বীভৎস কান্না: ভূতের গল্প


এক নিঃশ্বাসে ছুটে গিয়ে বাড়ির সদর দরজার বাইরে লাগানো গ্রিলের গেটটা ধরে ঝাঁকাতে থাকি আর চিৎকার করে নিজের ছোট পিসি ("পাপু" বলে ডাকি) কে ডাকতে থাকি দরজা খোলার জন্য। পাপু আমার চিৎকারে সাড়া দিয়েছিল ঠিকই কিন্তু ঘর থেকে বেড়িয়ে দরজা খুলতে মিনিট ৩-৪ মত সময় নিয়েছিলো, এরপর গ্রিলের গেটটা খুলতে আরও ২-৩ মিনিট। এই ৫-৭ মিনিট আমার জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার মধ্যে ভয় বা আতঙ্ক কি জিনিস সেটা প্রথম উপলব্ধি করেছিলাম। অবশ্যই কারোর মতে ভুত আবার কারোর মতে নেগেটিভ এনার্জি হতে পারে। আমি আজ পর্যন্ত এর কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাইনি, আজও যদি কাউকে এই ঘটনা গল্পের আকারে পরিবেশন করি আমার শরীরে অদ্ভুত শিহরণ হয় ও সারা শরীরে কাঁটা দিয়ে ওঠে, একটু হলেও অস্বস্থি অনুভব করি ও সময়ের সাথে সাথে সেটি অবলুপ্ত হয়। হ্যাঁ এখন এই ঘটনাটি লেখার মুহূর্তেও অনুভব করছি।।



১৯৯৬ সাল তখন ক্লাস সেভেন এ পড়ি। বছর তিনেক আগে ১৯৯৪ এ পাড়ার ক্লাবে ক্রিকেট খেলার জন্য ভর্তি হই। আমাদের প্র্যাক্টিস হত সপ্তাহে তিন দিন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে থেকে আর শনি ও রবিবার দুপুর ২টো থেকে। এই সময়ে অনেক টুর্নামেন্ট হত যেমন; শহীদ মিনার ট্রফি, ভিডল ট্রফি, রাসনা ট্রফি আরও অনেক যার মধ্যে অম্বর রায় স্মৃতিতে(আন্ডার থার্টিন) যেটা হতো সেটা আজও হয়, CAB অর্গানাইজ করে এটা।

আমাদের যিনি প্র্যাক্টিস করতেন ছোটকা দা (ভালোনাম : দীপঙ্কর ঘোষ দস্তিদার), তিনি টালিগঞ্জ এ থাকতেন, ওনার বাড়ি ছিল বিমলেন্দু স্মৃতি ক্রিকেট কোচিং সেন্টার-এর কাছেই মানে টালিগঞ্জ অগ্রগামী মাঠের পাশে। ওনার সৌজন্যে আমাদের পাড়ার ক্লাব থেকে কিছু ছেলে টালিগঞ্জ অগ্রগামী ক্লাবেও প্র্যাকটিস করা ও খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। ওখানে আমাদের প্র্যাকটিস হত সপ্তাহের কিছুদিন সকাল ৭.৩০ ও ১০টা থেকে। আমরা সকলেই ওখানে যেতাম ভোরের ডাইরেক্ট ট্রেন ধরে, টালিগঞ্জে নেমে বাসে করে মালঞ্চ সিনেমা হলের সামনে নেমে হেঁটে মাঠে যেতাম।

আপনারা অনেকেই জানেন ওই সময়ে এখনকার মত টিভি তে এত চ্যানেল আসতো না শুধু ছিলো ডিডি বাংলা ও ন্যাশনাল। আর ন্যাশনাল চ্যানেলে প্রতি শুক্র, শনিবার রাত ৯টা থেকে হিন্দি সিনেমা দেখানো হত।

আমাদের বাড়িটা এমন একটা জায়গায় ছিল সেখানে তিনদিকে বন-জঙ্গল, পূর্বদিকে কিছুটা বসতি ছিলো কিন্তু সেদিকে আমাদের বাউন্ডারি দেওয়ার জন্য যাতায়াত হত না আর পশ্চিমদিকে একটি মাত্র ঘর ছিলো, পাশাপাশি এই দুটি বাড়ি ছাড়া বাকী সবটুকুই বন-জঙ্গল আর পুকুর। বাড়ির সদর দরজা(উত্তরদিকে) থেকে বেড়িয়ে মেন গেটে পৌঁছাতে হত (মেন গেট টা ছিল কাঠের তৈরি আর গেট টিকে আটকানোর জন্য একটি লোহার আংটা ছিল(এখন সেখানে লোহার গ্রিলের গেট), তারপর সোজা ২-৩ মিনিট হাঁটলে পাড়ার বড় রাস্তা(উত্তরদিকে)য় পৌঁছানো যেত। আমাদের যাতায়াতের ওই একটাই মাত্র গলিপথ বা ছোটরাস্তা এখনও তাই। আর এই গলি ব্যবহারের সময় ডানদিকে মানে পশ্চিমদিকে পড়ত দমকল বা ফায়ার বিগ্রেড অনেকটা বড় জায়গা নিয়ে(এখন সেটা আর নেই, সেই জায়গাটিকে এখন বিশাল ফ্ল্যাট বা আবাসন-এ পরিণত করা হয়েছে)। অনেক দূর থেকে সেখানে লোকে কাজে আসতো আর কিছু জনের থাকারও ব্যবস্থা ছিল সেখানে। থাকার জায়গাটা ছিল পিছনের দিকে মানে আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাড়ার রাস্তায় যাওয়ার সময় ডানদিকের শুরুতেই সেই ঘরগুলো। দিনের বেলা ওই ঘরে লোকেরা থাকলেও রাতে ওখানে কেউ থাকতো না। কারণ, শোনা কথা...

একটি অফিসার তার পরিবার নিয়ে ওখানে থাকতো, একদিন তারা স্বপরিবারে কোথাও ঘুরতে যায় কিন্তু তার বৃদ্ধ মা যেতে না পারার জন্য উনি একই ছিলেন কিন্তু ওনারা ফিরে এসে দেখেন ওনার মা মৃত, হৃদ রোগে মারা গেছেন, ওনারা যত দিন না ফিরেছেন কেউ বুঝতেই পারিনি আর ততদিন ওই বৃদ্ধা মৃত অবস্থায় ওখানেই ছিলেন। এরপর ওনারা মৃত মায়ের সৎকার করেন কিন্তু তারপর থেকে ওখানে থাকতে ওনাদের নিজেদেরই ভয় লাগতো তাই ওনারা ওই ঘর দুটি ছেড়ে পাশেই কোথাও ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করেন। সন্ধ্যা নামার পরেই জায়গাটায় নিস্তব্ধতা গ্রাস করে ছমছমে হয়ে উঠেছিলো। পাড়ার রাস্তা থেকে আমাদের বাড়ি আসার পথের ঠিক মাঝখানে একটি লাইটপোস্ট ছিল, সেটা এখনও আছে। রাতের বেলায় এই লাইটপোস্ট পেরোলেই মাঝে মধ্যে অনেকেরই শরীর টা ভারী হয়ে যেত, তাই অনেকেই ভয় পেত কিন্তু এর বেশী কারোরই কিছু হয়নি কোনোদিন। কেউ কেউ আবার যেই শরীর ভারী মনে হত আমাদের বাড়ি না এসে ফিরে যেত নয়তো ওখানে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে ডাকলে আমাদের বাড়ির লোক বেরিয়ে ওনাকে বাড়ি নিয়ে আসতো আবার ফেরার সময় পুরো রাস্তাটাই ওনাদের সঙ্গে থেকে পাড়ার রাস্তা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হত।

আমাদের বাড়িটা এমনিতেই অনেকটা বড়, ৩কাঠার উপর বাড়ি আর বাড়ির সামনে (উত্তরদিক) প্রায় ৩কাঠার কাছাকাছি বাগান, বাগানে কোন গাছ নেই বলা যাবেনা প্রায় সব গাছই আছে কারণ বন-জঙ্গল গাছ-গাছড়া নিয়েই জমি কিনে বাবা জ্যাঠা-রা বাড়ি করেন, যেটুকু দরকার সেইটুকুই গাছ কেটে বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে বাড়ি করেছিলেন বাকী টুকু প্রয়োজন ছাড়া কাটা হবে না এটাই ঠিক হয়েছিল, বাড়ির চারদিক বোন জঙ্গল আর গাছে ভরা, বাড়ির পিছনে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের দিকে বাঁশ ঝাড় ও ছিল। রাতের বেলায় বন-জঙ্গলে-র জন্য এক ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি হত, সেই সময়ে বাড়ি ছাড়া রাস্তায় এখনকার মত লাইট থাকতো না, পাড়ার মোড়ে মোড়ে আর কিছু গলির মুখে পোস্টে একটা করে বাল্ব জ্বলতো এটাই অনেক।



আমাদের বাড়ির সামনেই (উত্তরদিকে) ছিল বড় একটা পুকুর আর পুকুরের পাশে পাড়ার রাস্তার শুরু থেকেই আমাদের বাড়ি পর্যন্ত সারিবদ্ধ ভাবে ছিল নারকেল গাছ, কয়েকটা আমাদের জমির মধ্যেও ছিল, বাড়ি করার সময় প্রয়োজনে দুটি কেটে ফেলা হয় একটি রেখে দিয়ে।

পড়াশুনা আর ক্রিকেট খেলা নিয়েই থাকতাম আমি, তাই টিভি দেখার সেভাবে সময় পেতাম না। আর বাড়িতে আমাকে মাধ্যমিক পর্যন্ত খুব রেস্ট্রিকশনে থাকতে হয়েছে টিভি দেখার ব্যাপারে, ছিলামও তাই। জ্যাঠতুতো দাদা দিদির বেলায় যেটা ছাড় ছিল সেটা আমার বেলায় ছিল না। মা, বাবা এই ব্যাপারে সব সময়ই আমার পাশে থাকার জন্য মা বাবার মুখ চেয়ে সব মেনে নিতাম আর পাশে পেতাম আইবুড়ি পিসি আর ঠাকুমা ("মাম" বলে ডাকতাম)কে। টিভি দেখার একমাত্র জায়গা ছিল আমার মামার বাড়ি। মামাবাড়ি ছিল ঠিক আমাদের বাড়ির সামনের পুকুরটার ওপারের উত্তর-পশ্চিম কোনায়। একবাড়ি থেকে অন্য বাড়ি দেখা যেত। দিনের বেলায় হাত নেড়ে কথাও হত। প্রতি শুক্র ও শনিবার আমি রাত ৮.৩০-৮.৪৫ মধ্যে মামা বাড়ি চলে যেতাম ওখানে বসেই ৯টার সময় থেকে হওয়া সিনেমা দেখতাম। বেশিরভাগ দিন সিনেমা দেখতে দেখতে ওখানেই ঘুমিয়ে সকালে বাড়ি ফিরে আসতাম আর কোন কোন দিন বাড়ি ফিরে আসতাম কারণ পরের দিন যদি খেলা, টিউশন বা অন্য কোন দরকারি কাজ থাকে তো, তিন মামার কোন এক মামা কিছুটা হলেও এগিয়ে দিত।

বলে রাখি একই বাড়িতে থাকলেও খুব ছোট থেকে আমি পিসি, ঠাকুমার কাছে থাকতাম, যত বড় হলাম ওদের কাছেই রাতে শুতাম, উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত আমি পিসি, ঠাকুমার কাছেই শুতাম। পিসির অনেক গুন ছিল যেমন গান শেখানো আর সেলাই করা, সকালে আর বিকেলে গান শেখাতো, দুপুরে আর রাত জেগে ব্লাউজ, চুড়িদার, ফ্রক তৈরি করতো পাড়ার কাকিমা, জেঠিমা, বৌদি, বোনেদের জন্য অর্ডার নিয়ে।

এবার আসছি আসল ঘটনায়।
এখনই আমার সারা শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠলো...
দিনটা ছিল শনিবার, দুপুর ২টোর পর স্কুল ছুটি হত তখন, স্কুলের পর প্র্যাক্টিস, বাড়ি ফিরে পড়াশুনা করে প্রতি সপ্তাহের মতোই সেই দিনেও আমি মামাবাড়ি গেছি টিভিতে সিনেমা দেখতে, খুব ক্লান্ত আমি। সিনেমা দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ি অজান্তেই, যখন ঘুম ভাঙে তখন ধড়পড় করে উঠে বসে ঘড়িতে দেখি মধ্যরাত প্রায় ১.১৫/১.৩০ হবে। কোন কথা না বলেই বিছানা ছেড়ে মামাবাড়ি থেকে বেরোতে যাবো দেখি সদর দরজায় তালা দেওয়া হয়েগেছে আর মামারা, মাসীরা, দাদু, দিদা সবাই শোওয়ার ব্যবস্থা করছে (দাদুর মুদিখানার বড় দোকান বাজারে, রাতে বন্ধ করে বাড়ি ফিরতে প্রতিদিনই রাত ১২টা বেজে যেত তারপর সবাই একসাথে খেয়ে শুতে শুতে রাত ১টা-১.৩০টা হয়েই যেত, আজও তাই হয়েছে)। আমি বললাম বাড়ি যাবো সদর দরজা খুলে দিতে, মাসীরা বললো... "আজ আর যেতে হবে না কাল সকালে যাস"। আমি বললাম... "না, আজই যেতে হবে কারণ সকালের ডাইরেক্ট ট্রেন ধরে টালিগঞ্জ যেতে হবে, ভিডল ট্রফির খেলা আছে ৮টা থেকে, আজ না গেলে কাল সকালে খুব অসুবিধা হয়েযাবে, আমি মাঠে পৌঁছতে পারবো না, ট্রেন মিস করলে"। অন্য দিনগুলোয় তিন মামার কোন এক মামা আমায় কিছুটা এগিয়ে দিত এমনিই, আমাকে কিছু বলতেও হত না, সেই দিন মামারা আমায় বলে দিলো... "আমরা কিন্তু আজ তোকে এগিয়ে দিতে পারব না, তোর বাড়িতে সবাই শুয়ে পড়েছে, কেউ দরজা খুলবে না, কথা না শুনলে একা চলে যা, নাহলে এখানে থেকে যা, কাল ভোরবেলা চলে যাস"। শুনলাম না কারোর কথা, বললাম... "একাই চলে যাবো অসুবিধা হবে না, ভয় দেখিও না, পাপু এখনো জেগে আছে, সেলাই করছে, আমার জন্য দরজা খোলার লোকের অভাব হবে না"।

মেজ মামা সদর দরজা খুলে দিলো, আমিও বেরিয়ে পড়লাম মামাবাড়ি থেকে, একটু হলেও রাগে মেজ মামা সঙ্গে সঙ্গে সদর দরজা একটু জোরে আওয়াজ করেই বন্ধ করে দিলো, আমার বুঝতে অসুবিধা হলো না যে কিছু হলেও আজ রাতের জন্য এই বাড়িতে আমার জন্য আর সদর দরজা খোলা হবে না। রাস্তায় তখন আমি একা আর কিছু পাড়ার কুকুর এখানে ওখানে দলা পাকিয়ে শুয়ে আছে, হেঁটে যখন এগিয়ে যাচ্ছি তখন দুই একটা কুকুর মাথা তুলে দেখলো কিন্তু কোন রকম ডাক বা চিৎকার করলো না শুধু দেখে আগের মত মাথা নিচু করে শুয়ে পড়লো। রাস্তায় তখন দুটো লাইটপোস্ট-এ বাল্ব জ্বলছে, একটা মাঝখানে আর একটা পাড়ার রাস্তা আর আমাদের বাড়ির গলিরাস্তার সংযোগ স্থলে, আর কোথাও কোন আলো নেই এমনকি চাঁদের ও না কারণ অমাবস্যা কি না জানি না থাকলেও আকাশে চাঁদের দেখা নেই। হাঁটতে হাঁটতে এসে দাঁড়ালাম পাড়া আর আমাদের গলিরাস্তার সংযোগ স্থলে, ডানদিকে ঘুরে গলিরাস্তা ধরে বাড়ির দিকে এগোতে যাবো ঠিক তখনই দেখতে পেলাম মেন কাঠের গেটের ভেতরে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে আর ঠিক সেই সময়ই পড়ার যত কুকুরগুলো শুয়েছিলো সবকটা এক সাথে বীভৎস সুরে কাঁদতে আরম্ভ করলো, আমার সারা শরীর কেমন যেন ভারী হয়ে, সারা শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠতে আরম্ভ করলো, আমি শুনতে পাচ্ছি আমার হৃদস্পন্দন কিন্তু আমি হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছি বাড়ির মেন কাঠের গেটের দিকে, যত এগোচ্ছি আমার কাছে তত পরিস্কার হচ্ছে, যে দাঁড়িয়ে আছে তার পরনে সাদা কাপড়, আমি এগিয়ে যাচ্ছি শুধু শুনতে পাচ্ছি কুকুরের বীভৎস উচ্চস্বরে কান্না আর আমার হৃদস্পন্দন, যত কাছে এগিয়ে যাচ্ছি আমি তত পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি তার সাদা কাপড় পড়া অবয়ব, আমি কিন্তু হেঁটেই যাচ্ছি, কোনো ভয় কি কিছু মনেই হচ্ছে না, মনে হচ্ছে আমি কারোর বশবর্তী হয়েই হাঁটছি, শরীরের প্রতিটি লোমকূপে আমি কাঁটার মত শিহরণ অনুভব করছি এমনকি মাথার প্রতিটি চুলেও, খুব কাছে যখন পৌঁছলাম তখন দেখালাম সারা শরীর সাদা কাপড়ে মোড়া ঘোমটা টানা বুক পর্যন্ত, আঁচলটা হালকা হওয়ায় নড়ছে, এসে দাঁড়ালাম মেন কাঠের গেটের সামনে। এ কী দেখছি আমি, নিজেই বিশ্বাস করতে পারছি না, কাঠের মেন গেটের উপরের লোহার আংটা টা ধরে খুলে ভিতরে ঢুকে মুখ ঘুরিয়ে আংটা টা আবার মেন গেটে লাগিয়ে দিলাম, আবার মুখ ঘোরালাম আমি। চমকে গেলাম... কোথাও কিছু নেই। তাহলে কি আমি ভুল দেখলাম এতক্ষন, বিশ্বাস হলো না। আবার মেন কাঠের গেটের আংটা খুলে বাইরে গিয়ে দেখলাম শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যেখান থেকে দেখেছি... না কিছুই নেই সেখানে, বিন্দু মাত্র আলোও নেই যে প্রতিফলিত হবে। তখন আমার হাতে মেন গেটের লোহার আংটা টি ধরা, আমি আর লোহার আংটা টি ছাড়ার সাহস পাচ্ছিলাম না। যতক্ষণ আমি মেন কাঠের গেটের লোহার আংটা টি ধরিনি ততক্ষণ আমি সেই অবয়ব দেখতে পেয়েছিলাম, মেন কাঠের গেট খোলার জন্য আংটাটি ধরার পর থেকে এখনও আমি সেটি থেকে হাত ছাড়িনি তাই আমি আর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না, ওদিকে বেমালুম কুকুরগুলোর কান্নাও থেমে গিয়ে অদ্ভুত একটা নিস্তব্ধ পরিবেশের সৃষ্টি করেছে (এই মুহূর্ত থেকে পাপু বাড়ির সদর দরজা না খোলা পর্যন্ত আমার জীবনের প্রথম ভয় বা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল)। তখন আমি কি করবো ঠিক করে উঠতে পারছিলাম না, হঠাৎ মাথায় এলো বাড়ির সদর দরজার বাইরে লোহার গ্রিলের গেট ব্যাস আর পায় কে... এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে দম বন্ধ করে এক নিঃশ্বাসে ছুট...


পাঠিয়েছেনঃ সঞ্জয় কুমার সরকার (কলকাতা)


SHARE THIS

Author:

0 Comments:

আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।