যে গল্পে তুমি নেই - পর্ব: ০২


ওয়াশরুমে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য। ওয়াশ রুমের দরজা খুলেই একটা টাসকি খেলাম।
ভিতরে একটা মেয়ে গোসল করতেছে, আমাকে দেখেই একটা চিৎকার দিলো। চিৎকার শুনে আমি দিলাম এক দৌড়।
মেয়েটা দরজা লাগিয়ে দিলো। চিৎকার শুনে সবাই রুমে আসলো, একটু পর মেয়েটাও বাহিরে আসলো। দেখতে মাশাল্লা,,,,
ভাইয়াঃ কিরে কি হইছে?
আমিঃ কিছু না।
ভাবিঃ তাহলে এতো জোরে চিৎকার দিলো কে?
আমিঃ উনি…(মেয়েটাকে দেখিয়ে দিলাম)
মেয়েঃ এই আপু এই ছেলেটা কে? আমার বেডরুমে কি করে!
ভাবিঃ আরে ও আমার দেবর। কেন কি করছে?
আমিঃ ভাবি আমি বলছি।
মেয়েঃ এই না না,,, (মেয়েটা আমার মুখ ধরে ফেললো)
কারন আমি যা দেখেছি সেটা যদি সবাইকে বলি তাহলে মেয়েটার মান ইজ্জতের ১২ টা বাজবে।
মেয়েঃ না আপু কিছু হয়নি, তেলাপোকা দেখেই আমি চিৎকার দিয়েছি। তোরা যা,,,
ভাবিঃ সেজন্য এইভাবে চিল্লাবি? আচ্ছা ডাইনিং রুমে আয়।
সবাই একে একে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো, আমিও বেরিয়ে গেলাম। আসলে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে কেমন জানি অস্বস্তি লাগছে। আমি ডাইনিং রুমে চলে গেলাম।
সবার সাথে কথা বললাম, নাস্তা করে ভাইয়া আর ভাবি একটা রুমে গেলো। আমি ছাদে চলে গেলাম।
কেমন জানি বিরক্তি লাগছে এই বাসায়। ছাদে গিয়ে এক কোনে বসে আছি, কিছুক্ষণ পর ভাবি আসলো…
ভাবিঃ কি ব্যাপার ছোট মিয়া! মন খারাপ নাকি??
আমিঃ না ভাবি ঠিক আছি।
ভাবিঃ কিছু তো একটা হইছে, আমাকে বলো সমস্যা নাই।
আমিঃ আসলে ওই মেয়েটার চিল্লানি শুনে নার্ভাস হয়ে গেছি।
ভাবিঃ আরে ওটা মেয়ে না, আমার বোন। ওর নাম হচ্ছে নিশিতা।
আমিঃ আপনার বোন আছে আগে তো বলেন নি? আর বিয়ের সময় ওতো দেখিনি।
ভাবিঃ আসলে ও হোস্টেলে থেকে পড়ালেখা করে আর বিয়ের সময় ওর এক্সাম ছিলো তাই আসেনি।
আমিঃ ও আচ্ছা।
ভাবিঃ নিশিতা  কি তোমাকে কিছু বলেছে?
আমিঃ নাহ।
ভাবিঃ আচ্ছা নিচে চলো।
ভাবির সাথে নিচে চলে গেলাম। ভিতরে গিয়ে দেখি মেয়েটা মানে নিশিতা ভাইয়ার সাথে ভাব জমাইছে। বসে বসে টিভি দেখতেছে।
আমি গিয়ে ভাইয়ার সাথে বসলাম….
ভাইয়াঃ কোথায় গিয়েছিলি?
আমিঃ ছাদে।
ভাইয়াঃ আচ্ছা পরিচয় করিয়ে দিই এই হচ্ছে আমার একমাত্র শালি নিশিতা ।
 আর নিশিতা  এ হচ্ছে আমার আদরের ছোট ভাই, কলিজার টুকরা তুষার।
আমিঃ হ্যালো বেয়ান!
ইকরাঃ হুহ! (গাল ভেটকি দিয়ে)
আমিঃ আমি কিছু বললাম না।
দুপুরে খাওয়াদাওয়া করলাম, গিয়ে সোফায় বসলাম।
আমিঃ ভাইয়া শোন!
ভাইয়াঃ কিছু বলবি?
আমিঃ আমার ভালো লাগছে না, আমি বাসায় চলে যাবো।
ভাইয়াঃ পাগল হলি নাকি, তুই আমাদের সাথেই থাকবি। আর আমাদের সাথেই বাসায় যাবি।
আমিঃ নারে তোরা থাক আমি গেলাম।
ভাইয়াঃ চুপ কর, আব্বুকে বলে দিলে মাইর দিবে। কয়েকদিন গেলে ভালো লাগবে।
কিছু বললাম না, এভাবে বিকাল টা কাটলো। রাতে আমি ছাদে গেলাম। বসে বসে গান গাইতেছি এমন সময় নিশিতা  আসলো।
নিশিতাঃ গান তো ভালোই গাইতে পারেন।
আমিঃ…. (উঠে চলে যাচ্ছিলাম)
নিশিতাঃ এই বসুন। কোথায় যাচ্ছেন।
আমিঃ নিচে।
নিশিতাঃ নিচে কি?
 বসুন এখানে।আবারও বসলাম।
নিশিতাঃ সরি!
আমিঃ সরি কেন?
নিশিতাঃ দুলাভাইর সামনে আপনার সাথে এমন ভিহ্যাব করার জন্য।
আমিঃ ইটস ওকে।
নিশিতাঃ আপনার নামটা যেন কি?
আমিঃ তুষার!
নিশিতাঃ পড়ালেখা কিসে করেন?
আমিঃ অনার্স ২য় বর্ষ (নোয়াখালী সরকারি কলেজ)
নিশিতাঃ গুড। আপনি বোকা নাকি?
আমিঃ হঠ্যাৎ এই প্রশ্ন?
নিশিতাঃ আমি সব কিছু বলছি আপনি তো কিছুই বলছেন না।
আমিঃ না এমনি, আচ্ছা আপনার সম্পর্কে বলেন।
নিশিতাঃ আপুর থেকে জেনে নিয়েন।
এভাবে আরো কিছুক্ষণ কথাবার্তা বললাম, মোটামুটি ভালোই লাগলো।
পরের দিন নিশিতা আর আমি ঘুরতে বের হলাম, একটা রিক্সা নিয়ে ঘুরেছি। আস্তে আস্তে আমি মেয়েটার প্রতি দূর্বল হয়ে গেছি।
এভাবে মজা মাস্তিতে ৫ দিন গেলো। আসার সময় নিশিতার জন্য খুব খারাপ লাগলো, অনেক বার বললাম আমাদের বাসায় আসার জন্য।
বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।
ভাবিঃ ছোট মিয়া কি অবস্থা?
আমিঃ অবস্থা তো ভালোই।
ভাবিঃ সেটা তো দেখতেছি। ভিতরে ভিতরে লাড্ডু ফুটতেছে। ঘটনা কি?
আমিঃ কিছু না।
ভাবিঃ আমাকে বলা যায় না?
আমিঃ হুম, ঘটনা হচ্ছে আপনার বোন আমার মন টা রেখে দিয়েছে।
হঠাৎ করে ভাবির মুখটা কালো হয়ে গেলো, মাইন্ড করলো কিনা কে জানে। মুখে হাসি রেখে বললো….
ভাবিঃ এতো সহজে নিশিতা প্রেমে পড়বে না।
আমিঃ চেষ্টা করতে তো বাধা নেই।
ভাবিঃ তুমি জীবনেও পারবে না। ওরে পটানো এতো সহজ না।
আমিঃ আচ্ছা সময় হলে দেখা যাবে।
এভাবেই দিন যেতে লাগলো আমি বার বার নিশিতা সরন করতে লাগলাম। আসার সময় ওর মোবাইল নাম্বার টা আনতে ভুলে গেছি।
ভাবির কাছে লজ্জায় চাইতেও পারছি না।
কিছুদিন পর.........
ভাবির আব্বু আম্মু আর নিশিতা আমাদের বাসায় আসে। আমি তো মহা খুশি।
 আংকেল আন্টি চলে যায় নিশিতা বাসায় থেকে যায়।
নিশিতাকে দেখলে আমি স্পিকারে রোমান্টিক সব গান ছেড়ে দিতাম।
ভাবি একবার বলেছিলো নীল শার্টে নাকি আমাকে অনেক সুন্দর দেখায়।
সেই থেকে নীল শার্ট টা পড়েই নিশিতার সামনে ঘুরাফেরা করতাম।
 কিন্তু নিশিতার মাঝে একটা পরিবর্তন খেয়াল করলাম।
সেদিন রাতে নিশিতা  বললো
নিশিতাঃ এই যে মি. তুষার???
আমিঃ হুম বলেন।
নিশিতাঃ আপনার কাছে কি শুধু একটাই শার্ট?
আমিঃ না। কেন?
নিশিতাঃ তাহলে সারাদিন এটা গায়ে দিয়ে রাখেন কেন?
এরপর থেকে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় শার্ট চেইঞ্জ করতাম। শুধু নিশিতার চোখে পড়ার জন্য।
একদিন রাতে নিশিতাকে ছাদে ডেকে নিয়ে গেলাম।
আমিঃ আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো।
নিশিতাঃ কি কথা বলেন।
আমি কোনো রকম ইতস্ত না করে ডাইরেক্ট বলে দিলাম।
আমিঃ আপনাকে আমি ভালোবাসি।
নিশিতাঃ এটা সম্ভব নয়।
আমিঃ কেন?
নিশিতাঃ এক ঘরে দুই বোন জীবনেও পসিবল না।
আমিঃ সেটা নাহয় আমার উপর ছেড়ে দেন। আপনি শুধু হ্যা অথবা না বলে দেন।
নিশিতাঃ এখন না।
আমিঃ তো কখন?
নিশিতাঃ দুই দিন পর।
আমিঃ এখন বললে সমস্যা কি?
নিশিতাঃ আমাকে দুই দিন ভাবতে দেন।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
তারপর নিশিতা নিচে চলে যায় আমি টেনশনে পড়ে গেলাম। নিশিতা কি রাজি হবে নাকি হবে না সেটা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।
যাইহোক দুই দিন অনেক কষ্টে কাটালাম। তারপর নিশিতাকে বললাম,
আমিঃ দুই দিন তো চলে গেলো। এবার উত্তর টা দেন।
নিশিতাঃ আপনি যদি আমাকে একটু অন্যরকম ভাবে প্রপোজ করেন তাহলে একসেপ্ট করবো।
আমিঃ অন্যরকম মানে?
নিশিতাঃ মানে যেই স্টাইলে কেউ কখনো কাওকে প্রপোজ করেনি আপনি আমাকে সেই স্টাইলে প্রপোজ করবেন। তাহলে আমি রাজি হবো।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,
আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করলাম, বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলাম কিন্তু কিছুতেই কোনো কিছু মাথায় আসছে না।
অবশেষে একটা নতুন পদ্ধতি মাথায় আসলো, আমি সেই স্টাইলে প্রপোজ করে দিলাম।
নিশিতা কয়েকদিন পর একসেপ্ট করলো,
আমি খুশিতে শেষ।
ফাইনালি নিশিতা রাজি হলো।
নিশিতা আর আমি হাত ধরাধরি করে হাটতেছি এমন সময় ভাবি দেখে ফেললো, তারপরেই….

To be Continue…..

SHARE THIS

Author:

0 Comments:

আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।