সাপের সাথে সহবাস - পর্ব (১৯)

নিশাত ছবি আকছিলো। সে এক অদ্ভুত ছবি একে ফেলে। সেটা সে বইয়ের ভিতরে রেখে দেয়। রেনেসা ম্যাডাম প্রতিবারের মত ক্লাস নিতে আসলেন।রেনেসা ম্যাডামকে আজ সত্যি অনেক সুন্দর লাগছে। আজকে নতুন একটা শাড়ীর সাথে কাচের কিছু গহনা। ক্লাস শেষে ছুটির ঘন্টা বেজে গেলো। পিছন থেকে নিশাতের গলা চেপে ধরলো বাবলু আর মিন্টু। কিরে খুব তো ম্যাডামের প্রিয় হয়ছিস, আমাদের কি ভয় লাগেনা। বাবলু মিন্টুরা ক্লাসের সবথেকে দুস্টু বাচ্চা, এরা নিজেরা লেখাপড়া করেনা, ভালো পারলে তাকে ক্লাস ছুটির পর মার ধরে করে, কান ধরে উঠবস করায়। কেউ ওদের নামে কিছু বলতে পারেনা কারন ওরা প্রিন্সিপালের ছেলে। আকাশ নিশাতের পাশের বেঞ্চে বসতো। আকাশ নিশাতের সাথে বন্ধুত্ব করলো। দুই বন্ধুর অনেক মিল হতে থাকলো আসতে আসতে। 


 



হঠাৎ একদিন ক্লাসে সার ম্যাডাম গুনগুন করে কি সেই বলা কওয়া করছে। নিশাত ক্লাসে ঢুকতেই সবাই চুপচাপ। আকাশকে বললো কি হয়েছে সবাই এতো চুপচাপ কেন? আকাশ বললো কাল আমাদের অপর কক্ষের একটা ছেলেকে কে যেনো মাথা কেটে নিয়ে গেছে। কি সাংঘাতিক খবর। নিশাত বললো আচ্ছা কে নিয়ে গেছে??? তুই কি কিছু জানিস বললো: না.. না.. না.. না আমি কি করে জানবো। মনে হচ্ছে আকাশ ভয় পেয়ে আছে। ক্লাস ছুটির পরে আকাশকে নিশাত ডেকে বললো আকাশ এখানে দাড়া। তুই কি সত্যি করে বলবি তুই এমন ভয় পেয়ে আছিস কেন? না না না না কিচ্ছু না আমি বাড়ি যাবো। আমি কিছু জানি না। নিশাত বুঝতে পারছে কিছু একটা দেখেছে আকাশ। পরের দিন আবারো ক্লাসে একি অবস্থা। আবারো আরো একজনের মাথা কেটে নিয়ে গেছে কে যেনো খুব বিশ্রিভাবে। বিষয়টা নন্দিনীকে জানালো সব। নন্দিনী বললো এইভাবে সব বাচ্চাদের মাথা কেন কাটছে? আর কে কাটছে?? নিশাত আকাশের বেপারে জানালো, আকাশ কিছু একটা লুকাচ্ছে।নন্দিনী আর নিশাত আকাশের বাড়িতে গেলো। রিতীমত অবাক। আরে মিসেস রেনেসা আপনি এখানে....... এই তো এটা আমাদের বাসা। আমরা আকাশদের বাসার নিচ তলায় ভাড়াই থাকি।তা আপনারা কি মনে করে...... ও আসলে আকাশের কাল জন্মদিনতো তাই আকাশের বাবা মাকে দাওয়াত দিতে এলাম।ভালোই হলো আপনিও কাল উপস্হিত থাকবেন। অবশ্যই আসবেন কিন্তু।আকাশের বাসায় গেলো তার বাবা মাকে ইনভাইট শেষে চলে আসলো আকাশ একটা অস্বস্তিকর ভাব বোধ করছিলো। ও বাসায় এসে বললো আচ্ছা মা রেনেসা ম্যাডামকে তোমার অন্যরকম লাগছিলো না... বললো কই নাতো???
পরের দিন নিশাতের জন্মদিন হলো খুব ধুমধামে।সব বন্ধুরা মিলে আকাশের ব্রার্থডে এনজয় করলো সবশেষে যে যার বাড়িতে রওনা দিলো। সকালে সেই একি ঘটনা ক্লাসে শুনতে হলো... এই নিয়ে ৩ টা ছেলে মারা গেলো একইভাবে।পুলিশ গোয়েন্দা এসেছে ইনভেস্টমেন্টের জন্য। পুলিশ:::আচ্ছা এটা কি এর আগে কখনো হয়েছে। তিশা ম্যাডাম একটু বয়স্ক, ওনি উত্তরে বললো না না অফিসার আমি এই স্কুলে শুরু থেকে আছি।এরকম কোনদিন ঘটেনি এমন। তবে আপনাদের কি কারো উপর সন্দেহ হয়। না সেরকম তো দেখছি বলে মনে হয়না উত্তরে প্রিন্সিপার্ল সার। পুলিশ রেনেসা ম্যাডামের কাছে গিয়ে বললো ম্যাডাম আপনি যদি এই বেপারে কিছু বলতেন। রেনেসা ম্যাডাম বললো দেখুন অফিসার এটা অন্য কারো কাজ আমাদের স্কুলের বাচ্চা ঠিকি তবে এটা রাত ১২ টার পরে মেরে ফেলে এটার সাথে আমাদের স্কুলের কারো সাথে কোন সম্পর্ক নেই। নিশাত অবাক রাত ১২ টার পরে মানে......... গোয়েন্দা নিতাই বাবু বলো আচ্ছা রাত ১২ টার পরে এটা আপনি কিভাবে জানলেন..... না মানে মানে হচ্ছে পুলিশ তো ডেড বডি আইডিকোয়ালিফাই করে বলেছে প্রতিটা বডি ১২ ঘন্টা আগে মৃত্যু হয়েছে। ও ধন্যবাদ ম্যাম। আমরা এবার আসি, প্রয়োজনে আবার আসবো। আপনাদের সময় নস্ট করার জন্য দুঃখিত। তিশা ম্যাডাম না না তা কেন?? আপনাদের সাহায্যের খুব প্রয়োজন আমাদের।এভাবে চলতে থাকলে আমাদের স্কুলের একটা বদনাম হবে। তিন তিনটা বাচ্চার বডি কুমাতলা স্কুলের। কিছু করেন অফিসার আপনারা। বাইরে থেকে অনেক আওয়াজ আসছে অনেক ভিন্ন ভিন্ন কন্ঠের।পুলিশ,টিচাররা সব বেরোতেই অভিবাবকরা সব বলছে আমরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাবোনা। আমাদের সন্তান নিরাপদ না।পুলিশ অফিসার সাহেব বললো আপনারা থামুন প্লিজ। বিষয়টা আমরা তদন্ত করে দেখছি। খুব শিঘ্রই জানা যাবে খুনি কে। আপনারা প্লিজ শান্ত হোন। যার যার বাসায় ফিরে যান।
পুলিশ আর গোয়েন্দা মিলে সব রকম প্রমান নিলো সিসি ফুটেজ। কোন কিছুই পেলো না। আকাশও দুইদিন স্কুলে আসে না। বাসায় গিয়ে পুরোটা নন্দিনীকে বললো। নন্দিনী নিশাতকে বললো তুমি কি বুঝতে পারছো কিছু। নিশাত বললো দেখছি মা। আকাশকে ধরলে সব বেরিয়ে আসবে। আকাশের বাড়ির দিকে নন্দিনী আর নিশাত রওনা দিলো। নিচের বাসায় রেনেসা ম্যাডাম।জানালা দিয়ে চোখ পড়লো নিশাতের। ম্যাডাম ঘুমোচ্ছে। ওরা সোজা আকাশের বিল্ডিং এ কলিং বেল বাজালো। প্রায় পাচ মিনিট বাজানোর পর দরজা খুললো আকাশের বাবা। নিশাত বললো আঙ্কেল আকাশ কোথায়,ওকে স্কুলে দেখছিনা কেন? সবাই যেনো গুটিসুটি ভয়ে আছে।আকাশ বললঁ কিরে কেমন আছিস। আমি একটু অসুস্থ্য ছিলাম। বস আয়। নিশাত অবাক যে আকাশের ভিতরে আচমকা ভয় ছিলো সে এতো সহজভাবে কথা বলছে কিভাবে বেশ অবাক লাগলো। ওরা বাড়ী ফিরে আসলো পথিমধ্যে গোয়েন্দা নিতাই বাবু ওই রাস্তা দিয়েই আকাশদের বাড়িতে যাচ্ছিলো।নিতাই বাবু বেশ সুন্দর গঠনের বুদ্ধি যেমন তার চেহারাটাও সুগঠনের। আরে আরে তোমার যেনো কি নাম নিশাত স্যার ও আমার একমাত্র ছেলে। আকাশ দুইদিন স্কুলে আসেনি তাই খোজ নিতে গিয়েছিলাম ও আচ্ছা কিন্তু রাতে বের হবেননা প্লিজ দিনকাল খারাপ দেখছেন তো ৩ টা বাচ্চার বডি পাওয়া গেছে। জ্বী স্যার সবি শুনেছি। বেশ কষ্টের আর ভয়ঙ্কর।


চলবে...


SHARE THIS

Author:

0 Comments:

আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।