস।
আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলছে কোন শালারে ।


আমি ঃ একটা চিৎকার দিলাম।

মেয়েটাও একটা চিৎকার দিলো।

মেয়েটা ঃ ঐ শালা তুই আমাকে ফলো করতে করতে আমার বাসায় চলে আসছিস।
আমি ঃ লৌও ঠেলা, আমার পিছনে পিছনে ফলো করে আমার বাসায় চলে আসছিস, আর আমাকে বলছিস আমি তোর মত ছেসরীকে ফলো করিনা, যা ভাগ।

এমন সময় আপু ছাদে আসসে।

আপু ঃ কিরে কি হয়ছে।

মেয়েটা ঃ দেখতো সেই কখন থেকে ছেলেটা আমাকে ফলো করছে।
আমি ঃ ঐ ফকিন্নি মুখে লাগামদে, আমি তরে ফলো করবো কেন, তুই আমাকে ফলো করছিস
আপু ঃ তোরা থামতো, তোরা কেউ কাউকে ফলো করিসনি।
মেয়েটা ঃ দেখ তানিশা এই ছেলেটার কথা গুলো সুবিধার লাগছে না।
আপু ঃ আরিফা এইটা আমার ছোট ভাই আমিরুল, আর আমিরুল এই আমার বান্ধবী আরিফা, আরিফা আজ থেকে আগামী একমাস এখানে থাকবে।



আমি ঃ এক তর জ্বালায় বাসা থেকে বাহিরে থাকতে হয় আর নতুন একটা আনছিস, আমার সাথে না পেরে এখন আমার পিছনে বান্ধবীকে লাগিয়ে দিয়েছিস।

আরিফা ঃ এইটা তোর ভাই দুনিয়ার বদমাইশ, রাস্তায় আমার সাথে ঝগড়া করছে।

আমি ঃ ঐ একদম চুপ।

আরিফা ঃ কেন জানুক তুই কেমন ভালো ছেলে পরিবারের জানা দরকার।

আমি ঃ আরেকটা কথা বললে কিস করে দিবো বললাম।

তানিশা ঃ ঐ কুত্তা তোর মুখে থুথু দিবো বলে দিলাম।

আমি ঃ পারলে ঠেকাইস।


তারপর চলে আসলাম আমি আমার রুমে চলে আসলাম আর ওরা ওদের রুমে

রুমের ভিতরে গিয়ে তানিশা আপু আর আরিফা আপু কথা বলছে


আরিফা ঃ তোর ভাই এত খারাপ কেন রে।

আপু ঃ ঐ তুই আমার ভাইরে খারাপ বলছিস কেন।

আরিফা ঃ দেখলিনা কেমন করে কথা বললো।

আপু ঃ সকাল থেকে আমার উপর রাগ করে আছে, মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সারাদিন না খাইয়ে রাখছি, তাই আমার রাগ তোর উপর জারছে,,, আমার উপর ততটুকু পাইছে দিছে। আরিফা ঃ তোর ভাই কি সব সময় তোর সাথে এমন করে নাকি।

আপু ঃ সব সময় না যখন আমি খুচা দেয় তখন এমন করে‌ আরিফা ঃ বাহ বেশ ভালো তো, ইস যদি আমার একটা ভাই থাকতো, দূর তোদের ঝগড়া থেকে আমারো ঝগড়া করতে মন চাইছে আগামীকাল আমি তোর ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করবো।

আপু ঃ ঝগড়া করার দরকার নাই, ঝগড়া করলে সারাদিন না খেয়ে থাকে।

আরিফা ঃ ও, ঠিক আছে তাহলে করলাম না, অনেক কিছু মিস করলাম রে।

আপু ঃ আচ্চা তোর বাবা মা কতদিন দেশের বাহিরে থাকবে,।


আরিফা ঃ আগামী একমাস, আমাকেও সংগে যেতে বলেছিল তবে আমার কাছে ভালো লাগেনি,, তাই যায়নি, এই একমাস তোর সাথে থাকবো।

আপু ঃ ঠিক আছে কোন সমস্যা নাই, তোর যতদিন মন চায় থাক, তবে আমিরুলের কথায় কিছু মনে করিস না,

আর হ্যা এখন থেকে আমিরুলের সামনে তোকে কেউ কিছু বলতে পারবে না, এইটা আমি গ্যারান্টি দিতে পারি, আমিরুল যার সাথে ঝগড়া করে সে হয় আমিরুলের বন্ধু না হয় চরম শত্রু।

আরিফা ঃ বেশ মজার তো, আচ্চা এখন ঘুমা। চলবে....




গল্পটির পরবর্তী পর্ব পেতে গল্পটি নিচের শেয়ার অপশন থেকে অথবা লিংক কপি করে ফেসেবুকে শেয়ার করুন ........

SHARE THIS

Author:

0 Comments:

আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।