যেমন কর্ম তেমন ফল


রাজিবের সাথে আমার পরিচয় ফেসবুকেই। সে আমার ফ্রেন্ড মৌমিতাকে রাত দেড়টায় সময় মেসেজ দিছে, 'সেন্ড মি ন্যুডস।' আমার উচিত ছিলো রাজিবকে জাস্ট বাসায় গিয়ে মেরে আসা। অথবা তথ্যপ্রযুক্তি আইনে অন্তত একটা কেস করে দেয়া৷ ন্যুনতম স্ক্রিনশট নিয়ে রাজিবের বিরুদ্ধে একটা পোস্ট দেয়া তো অবশ্যই উচিত ছিলো। কিন্তু তার বদলে রাজিব আমার মোটামুটি বেস্টফ্রেন্ড হয়ে গেছে। এর কারণটা খুবই সিম্পল। রাজিব মৌমিতাকে যে মেসেজ রাত দেড়টার সময় দিছে, সেম মেসেজ আমি মৌমিতাকে দিছি ঐদিনই রাত সাড়ে বারোটায়। মৌমিতা আমাদের দুজনকেই ব্লক করে দিছে। যেহেতু আমি আর রাজিব সেম মেয়ের কাছে ন্যুড চাইছি, সেহেতু আমরা আসলে একে অন্যের ন্যুডতুতো ভাই। অথবা একই মেয়ের কাছে ব্লক খাওয়ার সুবাদে আমি আর রাজিব একে অপরের ব্লকতুতো ভাইও হই।

রাজিব আর আমি বেস্টফ্রেন্ড হয়ে যাওয়ার পর আসল কাহিনী শুরু। রাজিবের ছিলো বুদ্ধি, আমার ছিলো সাহস। আমরা ফেসবুকে শুরু করলাম মিশন ন্যুডস। মেয়েদের কাছে ন্যুডস চাওয়ার এতো এতো তরিকা আমি আর রাজিব মিলে বের করেছিলাম যে, সবগুলো একজায়গা করে একটা বেস্টসেলার বই বের করে ফেলা যেত বইমেলায়। বইএর নাম হতো, 'সহীহ ন্যুডস আহবান' অথবা 'ন্যুডস চাওয়ার একশো উপায়।'

যেসব মেয়ের ফেসবুক সম্পর্কে ধারণা কম ছিলো তাদের আমরা বিশাল এক মেসেজ দিতাম। মেসেজটা ছিলো এরকম, 'হ্যালো সম্মানিত ফেসবুক ইউজার। ফেসবুকের ফাউন্ডার এবং সিইও মার্ক জাকারবার্গ সম্প্রতি রিয়েল আইডিগুলো সনাক্ত করার উদ্দেশ্যে একটা অভিনব পন্থা অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ তিনি ঘোষণা করেছেন মানুষের শুধু ওপরটা দেখে সিদ্ধান্ত না নিয়ে ভেতরটাও দেখবেন। সেজন্য এই মেসেজ বিশ্বের ২৪৪ টি ভাষায় অনুবাদ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং নির্দেশ দিয়েছেন মেসেজটা পাওয়ার সাথে আপনার একটা কাপড় ছাড়া ন্যুড ছবি দ্রুত মেসেজের রিপ্লাইতে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য৷ (মুখ, বুক থেকে পেট পর্যন্ত একসাথে) ছবি পাঠানোর মাত্র পঁনেরো মিনিটের মধ্যে সেটা যাচাই বাছাই করে আপনার আইডিটা সারাজীবনের জন্য ভেরিফাইড আইডি হিসাবে ফেসবুক এন্ট্রি করে রাখবে। ফেসবুক নিশ্চিত করছে আপনার ছবির শতভাগ গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে। মেসেজটি ৬৯ জনকে ফরোয়ার্ড করুন এবং অপরপক্ষ ন্যুডটি পাঠানোর সাথে সাথে একবার দেখেই ডিলিট করে দিন। ধন্যবাদ।'

কোনো মেয়ে কবিতাপ্রেমি হলে আমরা কবিতার মাধ্যমে ন্যুড চাইতাম।
.
"করুণা করে হলেও ন্যুড দিও, ফ্লাশ মেরে তুলে দিও
শরীরের মিহিন গঠন।
ভুল ফোকাসে তুলো ছবি, বাজে হলে পাঠিয়ে ফেলো তাও,
এটুকু সামান্য দাবি ন্যুড দিও, তোমার বালিশের মতো তুলতুলে ঝকঝকে একখানি ন্যুড।"

মেয়ে রবীন্দ্রনাথ ফ্যান হলে লিখতাম, 'আধো রাতে যদি ঘুম না আসে, মনে পড়ে মোরে প্রিয়।
এক্টিভ হয়ে রবো অনলাইনে, মেসেঞ্জারে ন্যুড দিও।'

নজরুলের ক্ষেত্রে,

দাও ন্যুড,
দাও, হইয়োনা আজ রুড,
ন্যুড তোমারি সেন্ড মি প্লিজ,
উই জাস্ট ফ্রেন্ড, ড্যুড!

আর জীবননান্দ পছন্দ হলে সেক্ষেত্রে-

সুরঞ্জনা, ওইখানে যেয়ো নাকো তুমি,
দিওনাকো ন্যুড ওই যুবকের ফোনে;
এদিকে এসো সুরঞ্জনা:
এইখানে ন্যুড দাও নক্ষত্রের আগুন ভরা রাতে।

তবে খুব সম্ভবত আমাদের সবচাইতে মাহাত্ম্যপূর্ণ আবিস্কার ছিলো ইমোশনাল ব্লাকমেইল। মনটন নরম দেখে আমরা কোনো মেয়েকে বেছে নিয়ে মেসেজ দিতাম, 'হাই।'
অল্প একটু কথাবার্তা আগানোর পর মেয়ে যখন কেমন আছি জানতে চাইতো তখন স্যাড ইমোজি দিয়ে বলতাম, 'ভালো না। মনটা খুব খারাপ। নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে মরে যাই।'
মেয়ে জানতে চাইতো, 'কেন?'
তখন বলতাম, 'আমার পরিচিত এক ছেলে অনেক বড়লোক। বাপের কোটি কোটি টাকা। দামী গাড়িতে চলে, ব্রান্ডের ড্রেস পরে সবসময়।'
- তো?
- তো আর কি। সেই ছেলে প্রতিদিন ফেসবুকে কত কত মেয়েদের থেকে ন্যুড নেয়। অথচ!
- অথচ।
- এই যে আমার কথা ধরো। দামী গাড়ি নেই, বাড়ি নেই, ভালো ড্রেস নেই, আব্বুর অল্প টাকা বেতনের সাথে নিজের টিউশনির সামান্য কটা টাকা যোগ করে একই শার্ট বারবার পরে, রিক্সাভাড়া বাঁচিয়ে হেটে হেটে কলেজে গিয়ে সেই টাকার দুটো সিঙ্গাড়া দিয়ে লাঞ্চ করা এই মধ্যবিত্ত আমি ছেলেটাকে কোনো মেয়েই কোনোদিন ন্যুড দেয় না। অবশ্য দিবেই বা কেন৷ তুমি বলো। আমরা মধ্যবিত্ত, আমাদের নেই কোনো যোগ্যতা, নেই কোনো মেয়ের ন্যুড পাওয়ার অধিকার। আমরা ধনীর দুলালদের মত ন্যুড এপেলের ল্যাপটপে সেভ করে রাখিনা, আমাদের চায়না ফোনে মেমরি খুব কম। আমরা একবার দেখেই ডিলিট করে দেই। অথচ তারপরও কোনো মেয়ে আমাদের ন্যুড দেয় না। তুমিও দিবা না। জানি আমি। আমার কোনো আক্ষেপ নেই আসলে। মধ্যবিত্ত হয়ে জন্ম যখন নিয়েছি তখন শখ আহ্লাদ সব জীবন থেকে মুছে ফেলেছি৷ তবে জানো কি, মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হয়। খুব বেশি কষ্ট। নিজেকে বড্ড সামান্য মনে হয়। এভাবে বেঁচে থেকে কি লাভ বলতে পারো শাম্মি? মধ্যবিত্তের ঘরে জন্ম নেয়াটা কি কোনো পাপ? কোনো অপরাধ? প্রচন্ড কষ্টে মোড়া আমার এই ছোট্ট বুকটার মাঝে লুকানো একমাত্র ইচ্ছাটা আজ রাতে তুমি কি পূরণ করে দিতে পারো না? কিছুক্ষণের জন্য একজন মধ্যবিত্ত যুবক কি ভাবতে পারে না যে তারও অধিকার আছে সুন্দরী কোনো মেয়ের ন্যুড পাওয়ার?
- কিন্তু আমি তো সুন্দরী না।
- আরে ধুর, তাতে কি? ফেস কে দেখতে চাচ্ছে!

তো এরকম আরো বহু উপায় প্রয়োগ করেও শেষপর্যন্ত আমাদের ন্যুডস নেয়ার সাকসেস রেশিও সাব্বির রহমানের ওয়ানডে এভারেজ থেকেও কম ছিলো। এই ফেসবুকে আসলে যত ন্যুডসের চাহিদা আছে, তত যোগান নেই। অর্থনীতির ভাষায় ফেসবুকে ন্যুডসের অপূর্ণ প্রতিযোগিতা মূলক বাজার বিদ্যমান।

খুব সম্ভবত এই কারণেই আমার বন্ধু রাজিব একদিন ফেসবুকে মেয়েদের কাছে ন্যুড চাওয়া বন্ধ করে দিলো।
খবর পেলাম রাজিব নাকি বাইক আর গিটার কিনেছে।
আমি আমাদের মিশন ন্যুডসের ব্যাপারে বলতেই রাজিব তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো, 'বন্ধু আমার, তুমি বাচ্চাই থাকলা। ফেসবুক থেকে একটু বাইরের দুনিয়ায় উকি মেরে দেখো। আমার দিনকাল অনেক পাল্টে গেছে এখন। এখন আর ন্যুডসের প্রতি আমার কোনো আগ্রহ নাই।'
আমি অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, 'কেন বন্ধু, তোমার কি সমস্যা হইছে? তোমার ছোট বন্ধু দাড়াতে পারছে না? টেনশন নিও না, তারজন্য কোলিকাতা হারবাল আছে।'
রাজিব রাগতস্বরে বললো, 'আমি ভার্চুয়াল ন্যুডসের প্রতি আগ্রহ নাই এটা বুঝাইছি গাধা৷ এখন আমি ওসব শুধু দেখব না আর, ডাইরেক্ট একশনে যাবো। আমার এক ফ্রেন্ডের নাম লিটন, তার আবার ফ্লাটও আছে একটা। কি বুঝলি?'
- তোমার ফ্রেন্ড অনেক বড়লোক।
- এর বেশি কিছু বুঝিসনাই?
- না তো!
- এজন্যই তুই সারাজীবন দেখেই যাবি। খাইতে আর পারবি না।

তো আমার চোখের সামনেই রাজিব চুড়ান্ত খাওয়াদাওয়া শুরু করলো। সারাদিন সে আজিজের ফ্লাটে থাকে কম, লিটনের ফ্লাটে থাকে বেশি। আজিজ ওর বাবার নাম।
এদিকে আমার খুব হিংসা হয়। আমারো ইচ্ছা করে মেয়ে নিয়ে ফ্লাটে যেতে। কিন্তু চাইলেও আমি পারিনা। আমার না আছে বাইক, না গিটার না ডিএসএলার। এমনকি সাহসও নাই কোনো মেয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর।
আমি তাই ফেক আইডি খুলে ফেসবুকেই মেয়েদেরকে মেসেজ দেই, 'আমি মনে করি মেয়েরা ছেলেদের থেকে কম না কিছুতেই। এই যে আমি আমার বুকের ছবি দিলাম। সাহস থাকলে তুমি তোমারটা পাঠাও।'

এর মধ্যেই একদিন রাজিব এসে দুঃখ দুঃখ গলায় বললো, 'দোস্ত আমার খাওয়ার দিন শেষ।'
- কেন, পেট ভরে গেছে?
- ধুর পাগলা, যে খাওয়াতে কিছু ভেতরে যায় সেটাতে পেট ভরতে পারে, কিন্তু যে খাওয়ার নিয়মই হলো বের করে দেয়া, সেটাতে কখনো পেট ভরে?
- তাইলে বন্ধ কেন?
- আমার স্কলারশিপ হয়ে গেছে। আমি ইতালি চলে যাচ্ছি।

তিন বছর পর রাজিব ফিরলো। এতোদিনে আমি আর ও দুইজনই চেঞ্জ হয়ে গেছি৷ আমি ফেসবুক ছেড়ে লিটনের ফ্লার্ট ধরেছি, আর রাজীব সাময়িক বাইরে খাওয়া ছেড়ে দীর্ঘমেয়াদি রাইস কুকার কিনতে যাচ্ছে। মানে পোলা এবার বিয়ে করবে। আমাকে ফোন দিয়ে বললো, 'মেয়ে দেখ।'
আমি খুশি খুশি গলায় বললাম, 'সায়মাকে বিয়ে করে ফেল। তোর এক্স ছিলো। কত নিয়ে গেছস লিটনের ফ্লার্টে।'
রাজিব রাগ করলো। বললো, 'পাগল হইছিস? যে মেয়ে কোনো ছেলের সাথে ফ্লাটে যায় তার মতো দুশ্চরিত্রা মেয়ে আমি বিয়ে করব? নেভার।'
- কিন্তু তুই বলছিলি তুই ওকে বিয়ে করবি।
- আর সে এটা বিশ্বাসও করেছিলো৷ মেয়ে দুশ্চরিত্রাই শুধু না, বোকাও। আর আমি বোকা মেয়ে তো বিয়ে করব না।
- তাহলে তোর কেমন মেয়ে পছন্দ?
- সুন্দরী, চরিত্রবান, নামাজী, পর্দানশীন, লয়্যাল। লাইফে কোনো প্রেম করে নাই। আর সবচাইতে বড় কথা, মেয়েকে ভার্জিন হতে হবে মাস্ট।
- কিন্তু তুই নিজে নামাজ পড়িস না। কয়টা প্রেম করছিস ঠিক নাই। চরিত্রের কথা না ই বলি। আর ভার্জিনিটি? হাহা!
- চুপ থাক, তুই বেশি বুঝিস না। যা বললাম এরকম মেয়ে থাকলে খোজ নে। নাইলে ফোন রাখ।
আমি ফোন রেখে দিলাম। মনে মনে বললাম, 'হালা হিপোক্রেট। তোর মতো ফাউল পোলা ওরকম মেয়ে জীবনেও পাবে না।'

কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে রাজিব পেয়ে গেলো। রাজিবের চাওয়া অনুযায়ী সমস্ত গুণ আছে মেয়ের মধ্যে। নম্র ভদ্র, নামাজী ও ভার্জিন। আসলে কলেজ লাইফে যেমন বাইক আর গিটার থাকলে সব পাওয়া যায় তেমনি বিয়ের সময় ভালো চাকরী থাকলেই হয়। তাছাড়া রাজিব বিদেশী ডিগ্রিওয়ালা বড় চাকুরীজীবি। সুন্দরী মেয়ের বাবা মা রা তো ওয়েট করেই থাকে রাজিবদের জন্য।

ধুমধাম করে বিয়ে হয়ে গেলো রাজিবের। আমরা পেট ভরে রোস্ট আর পোলাও খেলাম। ভাবীর সাথে ফটোশ্যুট করলাম। ভাবীর নাম অনামিকা। আসলেই অসম্ভব ভদ্র মেয়ে। রাজিব নিজে মেড ইন চায়না হলেও জিনিস পেয়েছে পিওর মেড ইন জাপান। ভীষণ খুশি সে। দেনমোহর ঠিক হলো এক কোটি টাকা। আমি বললাম, 'দোস্ত কোনোদিন ডিভোর্স তো দিতে পারবি না। এতো টাকার ব্যাপার।'
রাজিব প্রচন্ড রেগে গিয়ে বললো, 'বিয়ে হলো জন্ম জন্মান্তরের বাধন। ডিভোর্স দেয়ার জন্য বিয়ে করলে সায়মা বা ফারিয়াকেই করতাম।'
আমার কিঞ্চিৎ হিংসা ফিল হলো৷ আমিও ডিসিশন নিলাম বিয়ে করলে এরকম চরিত্রবান ভার্জিন মেয়েই বিয়ে করবো। প্রান্তিকে করা যাবে না কোনোভাবেই।
প্রান্তি আমার প্রেমিকা। যার সাথে আমি লিটনের ফ্লাটে যাই নিয়মিত। কিন্তু কোন মেয়ে অনামিকা ভাবীর মত ভালো হবে সেটা কিভাবে বুঝব? ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম। স্বপ্ন দেখলাম, আমার বিয়ে হয়েছে। বাসর রাতে বউ বলছে, 'আমাকে ৫০০ টাকা দাও।'
আমি জিজ্ঞেস করলাম, 'কেন?'
বললো, 'আর সবার থেকে এক হাজার করে নেই। তুমি আমার হাজবেন্ট বলে ফিফটি পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট।'
চিৎকার দিয়ে উঠে বসলাম। দেখি সকাল হয়ে গেছে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই হন্তদন্ত হয়ে রাজিব আমার বাসায় উপস্থিত। হাফাচ্ছে খুব। বললো, 'দোস্ত সর্বনাশ হয়ে গেছে।'
- কেন? কি হইছে? ভাবী ভার্জিন না?
- তা তো জানিনা। কিছু করিনি কাল।
- তাহলে?
- ভাবলাম প্রথম রাতে গল্প করে কাটাই। কথায় কথায় ওর ফেসবুক আইডি নিলাম। ওর আইডিতে ঢুকে দেখি ও আমাকে আগেই মেসেজ দিয়ে রেখেছে একটা মেসেজ রিকুয়েস্টে।
- বাহ জোস তো। ভাবী তোকে চিনতো আগে? কি মেসেজ দিছে?
রাজিব ফোন খুলে মেসেজটা বের করে আমার সামনে ধরলো। পড়লাম আমি।
মেসেজটা ছিলো এরকম-

"শুদু প্রবাসিদের জন্য-
————★————★————★———
**ফোন_সেক্স=-> ১০২০ টাকা ১ ঘন্টা।
**ভিডিও_সেক্স=-> ২০৪০ টাকা ১ ঘন্টা।
আমি টাকার বিনিময়ে ফোন সেক্স ও ইমু সেক্স করি। আমি সব কিচু খুলে মজা দিয়ে থাকি। উপরে ও নিচে হাত দিয়ে দরে দেখাই। আর তোমরা জদি আমার সাথে সেক্স করতে চাও তাহলে ইনবক্স এ মেসেজ দেও। ১ ঘনটা করে ইমু সেক্স ২০৪০ টাকা। আর ফোন সেক্স ১ঘনটা করে ১০২০ টাকা। টাকা বিকাশের মাদ্যমে নেই। শুধু প্রবাসিদের জন্য। দেশের কেউ মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করবা না। বিকাশে টাকা পাটানোর আগে দশ সেকেনড আমার মুখ দেকতে পারবা। মুখ বাদে অন্ন কিচু দেকতে চাইলে নগদে বলোক দিব। বিকাশ করার পর বাকি সব খুলবো। ভিডিও ছারা কনো প্রকার খোলা মেলা ছবি দেয়না আমি। কারন আমি একানে চেট সেক্স করতে আসি নাই। বিকাশ করবেন ইমুতে আসবেন কাজ বুজে নিবেন।
আর কেউ সরাসরি সেক্স করতে চাইলে ঢাকার মদ্যে হতে হবে, আমার টিকানায় আপনাকে আসতে হবে, টাকা লাগবে ত্রিশ হাজার। অগরিম দশ আর কাজ সেষে বাকি বিশ হাজার।"

মেসেজ পড়া শেষ করলাম। রাজিব কাঁদো কাঁদো গলায় বললো, 'দোস্ত, আমি শেষ। এখন আমি কি করবো তুই বল।'
আমি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মুচকি হেসে বললাম, 'কি আর করবি। এক কোটি টাকা তো নাই যে ডিভোর্স দিবি। তারচেয়ে বেটার ত্রিশ হাজার টাকা থাকলে সরাসরি কর, নাহয় দুই হাজার চল্লিশ টাকায় 'ইমু' সেক্স। টাকা না থাকলে বল, আমি ধার দিচ্ছি। লাগবে নাকি?'

রাজিব একদৃষ্টিতে আমার দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে কিছু না বলেই চলে গেলো। তার সম্ভবত টাকা আছে৷ ধার লাগবে না!

লেখা: সোহাইল রহমান

SHARE THIS

Author:

0 Comments:

আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।